Ajker Patrika

না ফেরার দেশে গুরু-শিষ্য

আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ২০: ০২
না ফেরার দেশে গুরু-শিষ্য

প্রায় ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন দুই অভিনেতা। একজন নাট্যকার, অভিনেতা ও নির্মাতা কায়েস চৌধুরী। অন্যজন অভিনেতা শামীম ভিস্তি। গুরু ও শিষ্যের সম্পর্ক কায়েস চৌধুরী ও শামীম ভিস্তির। ভক্তি ও শ্রদ্ধার পাশাপাশি বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল দুজনার। শুটিং থেকে শুরু করে ব্যক্তি জীবনেও তাঁদের সে সম্পর্ক অটুট ছিল। নাট্যকার ও অভিনেতা কায়েস চৌধুরী কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার ডায়ালাইসিস করাতে যান তিনি। এরপর বাসায় ফেরেন। বাসায় ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে মারা যান। অন্যদিকে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ নিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন শামীম ভিস্তি। শুক্রবার ভোর ৪টায় মারা যান তিনি।

কায়েস চৌধুরীর সঙ্গে দারুণ সব মুহূর্তের স্থিরচিত্র পাওয়া যায় শামীম ভিস্তির ফেসবুক ঘাটলে। সবগুলো ছবিতেই কায়েস চৌধুরীকে ‘গুরু’ বলে সম্বোধন করেছেন শামীম। সহকর্মী এই দুই অভিনেতার মধ্যে গুরু-শিষ্যের যে দারুণ সম্পর্ক এবং একই সঙ্গে না ফেরার দেশে যাওয়ার ঘটনাটি ছুঁয়ে গেছে আরেক অভিনেতা রওনক হাসানকে। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘কায়েস ভাইকে এতই ভালোবাসতেন যে তাঁর চলে যাওয়ার সংবাদ শুনে নিজেই স্ট্রোক করে বসেন শামীম ভিস্তি এবং কায়েস ভাইয়ের সাথে মিলিত হতে তিনিও অনন্ত যাত্রায় শামিল হলেন।’

অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘হঠাৎ করেই চলে গেলেন শামীম ভিস্তি। পরিচালক কায়েস চৌধুরীর মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েকবার বমিও করেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।’

আহসান হাবিব নাসিম জানান, শুক্রবার জুমার পর কায়েস চৌধুরীর জানাজা হয়েছে ধানমন্ডি ১২ নম্বরের একটি মসজিদে। শামীম ভিস্তির জানাজা হয়েছে মিরপুরে। দুই অভিনেতাকেই শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

নির্মাতা-অভিনেতা কায়েস চৌধুরী নেই—এটা মেনে নিতে পারছেন না নাট্যজগতের সতীর্থ, সহকর্মীরা। প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনা অনুভব করছেন সবাই।

নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জল বলেন, ‘আমি যখন আমার প্রথম টেলিভিশন নাটক “যান্ত্রিক ফড়িং এক” নির্মাণ করি, সেখানে কায়েস ভাই অভিনয় করেন। জীবনের প্রথম নাটক হিসেবে অগোছালো ছিল আমার সেই শুটিং। কিন্তু কায়েস ভাই সারা রাত আন্তরিকতা নিয়ে কাজটা করেছিলেন।’

অভিনেত্রী রুনা খান বলেন, ‘কায়েস চৌধুরী পরিচালিত ‘গেড়দালী’ ছিল আমার প্রথম অভিনীত টিভি নাটক। ২০০২-এর ১৪ ফেব্রুয়ারি। আরেক গুণীজন সৈয়দ আলী আহসান সিডনীর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে দীর্ঘক্ষণ শুটিং বন্ধ রেখেছিলেন সেদিন। সময় কত দ্রুত চলে যায়। তিনিও আমাদের ছেড়ে কেমন চুপেচাপে চলে গেলেন।’

অভিনেতা আজিজুল হাকিম বলেন, ‘বিটিভিতে ক্রিকেট খেলাবিষয়ক “না” নামের একটি জনপ্রিয় সিরিয়ালে অভিনয় করতে গিয়ে আমাদের ভাই ভাই সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় বড় ভাই (কায়েস চৌধুরী)। আমার আরও দুই ভাই সেজ ভাই সমু চৌধুরী ও ছোট ভাই সতীর্থ রহমান রুবেল। চমৎকার ভ্রাতৃত্বের এক বন্ধনে আমরা ছিলাম মিডিয়ায়। আমাদের সেই চার ভাই থেকে চলে গেলেন বড় ভাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

কুমিল্লায় দুই ট্যাংকে পানি, তদন্ত শেষ হয়নি ১ মাসে

জিন সম্পাদনায় নতুন সাফল্য, ডায়াবেটিস রোগীদের আর ইনসুলিন নিতে হবে না

অবৈধ মোবাইল দিয়ে বন্দীরা আমাকে কল করেন, এটা বিস্ময়কর: কারা মহাপরিদর্শক

কনস্যুলেটে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হামলা, ব্যবস্থা নিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে চিঠি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত