Ajker Patrika

দুই বছর পর রহস্য উদ্‌ঘাটন

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৪৯
দুই বছর পর রহস্য উদ্‌ঘাটন

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় প্রায় দুই বছর পর এক যুবককে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. কামরুল ইসলাম (৩১) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সোমবার বিকেলে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

গ্রেপ্তার মো. কামরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার বারইহাটি এলাকায়।

পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, নিহত যুবক রুবেল মিয়া (৩২) কাপাসিয়ার টোক নয়ন বাজারে পেঁয়াজি, নিমকি, মুড়ালি ইত্যাদি তৈরি ও বিক্রি করতেন। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার টোক নয়ন বাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

২০২০ সালের ৭ এপ্রিল দুপুরে তিনি মো. রিপন, বিমল বর্মণ, নাছির উদ্দিন, মো. আরিফ, আরিফ মিয়া, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে শীতলক্ষ্যা নদীর টোক নয়ন বাজার ঘাট থেকে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় শ্রীপুরের বরমী যাওয়ার জন্য রওনা হন।।

পরে বিকেল কাপাসিয়া থানার টোক নগরের আব্দুল হাই মুন্সির চরের কাছের নদীর কিনারে পৌঁছালে গ্রেপ্তার আসামি কামরুল ও তাঁর সহযোগীরা অন্য একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় এসে রুবেল মিয়া ও তাঁর সঙ্গের যাত্রীদের গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে নৌকা থেকে তাঁদের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।

সহযাত্রীরা সাঁতরে নদীর তীরে উঠতে পারলেও রুবেলকে পাওয়া যায়নি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ৯ এপ্রিল সকালে কাপাসিয়া উপজেলার টোক নগরের আব্দুল হাই মুন্সির চরসংলগ্ন নদীর কিনার থেকে রুবেল মিয়ার অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে নিহতের পিতা বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেন। মামলাটি থানা-পুলিশ প্রায় ৬ মাস ধরে তদন্ত করে। কিন্তু এর রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি। এরপর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার নির্দেশে এর তদন্তভার গাজীপুরের পিবিআই এর কাছে স্থানান্তর করা হয়।

মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি জানিয়েছে, তাঁর সহযোগী অন্য আসামিরা তাঁকে বারইহাটি বাজারসংলগ্ন নদীর ঘাটে নিয়ে গিয়ে বলে শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকায় টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা হচ্ছে। তাঁরা প্রস্তাব দেয় জুয়ার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে আসার। পরে আসামি কামরুল ও তাঁর সহযোগীরা একটি নৌকা নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে রুবেলদের নৌকার কাছে যায়।

এ সময় তারা রুবেলের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা তাঁদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে রুবেল মিয়ার মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেন। রুবেল মিয়া অচেতন হয়ে পড়লে আসামিরা তাঁকে মৃত ভেবে নৌকা থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন। এরপর নৌকা নিয়ে বারইহাটি বাজারে ফিরে যান এবং প্রত্যেকে ছিনতাইকৃত টাকা ভাগাভাগি করে নেন।

এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি তাঁর সহযোগীদের নিয়ে জুয়ার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই রুবেল মিয়াকে লাঠিসোঁটা দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয় তাঁরা। গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত