Ajker Patrika

ইপিআই টিকা পাচ্ছে না নবজাতকেরা

নোয়াখালী প্রতিনিধি
ইপিআই টিকা পাচ্ছে না নবজাতকেরা

নোয়াখালী জেলায় দেড় মাস ধরে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) বন্ধ রয়েছে। সরবরাহ না থাকায় নবজাতকদের দেওয়া চারটি টিকার মধ্যে তিনটিরই মজুত ফুরিয়ে গেছে। ফলে প্রতিদিনই অভিভাবকদের নবজাতক নিয়ে টিকাকেন্দ্রে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে। 

জানা গেছে, শিশুদের জন্মের পর প্রথম দফায় হাত ও পায়ে যে চারটি টিকা দেওয়া হয়, তার মধ্যে তিনটির সরবরাহ নেই। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়সংলগ্ন ইপিআই টিকাদানকেন্দ্রে দেখা হয় বিবি লাকী আক্তারের সঙ্গে। তিন মাস বয়সী শিশু বিবি জুলেখাকে নিয়ে সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রাম থেকে টিকা দেওয়ানোর জন্য এসেছিলেন তিনি। কিন্তু টিকাদানকেন্দ্রে এসে জানতে পারেন, নবজাতকের জন্মের পর প্রথম যে চারটি টিকা দিতে হয়, তার মধ্যে তিনটির সরবরাহ নেই। 

বিষয়টি জানতে পেরে সন্তান নিয়ে এদিক-সেদিক খোঁজ নিতে থাকেন তিনি। শেষমেশ বাধ্য হয়ে মজুত থাকা একটি টিকা দিয়েই তাঁকে ফিরে যেতে হয়েছে। বাকি তিনটি টিকা কবেনাগাদ পাবেন, সে বিষয়েও সঠিক তথ্য জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। 

একই কথা জানালেন উপজেলার কাদির হানিফ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রাম থেকে আসা আড়াই মাস বয়সী শিশু ইমতিয়াজ হোসেনের মা মোসাম্মত সাজেদা। তিনি শিশু ইমতিয়াজের জন্মের ৪৫ দিনের মাথায় সিভিল সার্জন কার্যালয়সংলগ্ন ইপিআইকেন্দ্রে এসে শিশুকে শুধু বিসিজি টিকা দেওয়াতে পেরেছেন। পেন্টা, পিসিভি ও আইপিভি টিকা না থাকায় সেগুলো না দিয়েই ফিরে যেতে হয়েছে সাজেদাকে। 

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শিশুর ছয় সপ্তাহ হলে আইপিভি টিকার প্রথম ডোজ ও ১৪ সপ্তাহে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়। একই সময়ে পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপিটি, হেপাটাইটিস-বি, হিব), ওপিভি এবং পিসিভি টিকার প্রথম ডোজ দিতে হয়। তারপর কমপক্ষে চার সপ্তাহ বা ২৮ দিনের ব্যবধানে এসব টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ দিতে হয়। শিশুর ২৭০ দিন পূর্ণ হলেই শিশুকে প্রথম ডোজ এবং ১৫ মাস বয়স পূর্ণ হলে দ্বিতীয় ডোজ এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকা দিতে হয়। কিন্তু জেলায় দেড় মাস ধরে বিসিজি টিকা থাকলেও পেন্টা, পিসিভি ও আইপিভির মজুত নেই। 

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী জেলার নয়টি উপজেলা ও দুটি পৌরসভার ২ হাজার ২৩৫টি ইপিআই টিকাদানকেন্দ্রে প্রতিবছর ২৭ হাজার ৭৯৪ সেশনে বিনা মূল্যে টিকাদান করে সরকার। প্রতিবছর জেলার লক্ষ্য ১ লাখ ১২ হাজার ৭৫২টি নবজাতককে টিকাদান। তিন মাস পরপর ঢাকা থেকে এসব টিকা এনে মজুত এবং উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়। 

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, নোয়াখালীতে সবশেষ চলতি বছরের ২৭ জুলাই ৩৩ হাজার ৬০০ ভায়াল পেন্টা, আট হাজার ভায়াল পিসিভি ও ৬৬০ ভায়াল আইপিভি টিকা সরবরাহ করা হয়; যা আগস্টের মাঝামাঝি শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর কোনো টিকা আসেনি। 

জেলা ইপিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট অজিত রঞ্জন পাল বলেন, ‘টিকা ঢাকাতেই সরবরাহ নেই। সারা দেশে একই অবস্থা। বিভিন্ন দাতা সংস্থা আমাদের দেশে টিকাগুলো দিয়ে থাকে। হয়তো তারা সময়মতো দিতে পারছে না।’ 

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন মাসুম ইফতেখার বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহেই টিকা পাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত