Ajker Patrika

পলিথিনের ঝুপড়িতে বিদ্যুতের আলো

পীরগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১১: ১৩
পলিথিনের ঝুপড়িতে বিদ্যুতের আলো

পলিথিনে মোড়ানো ছোট ছোট ঝুপড়ি। তবে প্রতিটি ঘর ঝলমল করছে বিদ্যুতের আলোতে। আর বাসিন্দাদের অনেকের হাতেই মোবাইল ফোন। যা যোগাযোগের পাশাপাশি পূরণ করছে বিনোদনের চাহিদা। এসবই সম্ভব হয়েছে সৌরবিদ্যুতের কল্যাণে।

পীরগাছা উপজেলার দেউতি বাজার এলাকায় ঝুপড়িগুলোতে বাস করেন বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন। প্রতিটি অস্থায়ী ঘরের ওপরে ও পাশে লাগানো আছে সোলার প্যানেল। যার আলোয় রাতের আঁধার কেটে আলোকিত হয়ে ওঠে যাযাবর পরিবারগুলো।

দেউতি বাজারে ১৭টি বেদে পরিবার অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে। যেখানে মোট সদস্য আছেন ৭৫ জন। এখানকার বাসিন্দাদের ফোনে চার্জ দেওয়া হয় সৌরবিদ্যুতে। সেই ফোনে মেমোরি কার্ড লাগিয়ে ছোট ঘরে চলে বিনোদনের ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে সৌরবিদ্যুতের আলোতে পড়ালেখা করছে বেদে পরিবারের ছেলেমেয়েরা।

বংশ পরম্পরায় বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনের পেশা সাপ ধরা, সাপের খেলা দেখানো এবং নানা তাবিজ-কবচ ও কবিরাজি ওষুধ বিক্রি করা। তবে সময়ের স্রোতে বেদেরা পাল্টে ফেলছেন তাঁদের জীবনযাত্রা। নৌকার ভাসমান জীবন ছেড়ে এখন উঠে এসেছেন ডাঙায়।

বেদেরা জানান, অনেকে এখন বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য কাজ করছেন। সাপ কেনাবেচা ও সাপের খেলা দেখানো আগের মতো চলে না। ছেলেমেয়েরাও আর এ পেশায় আসতে চায় না। তাঁরা পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হতে চায়। ভবঘুরে জীবন ছেড়ে নিয়মিত স্কুলে যেতে চায়।

বাবুল মিয়া নামে একজন বেদে বলেন, ‘খোলা আকাশের নিচে বিভিন্ন গাছের নিচে, ছোট ঝোপঝাড়ে এবং পুকুর পাড়ে আমরা দল বেঁধে বসবাস করি। আগে অন্ধকার রাতে কুপির আলো ছিল আমাদের ভরসা। কিন্তু এখন সৌরবিদ্যুতের আলো আছে।’

বেদেরা বছরের ১০ মাস দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান আর দুই মাস ঢাকার সাভারে থাকেন বলে জানান বেদে ইয়াউল মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অস্থায়ীভাবে বসবাস করি তখন রাতে কেরোসিনের বাতিই ভরসা ছিল। এখন রাতে সৌরবিদ্যুতের বাতি জ্বলে। এখান থেকে মোবাইলে চার্জ দিতে পারি। মেমোরি কার্ড দিয়ে নাটক ও সিনেমার ভিডিও দেখতে পারি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত