Ajker Patrika

কিশোর ও অপরাধ

সম্পাদকীয়
কিশোর ও অপরাধ

শিশু-কিশোরেরা যেন অন্যায়ভাবে শাস্তি না পায়, সে ব্যাপারে আমরা সব সময় সোচ্চার। অপরাধ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ করে এবং যে অপরাধ একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মানুষ করে শাস্তির ক্ষেত্রে তা যেন এক রকম না হয়, সেটা নিয়ে কথা বলে থাকে মানুষ। কিন্তু সেই শাস্তি কী ধরনের হতে পারে, তা নিয়ে নানা ঋষির নানা মত। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যাবে জেলখানায়, কিশোর যাবে সংশোধনাগারে—এমনটা ভাবাই রীতি।

রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জে এক বহিষ্কৃত স্কুলছাত্র সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে অস্ত্রের আঘাতে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি এখন হাসপাতালে।

কিশোর অপরাধীরা কোন অপরাধ করলে সেটাকে কিশোর অপরাধ বলা যাবে এবং তাকে সংশোধনাগারে পাঠানো যাবে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হওয়া দরকার।অপরাধের ধরন বা মাত্রা নিয়েও সরব হওয়া দরকার। কারণ, পরিবর্তিত সমাজকাঠামোয় অপরাধের সংজ্ঞা বদলে যাচ্ছে, নৃশংসতা হয়ে উঠছে আকাশসমান।

সমঝোতা, বোঝাপড়ার মাধ্যমে কোনো সংকট মোকাবিলার চেয়ে সশস্ত্র সংঘাতের পথ বেছে নিচ্ছে অনেকে। ভাবার কথা হলো, এই তালিকায় কিশোরদের বিচরণ দুর্লভ নয়।

তথ্যপ্রযুক্তির শনৈঃশনৈ উন্নতির কারণে আকাশ-সংস্কৃতির সঙ্গে অনেক বেশি একাত্ম হয়েছে মানুষ। এই সংস্কৃতিতে ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি অনেক মন্দ দিকও আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব মাধ্যমে সীমাহীন সহিংসতা, অভব্যতা, অশ্লীলতাও পোক্ত হয়ে বসেছে। ফলে অপরাধকারীরা এখন আর বয়সের নিগড়ে বাঁধা নেই। তারা যেকোনো বয়সেই নৃশংস হওয়ার সব উপকরণ পেয়ে যাচ্ছে আকাশ-সংস্কৃতি থেকে। আর যে বাস্তব সমাজে সে বাস করে, সেখানেও যদি আইনের শাসনের চেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয় মাস্তান গ্রুপ, তাহলে তো সোনায় সোহাগা।

শুধু কড়া শাস্তি এই অপরাধের প্রতিবিধান হতে পারে না। মানিকগঞ্জের খাবাসপুর লাবণ্যপ্রভা উচ্চবিদ্যালয়ের এই উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীর জীবনাচরণের দিকে তাকানো যাক। ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করাই ছিল তার কাজ। বারবার তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু তাতে সে কান দেয়নি। ফলে একসময় তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হলে ছাত্রদের লজ্জা পাওয়ার কথা। অভিভাবকদের মুখে কালি পড়ার কথা। নিজের সন্তানকে ঠিক পথে আনার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।কিন্তু এ ঘটনায় দেখা গেল ছেলেটি আরও সহিংস হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে!

নৈতিকতা এবং ভব্যতার যে পরিবেশ থাকার কথা ছিল আমাদের চারপাশে, নানা কারণেই আমরা সেগুলো থেকে দূরে সরে গেছি। পারিবারিকভাবে যদি সন্তানকে ঠিক শিক্ষা দেওয়া না হয়, যে পাড়ায় ছেলেটি বা মেয়েটি বসবাস করছে, সেই পাড়ায় যদি সবাই সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে না পারেন, একে অন্যের দুঃখে বা কষ্টে সমবেদনা না জানান, তাহলে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা বারবার ঘটতে থাকবে। এই অস্থিরতার মূল কারণটি চিহ্নিত করাটাই সবার আগে জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জম্মু-কাশ্মীরে ধ্বংস করা হলো ৪৪ হাজার কেজি রসগোল্লা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত