Ajker Patrika

প্রাণ ফিরবে ২০৬ পুকুরের

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৩৮
প্রাণ ফিরবে ২০৬ পুকুরের

গাজীপুরে দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন হাজারো পুকুর। তবে দখল হয়ে যাওয়া ২০৬টি সরকারি পুকুর পুনর্খনন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত বছরের ২৩ আগস্ট পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠির আলোকে মন্ত্রণালয় থেকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে মতামত দেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে গাজীপুরে খাসপুকুর আছে ৮৫৭টি। এগুলোর মধ্যে মহানগরীতে আছে ৩৮৪টি। সিটি করপোরেশন গঠনের আগে এসব পুকুর ছিল গাজীপুর ও টঙ্গী পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে। পরে এগুলো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

এ সময় প্রভাবশালী চক্র করপোরেশনের অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে মহানগরীর শতাধিক খাসপুকুর বেদখল হয়ে পড়ে। এসব কারণে পুকুরগুলো রক্ষায় দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনকে।

প্রশাসন সূত্রে আরও জানা যায়, গত বছরের ২৪ আগস্ট তৎকালীন জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম গাজীপুর জেলার সয়রাত মহালের অন্তর্ভুক্ত ২০৬টি পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নেন। তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেন। সে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সায়রাত মহালের অন্তর্ভুক্ত জেলার খাসপুকুরগুলো দিন দিন ভরাট হয়ে যাওয়ায় ইজারা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, অনেক স্থানে পুকুর দখল করে চারপাশ ঘিরে গড়ে উঠেছে ভবন, ছোট ছোট বাড়ি, দোকানপাট, রিকশার গ্যারেজসহ অসংখ্য স্থাপনা। আবার অনেকগুলো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পরিণত হয়েছে মজাপুকুরে। মহানগরীর গাছা এলাকায় পুকুর দখল করে গড়ে উঠছে নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, আবার কোথাও পুকুরে বালু ভরাট করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রস্তাবিত সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

অনেক স্থানে পুকুর দখলের অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে পুকুরের পাড়ে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। ফলে বর্ষাকালে সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় দেখা দেয় পানির সংকট। অনেক সময় কোথাও আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানির উৎস না পেলে ব্যাহত হয় অগ্নিনির্বাপণের কাজ।

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন বলেন, সরকারি পুকুরগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হচ্ছে না। সংস্কার হলে মাছ চাষ করা যেত, স্থানীয় জনগণের বিভিন্ন উপকারে আসত।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘শিল্পনগরী গাজীপুরে প্রায়ই ঘটে ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ড। এসব অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে পানির প্রয়োজন হয়। পুকুর বা প্রাকৃতিক জলাধার আমাদের পানির বড় উৎস। এসব না পেলে অনেক সময় ব্যাহত হয় অগ্নিনির্বাপণকাজ। ফলে জানমালের বিপুল ক্ষতি হয়।’

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, অনেক পুকুর আশপাশের পানির সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা জমে, পলি জমে ভরাট হয়েছে। কিছু পুকুর প্রভাবশালী মহল নানা অজুহাতে দখলের চেষ্টা করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব পুকুর উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘অনেক সময় পুকুরে পানি কম থাকায় ইজারা দেওয়া সম্ভব হয় না। এসব বিবেচনায় নিয়ে পুকুরগুলো সংস্কার ও খননে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি প্রকল্পের অধীনে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সে জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি, দ্রুত এ বিষয়ে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত