Ajker Patrika

শিশুশ্রমিকসহ ৮ জনকে জিম্মি করার অভিযোগ

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৫৯
শিশুশ্রমিকসহ ৮ জনকে   জিম্মি করার অভিযোগ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ ও ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের এক শিশু শ্রমিকসহ আট তরুণকে ইট ভাটার এক কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার টোরামুন্সিরহাট এলাকার হান্নান ব্রিকস ও মামুন ব্রিকস নামের দুটি ইট ভাটায় তাঁদের আটকে রাখা হয় বলে জানিয়েছেন শ্রমিকদের স্বজনেরা। সর্দারসহ কয়েক সহযোগী শ্রমিক পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার জেরে এসব শ্রমিককে মূলত জিম্মি হিসেবে তাঁদের আটকে রাখা হয় বলে দাবি তাঁদের স্বজনদের।

আটকে রাখা শ্রমিকেরা হলেন শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর ছোট ভেটখালী গ্রামের মো. রউফ মোল্লার ছেলে মাহফুজ হোসেন (১৪), মাকসুদুল (২০), আব্দুর রউফ (৩৮), সুমন (২৩), শাহ আলম (২৬), শামিম (২৬), রিপন (১৮) ও ধুমঘাট গ্রামের মুজিবুল (২২)।

জানা গেছে, দুই মাস আগে মনিরুল ইসলাম নামের এক সর্দারের মধ্যস্থতায় এসব শ্রমিককে সেখানকার ইটের ভাটায় কাজ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ছয় সপ্তাহ কাজের পর শ্রমিকেরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের জিম্মি করা হয়।

স্বজনরা জানান, শুরুতে চার দিন তাঁদের খেতে না দিয়ে সার্বক্ষণিক তালাবদ্ধ করে আটকে রাখা হতো। তবে গত শনিবার থেকে পাহারায় রেখে ওই আট শ্রমিকদের দিয়ে সারা দিন কঠিন পরিশ্রমের কাজ করানো হচ্ছে। মাগরিবের আজানের পর আবারও তাঁদের একই ঘরে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করা হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে জিম্মি শ্রমিকদের কোনো যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

পাশের ইটভাটার শ্রমিকের সহায়তা নিয়ে জিম্মি এক তরুণ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, অন্য শ্রমিকেরা পালিয়ে যাওয়ার শাস্তি হিসেবে সকাল থেকে হাড়ভাঙা খাটুনি করানো হচ্ছে। খাবার দেওয়া হচ্ছে না। পাশের ভাটার শ্রমিকদের থেকে রুটি পানি খেয়ে গত পাঁচ/ছয় দিন কোনোরকমে বেঁচে আছি।’

জিম্মি ওই তরুণের আরও বলেন, ‘সর্দার ভাটা মালিকের কাছে না ফেরা পর্যন্ত আমাদের জিম্মি করে রাখা হবে। আমাদের মুঠোফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এত কষ্ট আর সহ্য করতে পারছি না, দয়া করে আমাদের কেই উদ্ধার করেন।’

জিম্মি মাহফুজের পিতা আব্দুর রউফ ম্যোলা ও রিপনের পিতা আবুল হোসেন গাজী জানান, তাঁদের ছেলেদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও আটকে রাখা হয়েছে। শাস্তি হিসেবে না খাইতে দিয়ে কঠিন পরিশ্রমের কাজ করানোর পাশাপাশি শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। থানা-পুলিশ করলে তাদের জিম্মি সন্তানদের ‘উধাও’ করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় তারা নিজেদের সন্তানদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল জানান, ভোট নিয়ে ব্যস্ততার কারণে এমন ঘটনার বিষয়ে তিনি কোনো খোঁজ নিতে পারেনি।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, এমন বিষয়ে কেউ এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় অভিযোগ করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত