Ajker Patrika

সিগমুন্ড ফ্রয়েড

সম্পাদকীয়
সিগমুন্ড ফ্রয়েড

সিগমুন্ড ফ্রয়েড ছিলেন একজন অস্ট্রীয় মানসিক রোগ চিকিৎসক এবং মনস্তাত্ত্বিক। তাঁকে মনোচিকিৎসার জনকও বলা হয়। তিনি ১৮৫৬ সালের ৬ মে অস্ট্রিয়ায় জন্মেছিলেন।

ছাত্রজীবনে আইন থেকে বিজ্ঞান এবং পরবর্তীকালে তিনি চিকিৎসাশাস্ত্রে আত্মনিয়োগ করেন। ১৮৮৪ সালে ফ্রয়েড ভিয়েনার হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত হন। পরের বছর তিনি ফরাসি স্নায়ুতন্ত্রবিদ চারকটের সংযোগে আসেন। চারকট মনে করতেন, মৃগীরোগের মূলে মানসিক কারণ নিহিত। চারকটের কাছ থেকে মনোসমীক্ষার আগ্রহ নিয়ে ফ্রয়েড ভিয়েনায় প্রত্যাবর্তন করেন।

১৮৯৩ সালে ফ্রয়েড এক গ্রন্থে অভিমত প্রকাশ করেন যে, হিপনোসিস বা সংবেশনের মাধ্যমে রোগীর অচেতন মনের অবদমিত ভাবকে অর্গলমুক্ত করে মৃগীরোগীকে রোগমুক্ত করা সম্ভব। কিন্তু এমন চিকিৎসার ফল তেমন স্থায়ী হয় না দেখে তিনি পরবর্তীকালে এই পদ্ধতি পরিত্যাগ করেন।

ফ্রয়েডের স্বপ্নের তত্ত্বও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ফ্রয়েড মনে করতেন, স্বপ্নের মধ্যে অচেতন জগতে অবদমিত বাসনা আত্মপ্রকাশ করে। কাজেই স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে মানসিক রোগের কারণ নির্ণয় করা সম্ভব। মনোবিজ্ঞানে ফ্রয়েডের প্রধান অবদান হচ্ছে তাঁর ‘আনকনশাস’ বা অচেতন মনের ব্যাখ্যা।

মানসিক রোগ যে নিরপেক্ষভাবে দেহের রোগ হতে পারে, এ তত্ত্বই শুধু ফ্রয়েড প্রবর্তন করেননি; তিনি আরও বলেন, সব মানসিক রোগের মূলে আছে যৌনকামনা বা প্রবৃত্তির অবদমন। যৌনাবেগ হচ্ছে মানুষের জীবনের মূল আবেগ। কিন্তু মানসিক রোগ নিরাময়ে সমাজবিচ্ছিন্ন যে পদ্ধতি তিনি আবিষ্কার করেছেন, তা দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় সমাজে অসহায় ব্যক্তির মানসিক বিকার নিরসনে খুব কার্যকর কোনো ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়নি।

১৯০৩ সালে ফ্রয়েড ভিয়েনায় ‘মনোসমীক্ষণবিদ চক্র’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৮ সালে ফ্যাসিস্ট হিটলারের বাহিনী ভিয়েনা দখল করার পর নিরাপত্তার জন্য লন্ডনে আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং ১৯৩৯ সালে সেখানেই মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত