সুবর্ণখালি নদীতে সেতু নেই, দুর্ভোগে মানুষ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সুবর্ণখালি নদীতে সেতু না থাকায় দুর্ভোগে সেখানকার লাখো মানুষ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সুবর্ণখালি নদীতে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও স্বাধীনতা ৫০ বছরেও সেখানে আজও হয়নি সেতু নির্মাণ। স্থানীয় প্রকৌশল অফিস সূত্র জানিয়েছে, দ্রুতই জায়গাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সরেজমিন জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপোগলদিঘা গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে সুবর্ণখালি নদী। এ নদীর একপাশে সরিষাবাড়ী উপজেলা আর অন্যপাশে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা। এ নদীর দুই পাড়ে পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি, চর পোগলদিঘা, কান্দারপাড়া, পাখিমারা, পলিশা, গাছ বয়ড়া, কালিপুর, গোবিন্দপটল ও কাজিপুরের জোড়বাড়ি, বিন্যাফৈর, দানদাতপুর, গোয়াখাটা, ছালাল, রঘুনাথপুর, সেন্দুরআটা, বেটুয়া, তক্তার মোড়, উত্তর ছালাল, চার গিরিস, জবিরা, নাটোয়ারপাড় ও পানাকাঠি গ্রামে লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করেন। নানা প্রয়োজনে নদীর দুপাড়ের মানুষকে এই নদী পার হয়ে নানা গন্তব্যে যাতায়াত করতে হয়। সেতু না থাকায় দুর্ভোগ যেন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।

স্থানীয় আবুল কালাম আজাদ, মামুনুর রশিদ, তারা মিয়া, শহিদুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করেন, নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে সরিষাবাড়ী উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ২০-২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করে আসছেন। নানা প্রয়োজনে কাজীপুরের লোকজনকে সরিষাবাড়ী উপজেলা সদরে যেতে হয়। দূরত্বের দিক থেকে কাজীপুরের চেয়ে সরিষাবাড়ীর দূরত্ব অনেক কম।

সড়কপথে কাজিপুর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং নৌপথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার। শুকনো মৌসুমে নদীতে বালুর চর পড়ে যায়। এ কারণে কাজীপুরে যাতায়াত করা আরও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

সরিষাবাড়ীতে যেতে যাতায়াত ব্যবস্থা বেশ ভাল। দূরত্ব অর্ধেকের চেয়েও কমে। তাই নানা কারণে কাজীপুর উপজেলার ওই গ্রামগুলোর লোকজন এই পথে যাতায়াত করে থাকেন। দূরত্ব কমাতে ওই পাড়ের শিক্ষার্থীরা এপাড়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পড়ালেখা করে আসছে।

স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে সুরুজ আলী, স্বপন, আলম, সুলতান মিয়াসহ অনেকে অভিযোগ করেন, একটি সেতুর অভাবে যাতায়াত ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়ন হয়নি নদীর দুপাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকার। যাতায়াতে নানা প্রতিকূলতার কারণে তারা ুতাদের উৎপাদিত ফসল সময়মতো বাজারজাত করতে পারেন না।

এ ব্যাপারে পোগলদিঘা ইউপি চেয়ারম্যান সামস্ উদ্দিন বলেন, পাশ্ববর্তী কাজীপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ নানা প্রয়োজনে সময় বাচাতে সরিষাবাড়ী উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। সুবর্ণখালি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ দুপাড়ের মানুষের প্রাণের দাবি। ওই নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা গেলে এ পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগ অনেকটা কমে যাবে।

এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান বলেন, খুব দ্রুত জায়গাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জামালপুর জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদেক সাংবাদিকদের বলেন, নতুন কোনো সেতুর অনুমোদন পেলে এই সেতুটির নাম অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।