Ajker Patrika

মুষ্টির চালে দুর্গাপূজা

জসিম উদ্দীন, নীলফামারী
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১১: ৩৬
মুষ্টির চালে দুর্গাপূজা

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের হাঁড়িপাড়ার গ্রাম্য নারীরা ভাতের চাল থেকে মুষ্টির চাল জমিয়ে পূজার আয়োজন করেছেন। গ্রামে পুরুষদের আয়ের উৎস বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢোল বাজানো আর নারীরা বাড়িতে বসে বাঁশের সামগ্রী তৈরি করেন। দুর্গাপূজায় ঢোল বাজাতে গিয়ে পুরুষশূন্য হয়ে যায় এলাকাটি। তাই নারীরা মুষ্টির চাল জমিয়ে দুর্গাপূজার আয়োজন করেন।

গ্রামবাসী জানান, গ্রামটিতে ২৮ পরিবারের বাস। অনুষ্ঠানে ঢোল বাজানো ও বাঁশের তৈরিসামগ্রী হাটে-বাজারে বিক্রির অর্থ দিয়েই জীবিকা চলে তাঁদের। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় ঢোল বাজাতে গিয়ে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে হাঁড়িপাড়া। তাই পাড়ার নারীরা ১৫ বছর ধরে মুষ্টির চাল জমিয়ে ও সরকারি অনুদানে প্রাপ্ত চাল দিয়ে পূজা পালন করেন।

গৃহবধূ মল্লিকা রানী বলেন, ‘গত বছর অর্থাভাবে শুধু আলোকসজ্জা ও শামিয়ানা দিয়ে সাজানো হয় মণ্ডপঘর। ফলে পাড়ার বধূ, শিশু-কিশোরেরা পূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হন। তবে এবার আয়োজক কমিটি সব ব্যবস্থা করায় পূজার পরিবেশ পেয়েছি।’

হাঁড়িপাড়া পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সম্পাদক গীতা রানী বলেন, ‘প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে এবারে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সরকারের অনুদানের চাল বিক্রি করে ১৪ হাজার টাকা পেয়েছি। বাকি টাকা মুষ্টির চাল বিক্রি ও বিভিন্ন জনের দেওয়া অর্থ দিয়ে সমন্বয় করা হয়। টাকার ঘাটতি হলে মুষ্টি চাল জমিয়ে দিয়ে তা পূরণ করা হবে।

সভাপতি দিপালী রানী জানান, অর্থাভাবে পুরোনো মণ্ডপ ঘরটি মেরামত করা হয়নি। টিনের চালের ফুটো দিয়ে আকাশ দেখা যায়। বৃষ্টিতে প্রতিমা নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এবার বাহারি তোরণ করায় অর্থের ঘাটতি হবে বলে জানান তিনি।

জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট অক্ষয় কুমার রায় জানান, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। মণ্ডপ ঘরটি সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে নির্বিঘ্ন পূজা আয়োজনের জন্য ওই মণ্ডপে অনুদানের অর্থ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হবে।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, এবারে জেলায় ৭৬৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজা মণ্ডপগুলোতে পুলিশের টহল টিম সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত