Ajker Patrika

এ গল্পের কি শেষ হবে না

সম্পাদকীয়
এ গল্পের কি শেষ হবে না

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-দুর্নীতির গল্পের যেন শেষ নেই। কিছুদিন পরপর একেকটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে যেসব খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়, সেগুলো পড়ে মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি জ্ঞান বিকাশের কেন্দ্র, নাকি অনিয়ম ও দুর্নীতি শেখানোর জায়গা? রোববার আজকের পত্রিকায় ‘পদে পদে অনিয়ম, সব নিয়োগ অবৈধ’ শিরোনামের প্রধান প্রতিবেদনটি পড়লে যেকোনো মানুষেরই লজ্জা পাওয়ার কথা।

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ সম্পর্কে খবরে বলা হয়েছে: নিয়োগের বিষয়ে নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশের মূল কপি নেই।ফটোকপি থাকলেও তা টেম্পারিং (ঘষামাজা) করা। পদের বিপরীতে যোগ্যতা নির্ধারণে সিন্ডিকেটের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এমনকি প্রার্থী এক পদে আবেদন করে নিয়োগ পেয়েছেন অন্য পদে। বাদ দেওয়া হয়েছে মেধাক্রমে এগিয়ে থাকা প্রার্থীকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন লাগলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ।

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত হচ্ছে। এটি দেশে উচ্চশিক্ষা প্রদানকারী মাদ্রাসাগুলো অধিভুক্ত করার এখতিয়ারসম্পন্ন প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক আহসান উল্লাহকে ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় নিয়োগ পান তিনি।

উপাচার্য চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে কতটা স্বেচ্ছাচার করেছেন, তা খবরে স্পষ্ট আছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠিত তদন্ত কমিটি উপাচার্য আহসান উল্লাহকে অপসারণের সুপারিশ করে বলেছে, বেআইনি ও অনৈতিক কার্যক্রম ও দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়সহ উপাচার্যের ভাবমূর্তি এতটাই ক্ষুণ্ন হয়েছে যে তাঁকে উপাচার্য পদে বহাল রেখে এ বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই উপাচার্যের পদ থেকে তাঁকে অবিলম্বে অপসারণ করা সমীচীন। একই সঙ্গে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ বিশেষ বাহিনীর মাধ্যমে তদন্তেরও সুপারিশ করা হয়েছে।

কিছু উপাচার্যের কর্মকাণ্ডে শিক্ষকদের সম্মান কমছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য মো. আবদুল হামিদ। ১৯ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, একজন উপাচার্যের মূল দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান, পরিচালনা, মূল্যায়ন ও উন্নয়নকে ঘিরে। কিন্তু ইদানীং পত্রিকা খুললে মনে হয়, পরিবার-পরিজন ও অনুগতদের চাকরি দেওয়া এবং বিভিন্ন উপায়ে প্রশাসনিক ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নেওয়াই যেন কিছু উপাচার্যের মূল দায়িত্ব।

কিছুসংখ্যক অসাধু লোকের কর্মকাণ্ডের জন্য যেন গোটা শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ক্ষুণ্ন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার যে আহ্বান আচার্য ও রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তা কার্যকর করার উদ্যোগও তাঁকেই নিতে হবে। উপাচার্য নিয়োগের সময় শুধু আনুগত্যের দিক বিবেচনা না করে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও আদর্শনিষ্ঠার ওপরই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ যেসব উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত