Ajker Patrika

উৎসবও আধা!

সম্পাদকীয়
উৎসবও আধা!

২০১০ সাল থেকে দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে নতুন বই দিয়ে আসছে সরকার। ইংরেজি বছরের প্রথম দিন বই উৎসব একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। নতুন শ্রেণিতে উঠে বিনা মূল্যে নতুন বই হাতে পাওয়া শিক্ষার্থীদের উল্লসিত হওয়ার ছবি দেখে সবারই মন ভালো হয়ে যায়।

মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনা মূল্যে বই দেওয়া শেখ হাসিনা সরকারের একটি বড় সাফল্য। কিন্তু আমাদের দেশে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখা যায় না। এবার যেমন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিয়ে বছরের প্রথম দিনই বই উৎসব হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। উৎসব হবে, তবে পুরো নয়, অর্ধেক। অনেকটা নিয়ম রক্ষার।

শনিবার আজকের পত্রিকায় ‘আধাআধি উৎসব, মানও যাচ্ছেতাই’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, যে পরিমাণ বইয়ের প্রয়োজন তা এখনো ছাপা শেষ হয়নি। ফলে সবাইকে সব বই প্রথম দিনই দেওয়া যাবে না। প্রায় সাড়ে ৩৩ কোটি বই দরকার অথচ এখন পর্যন্ত ছাপা হয়েছে ১৮ কোটি বই। অথচ দরপত্র অনুযায়ী বই ছাপানোর কাজ শেষ করার সময়সীমা ২৩ ডিসেম্বর। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে সব বই ছাপানোর কাজ শেষ করা কোনোভাবেই আর সম্ভব হবে না। সে জন্য প্রতি শ্রেণির কয়েকটি করে বই দিয়ে বই উৎসব করা হবে। তবে জানুয়ারি মাসের মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

অভিযোগ আছে, এবারের বইয়ের ছাপা ও বাঁধাইও নিম্নমানের হয়েছে। সাদা কাগজের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে নিউজপ্রিন্ট। শর্ত অনুযায়ী কাজ না হলে সেটা মেনে নেওয়ার কথা নয়। বই ছাপা, বাঁধাই, সরবরাহ ইত্যাদি নিয়ে কমবেশি অভিযোগ প্রায় প্রতিবছরই শোনা যায়। প্রশ্ন হলো, এসব অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয় কি? যদি হয়, তাহলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় কীভাবে? জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃপক্ষ কি এসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারবে? যে কাজটি প্রতিবছর নিয়ম মেনেই হওয়ার কথা, সেই কাজে দরপত্র আহ্বানে কেন দেরি হয়, কার্যাদেশ দিতেই বা কেন বিলম্ব ঘটে? এসব গাফিলতি কি ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্যমূলক?

এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়েছে, যেসব মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান অনিয়মের সঙ্গে জড়িত, এনসিটিবি চাইলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গত বছরও কম দরে কাজ নিয়ে নিম্নমানের বই সরবরাহের অভিযোগ ছিল। কাগজের নমুনা পরীক্ষায় তা প্রমাণিতও হয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। অনেক প্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির মান যাচাইয়ে নিযুক্ত তদারকি দল ঢুকতে পারেনি।

তার মানে তো এই যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে এনসিটিবি জিম্মি হয়ে আছে। বই ছাপার জন্য অর্থ ব্যয় হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বদনাম হচ্ছে সরকারের। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি এসব দেখার গরজ বোধ করে না?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত