Ajker Patrika

‘অভাবী ধানে’ হাসির ঝিলিক

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৭: ৪৯
‘অভাবী ধানে’ হাসির ঝিলিক

অভাবের মাস আশ্বিন-কার্তিক। এ সময় পীরগাছায় শ্রমজীবী মানুষের হাতে তেমন কাজ থাকে না। সেই সঙ্গে নিত্যপণ্যের বাজার হয়ে ওঠে অস্থির। এমন অবস্থায় কৃষক ও কৃষিশ্রমিকদের মুখে হাসির ঝিলিক এনে দিয়েছে আগাম জাতের ধান। অল্প সময়ে পেকে যাওয়া এই জাত স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘অভাবী ধান’ হিসেবে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্বল্প জীবনকালের অভাবী ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষেরা। কৃষকদের সোনালি স্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে আগাম জাতের এ ধান।

ছাওলা ও তাম্বুলপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠ ঘুরে দেখা গেছে সবুজের মধ্যে স্বল্প মেয়াদি সোনালি রঙের ধানখেত। কোথাও পেকে গেছে, কোথাও পাকতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে অনেক খেতের ধান কেটে নিয়ে গেছেন কৃষকেরা। বাকি খেতে সোনালি বর্ণ ধারণ করা ধান কয়েক দিনের মধ্যে কাটা যাবে।

ছাওলার শিবদেব গ্রামের কৃষক মোখলেসুর রহমান বলেন, অভাবের মাস আশ্বিন-কার্তিকে হাতে কাজ ছিল না। বাজারে চালের দাম বেশি। এখন আগাম জাতের ধানে স্বস্তি মিলেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছায় প্রতি বছর আগাম জাতের ধান চাষ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে এই ধান রোপণ করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় অর্ধেক ধান কাটা ও মাড়াই শেষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। প্রতি একরে ৭৫ থেকে ৮৫ মণ ধান উৎপাদিত হচ্ছে। এর সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছে খড়। প্রতি আঁটি কাঁচা খড় বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৭ টাকায়।

আগাম জাতের ধান বাজারে উঠতে শুরু করায় কিছুটা কমেছে চালের দাম। সেই সঙ্গে বাজারে নতুন ধানের দাম বেশ ভালো। শুকনা প্রতি মণ (৪০ কেজি) ধান বিক্রি করা হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা দরে।

তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রহমতের চর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘বর্তমান অস্থির চালের বাজারে যখন হিমশিম খাচ্ছিলাম তখন এ ধান আমার অভাব ঘুচিয়েছে। সঙ্গে খড়ের দামও বেশ ভালো। গ্রামে এ ধানকে অভাবী ধান বলেই সবাই চেনে।’

উপজেলার অনন্তরাম গ্রামের ধান কাটা শ্রমিক আবদুল হান্নান, বাচ্চা মিয়া ও আবদুর রাজ্জাক জানান, বছরের এ সময় কাজ থাকে না। সব ধান পাকতে আরও এক মাসের বেশি সময় লাগবে। কিন্তু মাঝে আগাম জাতের ধান পাকায় একটু সুবিধা হয়েছে। মাঝেমধ্যে কাজ মিলছে। প্রতি ২২ শতাংশ জমির ধান কাটা ও পরিবহনে ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম বলেন, স্বল্প মেয়াদি ধান কৃষকদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাঁরা বেশ উপকার পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে এ ধানের চাষ বৃদ্ধি পেলে দেশে অভাব বলে কিছু থাকবে না। কৃষকেরা একই জমিতে স্বল্প মেয়াদি বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলাতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত