Ajker Patrika

অন্যের ভাগ্য বদলানো রুজিনা চান নিজের ভাগ্য পরিবর্তন

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা
আপডেট : ১১ মে ২০২২, ১৬: ৫৭
অন্যের ভাগ্য বদলানো রুজিনা চান নিজের ভাগ্য পরিবর্তন

গ্রামে গ্রামে ঘুরে অসহায় দরিদ্র্ নারীদের আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন পীরগাছার প্রতিবন্ধী রুজিনা আক্তার। হয়েছেন ‘জয়িতা’। তাঁর পরামর্শে শতাধিক নারীর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটলেও নিজের ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি।

রুজিনা (২৭) উপজেলার দিলালপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে। তিনি পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। জন্মের পর তাঁর শৈশব ছিল অন্য শিশুদের মতোই। তবে ৪ বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যান। এখন এক পা খুঁড়িয়ে হাঁটেন। কিন্তু দমে যাননি। প্রতিবন্ধিতা জয় করে করেছেন স্নাতক পাস। এখন তাঁর চাওয়া, সরকারি চাকরি করে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন।

শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে বিশেষ অবদান রাখায় রুজিনা ২০১৪ সালে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কার্যালয় কর্তৃক জয়িতা হিসেবে মনোনীত হন। পরে তিনি বেসরকারি সংস্থা ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশে যোগ দেন। এখন তিনি গ্রামের অসহায় দারিদ্র্য নারীদের আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

রুজিনা বলেন, ‘প্রতিবন্ধিতা কোনো অভিশাপ নয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সম্পর্কে আমাদের মন পরিবর্তন করতে হবে। আমি জীবনে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি এবং সেগুলো অতিক্রম করেছি। এখন আমার একটি সরকারি চাকরি খুবই প্রয়োজন। আমি চাই সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে।’

রুজিনার বাবা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মেয়েটা নিজেকে প্রতিবন্ধী ভাবেনি। গ্রামের অনেক নারীর ভাগ্যের চাকা পরিবর্তনে কাজ করছে।’

স্থানীয় কৈকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুর আলম মিয়ার মতে, যে দেশে প্রতিবন্ধীরা সমাজে অবহেলিত সে দেশে রুজিনার মতো মেয়েরা গ্রামের আলোকিত মুখ। তাঁদের পাশে দাঁড়ালে তাঁরা একদিন সমাজের জন্য অনেক কিছু করতে পারবে। রুজিনার একটি ভালো চাকরির জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. সেলোয়ারা বেগম বলেন, ‘সমাজে রুজিনাদের অবদান অপরিসীম। তাঁরা প্রতিবন্ধী হয়েও যে কাজ করছে, সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষও তা করে না। আমরা রুজিনাকে জয়িতা মনোনীত করেছি। তাঁর একটা সরকারি চাকরি হলে ভালো হতো।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, একজন মেয়ে প্রতিবন্ধী হয়েও যখন অনার্স-মাস্টার্স পাস করে, তখন বুঝতে হবে তাঁর মেধা আছে। যখন তিনি গ্রামের নারীদের নিয়ে কাজ করেন, তখন তাঁর কাজের মূল্যায়ন দেওয়া দরকার। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্ব-স্ব দক্ষতা অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা করা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত