Ajker Patrika

৬ শ প্রার্থী প্রচারে ১২ শ মাইক

নান্দাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫৭
৬ শ প্রার্থী প্রচারে ১২ শ মাইক

নান্দাইলের ১১ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বেশির ভাগ প্রার্থীর বিরুদ্ধেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত সাউন্ড সিস্টেম ও মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। উচ্চশব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬০০ প্রার্থী ১ হাজার ২০০টির বেশি মাইক ব্যবহার করছেন।

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, ভোর থেকে প্রার্থীদের প্রচারের মাইক ও ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম বাজতে থাকে। কখনো তা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। আবার কেউ উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন স্পিকারও ব্যবহার করছেন।

স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, বাজার, মসজিদ-মন্দির ও আবাসিক এলাকাসহ সব খানেই প্রার্থীদের পক্ষে সাউন্ড সিস্টেম চলছে। এমনকি যানজটে দাঁড়ানো অবস্থাতেও থামছে না এ শব্দ। প্রতি বাজারে বিকেল থেকে রাত ৮ পর্যন্ত প্রচারে একাধিক মাইক ব্যবহার করেন প্রার্থীরা।

অপরদিকে পোস্টারে ছেয়ে গেছে বিভিন্ন স্থান। প্রার্থীরা ইচ্ছেমতো ক্যাম্প তৈরি করছেন। অনেকে রাস্তার মোড় ও রাস্তা দখল করে তৈরি করেছেন নির্বাচনী ক্যাম্প। আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে চলছে এসব প্রচারযজ্ঞ।

নির্বাচন আচরণবিধিমালা ২০১৬-এ মাইক্রোফোন ব্যবহার নিয়ে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান একটি ওয়ার্ডে পথসভা বা নির্বাচনী প্রচারের কাজে একের অধিক মাইক্রোফোন বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না। মাইকের ব্যবহার দুপুর ২টার আগে এবং রাত ৮টার পরে করা যাবে না।

এ ছাড়া আচরণবিধি অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক দল নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত দেয়াল বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগাতে পারবেন না। তবে ভোটকেন্দ্র ব্যতীত যেকোনো স্থানে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ঝোলাতে বা টাঙাতে পারবেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী তিনটি এবং সদস্য প্রার্থী একটি করে ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬২, সদস্য পদে ৩৯৯ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রত্যেক প্রার্থী কমপক্ষে দুটি করে মাইক ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া পোস্টারে ছেয়ে গেছে মানুষের ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান। পোস্টার থেকে বাদ যায়নি ইউপি ভবনও।

মোয়াজ্জেমপুর ইউপির মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘মাইকের শব্দে রাতে ঘুমাতে পারি না। একেকবার একেক প্রার্থীর মাইক বাজে। ছোট মাইকের পাশাপাশি সাউন্ডবক্সের মাধ্যমেও গান বাজিয়ে প্রার্থীরা প্রচার করছেন। এতে বাচ্চাদের পড়াশোনায়ও ক্ষতি হচ্ছে।’

শেরপুর ইউপির জবরজান বানু বলেন, ‘আমার ছোট একটা টিনের ঘর। এলাকার সব মেম্বার-চেয়ারম্যানের পোস্টার লাগিয়ে বেড়াগুলো নষ্ট করে ফেলছে। নিষেধ করলেও মানছে না।’

আচরণবিধি মানছেন কি না এ বিষয়ে একাধিক চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কর্মীরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেওয়ালে পোস্টার সাঁটিয়েছে। সে ব্যাপারে তাঁরা কিছু জানেন না। তবে কেউ লাগালে তো অপসারণ করবেন বলে জানান তাঁরা।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপির সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীরা জানান, আচরণবিধি সম্পর্কে তাঁরা কিছু জানেন না।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, আচরণবিধি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। কেউ যদি না মানেন, তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রশাসনিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। সুষ্ঠু নির্বাচনে তৎপর প্রশাসন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখছি প্রার্থীদের আচরণবিধি মানার বিষয়টি। যাঁরা ভঙ্গ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে ইতিমধ্যে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি একাধিক মাইক জব্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

আস্থায় বাজিমাত ইসলামী ব্যাংক

ভাগনের বিয়েতে ১ কেজি সোনা, ৪ বস্তা টাকা, ২১০ বিঘা জমি, পেট্রলপাম্প উপহার দিল মাড়োয়ারি পরিবার

চট্টগ্রামে র‍্যাব কর্মকর্তার লাশ: মাকে নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহে আত্মহত্যা বলে দাবি ভাইয়ের

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত