Ajker Patrika

ঐতিহ্য হারাচ্ছে তাঁতশিল্প

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ১৮
ঐতিহ্য হারাচ্ছে তাঁতশিল্প

ঐতিহ্য হারাতে বসেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প। বর্তমানে অনেকটাই বিলুপ্তপ্রায় এই শিল্পটি। স্থানীয় তাঁতিদের অভিযোগ গ্যাসের ব্যবহার না থাকা, বিদ্যুৎ ও কাঁচা মালের মূল্য বৃদ্ধি এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তবে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

গতকাল তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হতো এই এলাকার তাঁতের চাদর, বিছানার চাদর, তোয়ালে ও গামছা। এক সময়ে এখানকার পাট্টা বিছানার চাদরের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। তবে প্রিন্ট চাদরের কারণে অনেকটায় তা হারানো স্মৃতি।

যদুবয়রার গামছা কারিগর আব্দুল গফুর বলেন, ‘এক সময় উপজেলার তাঁত পল্লিগুলো তাঁতের খট খট শব্দে রাত-দিন মুখর থাকত। আজ সেখানে নীরবতা।

উপজেলা তাঁত বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এক সময় কুমারখালী, খোকসা, কুষ্টিয়া, মিরপুর, রাজবাড়ী, পাংশা, লাঙ্গলবাঁধ এলাকায় প্রায় ৮০ হাজারেরও অধিক তাঁতি ছিলেন। এর মধ্যে খট খটি তাঁত ১৪ হাজার, হস্ত চালিত পিটলুম তাঁত ৪৪ হাজার ও বিদ্যুৎ চালিত ২০ হাজার তাঁত ছিল। এসব তাঁতে ২ কোটি ৮৮ লাখ লুঙ্গি, ১৫ লাখ বিছানার চাদর, ৭২ লাখ গামছা-তোয়ালে উৎপাদন হতো। সে সময় এ জেলায় বস্ত্র শিল্পের বার্ষিক আয় ছিল ৩ শত কোটি টাকার ওপরে। দেশের মোটা কাপড়ের চাহিদার ৬৩ ভাগ পূরণ করত কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীর তাঁতিরা। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এই তাঁত কাপড়ের ছিল ব্যাপক চাহিদা। বর্তমানে এ চাহিদা কমে ৩৫ ভাগে নেমে এসেছে।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সবকিছুর দাম বাড়লেও আশানুরূপ তাঁত বস্ত্রের দাম না বাড়ায় কুষ্টিয়ার ১ লাখ ১৪ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ৫০ হাজার তাঁত শ্রমিক পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। এখনো পুরোনো পেশা হিসাবে এ পেশায় টিকে আছে কয়েক হাজার তাঁতি।

কুমারখালী তাঁত বোর্ডের উপ-মহাব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘এই শিল্পের গৌরব ফিরিয়ে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নতুন করে ভাবতে হবে ‘ঐতিহ্য ফেরাতে অচিরেই সরকারি উদ্যোগে একটি বিপণন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত