Ajker Patrika

রাজনীতিতে নতুন কিছুর প্রত্যাশা

সম্পাদকীয়
রাজনীতিতে নতুন কিছুর প্রত্যাশা

অহেতুক উত্তাপ ছড়ানোর রাজনীতির দিন সম্ভবত শেষ হয়ে এসেছে। দেশের মানুষ এখন রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন দেখতে চায়। রাজনীতির কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যেন ব্যাহত না হয়, আয়-উপার্জনে ব্যাঘাত না ঘটে—মানুষ সেটাই চায়।

সে জন্যই এখন রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার আগে নেতা-নেত্রীদের মানুষের মনোভাবের কথাটা বিবেচনায় নিতে হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে হরতাল-ধর্মঘট ইতিমধ্যে কার্যকারিতা হারিয়েছে। নির্বাচনের আগে বিএনপির হরতাল-অবরোধে মানুষের সাড়া পাওয়া যায়নি সেভাবে।

নির্বাচন হয়ে গেছে। নতুন মন্ত্রিসভা দায়িত্ব নিয়েছে। আগামী পাঁচ বছর সরকার পতনের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। এখন বরং রাজনৈতিক দলগুলোর মনোযোগ দেওয়া উচিত ভবিষ্যতের দিকে। আমাদের দেশের রাজনীতি প্রায় সব সময়ই ওপর থেকে নিচে যায়। নিচ থেকে ওপরে ওঠে না। এই ধারায় পরিবর্তন আনা জরুরি।

মাঠপর্যায়ে এখন আর রাজনীতি নেই বললেই চলে। কেউ স্বীকার করতে না চাইলেও বাস্তবতা এটাই, মাঠের বা তৃণমূলের রাজনীতি এখন চৈত্র মাসের পানিশূন্য ডোবার মতো।

আওয়ামী লীগ জানে, যত দিন শেখ হাসিনা আছেন, তত দিন তাদের কোনো ভাবনা নেই। তাই আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় দল ঢুকে গেছে সরকারে। আওয়ামী লীগের সরকার না হয়ে সরকারের আওয়ামী লীগ হয়েছে। ফলে দলটিকে আর আলাদা করে খুঁজে পাওয়া যায় না।

কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের এখনকার রাজনীতি হলো আখের গোছানোর। পাওয়া এবং খাওয়ার রাজনীতি। কিন্তু সবাই তো আর খেতে-পরতে পারছেন না। তাই তৈরি হচ্ছে দ্বন্দ্ব। পাওয়া গ্রুপ এবং না-পাওয়া গ্রুপের দ্বন্দ্ব এতটাই প্রকট যে কেন্দ্র থেকে হুকুম দিয়েও এটা দূর করা সম্ভব হবে কি না, বলা মুশকিল।

বিএনপির অবস্থাও একই রকম। বিএনপির নেতাদের মনোযোগ এখন বাইরের দিকে। লন্ডন থেকে কী বার্তা আসে অথবা বাইরের কোন দেশ সরকারকে কোন ইস্যুতে কতটুকু চাপ দেয়, তার ওপর নির্ভর করছে বিএনপির রাজনীতি।

কোনো এক অলৌকিক শক্তিবলে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিএনপির কেন্দ্রের মতো স্থানীয় পর্যায়ের নেতারাও মশগুল হয়ে আছেন। তাঁরা সংগঠনকে মজবুত করার জন্য মানুষের কাছে নিজেদের রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরার চেয়ে বেশি পছন্দ করেছেন হুংকার, হুমকি 
দিয়ে  ভয় দেখানোয়।

একটা সময় ছিল যখন রাজনীতির গতিমুখ ছিল তৃণমূলে। মানুষের মধ্যে থেকে, মানুষের জন্য কাজ করে তৃণমূলে যাঁরা জনগণের বিশ্বস্ত নেতা হয়ে উঠতেন, তাঁরাই ধাপে ধাপে জাতীয় রাজনীতিতে ঠাঁই পেতেন। এখন ধারা বদলে গেছে। এখন নেতা হওয়ার জন্য জনগণের সমর্থনের প্রয়োজন হয় না। এখনকার বেশির ভাগই হাইব্রিড নেতা। ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া। রাজনীতি এখন বিত্তবান হওয়ার উপায়।রাজনীতি পরিণত হয়েছে ব্যবসায়। কম বিনিয়োগে বেশি মুনাফা।

তৃণমূলের রাজনীতির ক্ষয়রোগ নিরাময় করতে হলে জাতীয় রাজনীতিতেই আগে পরিবর্তন আনতে হবে। তৃণমূলের ওপর ভর করে জাতীয় রাজনীতি, নাকি জাতীয় ধারায় তৃণমূলের রাজনীতি—এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত