Ajker Patrika

‘সত্যজিৎকে কথা দিয়েছি’

সম্পাদকীয়
‘সত্যজিৎকে কথা দিয়েছি’

রমা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী। বিভূতির সঙ্গে রমার বয়সের পার্থক্য ছিল উনত্রিশ বছর। রমাই দিয়েছিলেন বিয়ের প্রস্তাব। বয়সের ব্যবধানের কারণে বিভূতি ইতস্তত করছিলেন, সময় চাইছিলেন এবং রমাকে বোঝাতে চাইছিলেন বয়সের তফাতটা।

কিন্তু রমাকে বোঝানো গেল না। বিভূতির জন্য রমার মন আকুল। শেষ পর্যন্ত ১৯৪০ সালের ৪ ডিসেম্বর বিয়ে হয়ে গেল বিভূতি-রমার।
তাঁদের দাম্পত্যজীবন ছিল ১০ বছরের। ১৯৫০ সালের নভেম্বরে ঘাটশিলা শহরে বিভূতিভূষণ মারা যান। এখান থেকেই আমাদের গল্পের শুরু।

সত্যজিৎ রায় বিলেত থেকে ফিরলেন নিউ ওয়েভ বা প্যারালাল সিনেমায় মোহগ্রস্ত হয়ে। ভিত্তোরিও দি-সিকার ‘বাইসাইকেল থিভু’ সিনেমাটি কত কম খরচে তৈরি হয়েছে, সেই গল্প করছেন তিনি বন্ধুদের। তারপর একদিন বন্ধুরা খবর পেল, সত্যজিৎ রায় ঘাড়ে ক্যামেরা নিয়ে ‘পথের পাঁচালী’ ছবি করতে রওনা হয়ে গেছেন। সবাই ছবি করে টালিগঞ্জে। সত্যজিৎ চলে গেছেন গড়িয়া পার হয়ে বোড়াল গ্রামে। এ নিয়ে বহু কাহিনিই আছে। সেদিকে আমরা যাচ্ছি না। আমরা বলতে চাইছি, ক্যামেরা নিয়ে, পুরো টিম নিয়ে তো বোড়াল গ্রামে যাওয়া হলো, কিন্তু ছবি করার পয়সা কই? এ সময় সত্যজিতের স্ত্রী বিজয়া তাঁর সব গয়না দিলেন বন্ধক দেওয়ার জন্য। সেই টাকায় চলল তিন দিনের শুটিং।

শুটিং এগোচ্ছে না দেখে অন্য অনেকেই ধরনা দিলেন রমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। বললেন, আমরা ছবিটা করব। অনেকে নতুন করে স্ক্রিপ্টও করে এনেছেন। একের পর এক লোক এসে মোটা টাকা অফার করছে। বলছে, ‘বাবলু তো একেবারে ছোট, একে মানুষ করতে হবে। দশ হাজার টাকা অ্যাডভান্স দিয়ে যাচ্ছি।’

রমা বললেন, ‘না। আমি সত্যজিৎকে কথা দিয়েছি। আমার বাবলুর মতো ওর বাবাও ওর ছোট বয়সে চলে গিয়েছিলেন।’ ছবি শেষ হওয়ার পর রমা বলেছিলেন, ‘আপনিই পারলেন ওঁর পথের পাঁচালীর মান রাখতে।’

সূত্র: কুমারপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, মেহফিল, পৃষ্ঠা ২৫-২৮ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নতুন বেতন নির্ধারণে কমিটি

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

এক ভারতীয়র কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হলো ট্রাকচালকদের ভিসা

সরকারি-আধা সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠানের দপ্তর থাকবে সমন্বিত ভবনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত