Ajker Patrika

২ বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮: ৪৪
২ বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

ব্যাংকের ভল্ট থেকে পৌনে চার কোটি টাকা সরিয়ে জুয়ার আসরে ঢেলেছিলেন এক কর্মকর্তা। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলা করে। পুলিশ অভিযুক্ত ক্যাশ ইনচার্জকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। এরপর মামলা তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে দুবছর পার হলেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ করতে লাগবে আরও সময়।

বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ভল্ট থেকে ২০১৮-১৯ সালে বিপুল অঙ্কের ওই টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ভল্টের সব টাকা গোনার পর ওই টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় ব্যাংকের তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক ক্যাশ ইনচার্জ শামসুল ইসলাম ওরফে ফয়সালের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা হয়। পরে ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে তিনি টাকা সরানোর কথা স্বীকার করেন। এ নিয়ে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।

আদালতে শামসুল ইসলাম বলেছেন, ব্যাংকের ভল্টে সব সময় ১৫ কোটি টাকা থাকত। তিনি পেছনের সারি থেকে টাকা সরাতেন, যাতে সামনে থেকে বোঝা না যায়। ফয়সাল বলেছিলেন, ২০১৮ সালে তিনি অনলাইনে ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলায় জড়িয়ে পড়েন। তখন থেকেই টাকা সরাতে থাকেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন কোটি ৪৫ লাখ টাকা জুয়ায় ঢেলেছেন তিনি। জুয়ায় হেরে যাওয়ায় ভল্টে এনে রাখতে পারেননি।

গ্রেপ্তারের পর চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া ফয়সাল দুবছর ধরেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। কয়েক দফা জামিনের আবেদন করা হলেও আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে। এদিকে পরিবারও ফয়সালকে জেল থেকে বের করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফয়সালের বাবা এ কে এম নজরুল ইসলাম দুদকের সোর্স পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তিকে তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন ছেলের মামলা দুর্বল করতে। ওই একই ব্যক্তিকে আবদুল গাফফার নামে আরেক ব্যক্তি দিয়েছিলেন পাঁচ লাখ টাকা। পরে নজরুল ও গাফফার প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।

কয়েক দিন আগে র‍্যাব নজরুল ইসলাম ও আবদুল গাফফারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া ব্যক্তিকে আটক করে। পরে প্রতারণার শিকার গাফফার বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলার এজাহারেই ফয়সালের মামলার চার্জশিট ‘হালকা’ করতে ফয়সালের বাবা নজরুল ইসলাম তিন লাখ টাকা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, দুদক দ্রুত তদন্ত শেষ করতে না পারার কারণে তাঁরা উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ফয়সালকে বাঁচাতে পরিবারের পক্ষ থেকে টাকা ছড়ানোর কারণে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত মামলাটির অভিযোগপত্র দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী শুক্রবার বিকেলে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি মামলার তদন্তভার পেয়েছি। এ মামলার অনেকগুলো ফাইল, আস্তে ধীরে কাজ শুরু করেছি। সবকিছু মিলিয়ে আরও একটু সময় লাগবে। তবে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পারব বলে আশা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত