মাসুদ উর রহমান
সেকেন্ডের ভগ্নাংশে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে বিকট শব্দে সবকিছু আটকে গেল, রুদ্ধ হলো গতি, থেমে যেতে থাকল প্রাণের স্পন্দন। সংহারমূর্তি ধারণ করল চারপাশ। মুহূর্তের আর্তচিৎকার নেমে এসেছে গোঙানিতে। এরপরই চারপাশে চিৎকার, চেঁচামেচি, আর্তনাদ, আহাজারি! এই চিত্র এখন নিত্যদিনের-প্রতিক্ষণের। প্রতিদিন বাড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কর্মস্থলে যেতে হয় আমাকে ২৩ বছর ধরে। ছোটখাটো দুর্ঘটনায় নিজেও বার কয়েক আপতিত হয়েছি এবং প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছি বলে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই।
ইদানীং বয়স বাড়ছে, বাড়ছে জীবনের প্রতি মায়া। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। গেটম্যানের অবহেলা, চালকের উদাসীনতা, দুই গাড়ির প্রতিযোগিতা, পথচারীর অসাবধানতা কিংবা ফিটনেসবিহীন, লাইসেন্সবিহীন যানবাহন—এসব শুনতে শুনতে বিরক্ত, হতাশ! বলা ভালো, হতাশা পরমমান অতিক্রম করছে। গত ৩০ জুলাই আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম ‘সারিতে হাসিমুখ, সারিতেই লাশ!’ সঙ্গে পাশাপাশি ছাপা হওয়া দুটো ছবি। ছবি দুটোর দিকে তাকানোর শক্তি কি আমাদের আছে?
আমাদের সংবেদনশীলতা আরও বেড়ে যায়, অসহায় অনুভব করি কোনো শিশু-কিশোরকে দুর্ঘটনায় বা অসুখ-বিসুখে পড়তে দেখলে। চট্টগ্রামের মিরসরাই দুর্ঘটনার পর ট্রেন থেকে নামিয়ে রাখা লাশের সারি দেখেও ঠিক একই রকম অনুভূতি হচ্ছে আমার। নিজেকে সংবরণ করতে কষ্ট হচ্ছে। তরুণ ছেলেদের প্রায় সবাই আমার ছেলের বয়সী। এদেরও তো মা-বাবা আছে। কেমন আছেন তাঁরা? কেমন করে সইছেন এই শোক?
নিজ সন্তানকে এভাবে লাশ হতে দেখলে কেমন লাগে, এটি কি আমরা অনুভব করতে পারি? পারি না। পারলে লাশের মিছিল এত দীর্ঘ হতো না। সড়ক এমন অনিরাপদ আর বিশৃঙ্খল হতে পারত না।
দেশে নিরাপদ ও জনবান্ধব সড়ক পরিবহনব্যবস্থা গড়েই উঠছে না। গড়ে উঠবে, তেমন কোনো লক্ষণও দৃশ্যমান নয়। সড়কে গণপরিবহন যেমন চলছে নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে, তেমনি অধিকাংশ ব্যক্তিগত যানবাহন, বিশেষ করে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, নছিমন, করিমন চলছে একেবারে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে। অথচ মোটরসাইকেল ছাড়া বাকি সব কটি মহাসড়কে নিষিদ্ধ!
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আইন করে নিষিদ্ধ করে প্রকারান্তরে কোনো গোষ্ঠীকে অর্থলাভের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ঘটছে অহরহ সড়ক দুর্ঘটনা। যখনই দেশে বড় ধরনের কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে কিংবা কোনো দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনবিক্ষোভ তৈরি হয়, তখন সরকার সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে তৎপর হয়। কমিটি গঠন করে, বৈঠক করে, সুপারিশমালা তৈরি করে। অতঃপর এসব তৎপরতার মধ্যেই আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটলে মানুষের মনোযোগ সরে যায়, সেই সুযোগে কর্তৃপক্ষের তৎপরতাও থেমে যায় এবং বিরামহীনভাবে ঘটতে থাকে দুর্ঘটনা, চলতে থাকে নানা রকম অনিয়ম। মোটামুটি এভাবেই চলছে দেশের সড়ক পরিবহনব্যবস্থা।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার কথা? তারই প্রতিক্রিয়ায় ফুঁসে উঠেছিল কোমলপ্রাণ ছাত্রসমাজ। ঢাকাসহ সারা দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে এক অভূতপূর্ব অহিংস আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।
‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিয়ে দুই দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা সড়কে-যানবাহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে দিয়েছিল এবং দেশে প্রথমবারের মতো ইমার্জেন্সি লেন তৈরি করে সারা দুনিয়ার প্রশংসা কুড়িয়েছিল। সে সময় শিক্ষার্থীরা যানবাহনের ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা শুরু করলে দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির যানবাহন আটকে যাওয়ার দৃশ্যটিও নিশ্চয়ই মনে আছে।
শিক্ষার্থীদের সেই অহিংস স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন আমাদের সেদিন আশান্বিত করেছিল। সম্মুখ বিপদ ভেবে সরকারও তখন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি মেনে নিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ দ্রুততার সঙ্গে সংসদে পাস করেছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ওই যে বললাম না, এ দেশে আইন আছে কিন্তু তার কোনো প্রয়োগ নেই। তথাকথিত কাজির গরুর মতো—‘কিতাবে আছে, গোয়ালে থাকার দরকার নেই’ এর মতোই অনেকটা!
সেকেন্ডের ভগ্নাংশে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে বিকট শব্দে সবকিছু আটকে গেল, রুদ্ধ হলো গতি, থেমে যেতে থাকল প্রাণের স্পন্দন। সংহারমূর্তি ধারণ করল চারপাশ। মুহূর্তের আর্তচিৎকার নেমে এসেছে গোঙানিতে। এরপরই চারপাশে চিৎকার, চেঁচামেচি, আর্তনাদ, আহাজারি! এই চিত্র এখন নিত্যদিনের-প্রতিক্ষণের। প্রতিদিন বাড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কর্মস্থলে যেতে হয় আমাকে ২৩ বছর ধরে। ছোটখাটো দুর্ঘটনায় নিজেও বার কয়েক আপতিত হয়েছি এবং প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছি বলে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই।
ইদানীং বয়স বাড়ছে, বাড়ছে জীবনের প্রতি মায়া। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। গেটম্যানের অবহেলা, চালকের উদাসীনতা, দুই গাড়ির প্রতিযোগিতা, পথচারীর অসাবধানতা কিংবা ফিটনেসবিহীন, লাইসেন্সবিহীন যানবাহন—এসব শুনতে শুনতে বিরক্ত, হতাশ! বলা ভালো, হতাশা পরমমান অতিক্রম করছে। গত ৩০ জুলাই আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম ‘সারিতে হাসিমুখ, সারিতেই লাশ!’ সঙ্গে পাশাপাশি ছাপা হওয়া দুটো ছবি। ছবি দুটোর দিকে তাকানোর শক্তি কি আমাদের আছে?
আমাদের সংবেদনশীলতা আরও বেড়ে যায়, অসহায় অনুভব করি কোনো শিশু-কিশোরকে দুর্ঘটনায় বা অসুখ-বিসুখে পড়তে দেখলে। চট্টগ্রামের মিরসরাই দুর্ঘটনার পর ট্রেন থেকে নামিয়ে রাখা লাশের সারি দেখেও ঠিক একই রকম অনুভূতি হচ্ছে আমার। নিজেকে সংবরণ করতে কষ্ট হচ্ছে। তরুণ ছেলেদের প্রায় সবাই আমার ছেলের বয়সী। এদেরও তো মা-বাবা আছে। কেমন আছেন তাঁরা? কেমন করে সইছেন এই শোক?
নিজ সন্তানকে এভাবে লাশ হতে দেখলে কেমন লাগে, এটি কি আমরা অনুভব করতে পারি? পারি না। পারলে লাশের মিছিল এত দীর্ঘ হতো না। সড়ক এমন অনিরাপদ আর বিশৃঙ্খল হতে পারত না।
দেশে নিরাপদ ও জনবান্ধব সড়ক পরিবহনব্যবস্থা গড়েই উঠছে না। গড়ে উঠবে, তেমন কোনো লক্ষণও দৃশ্যমান নয়। সড়কে গণপরিবহন যেমন চলছে নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে, তেমনি অধিকাংশ ব্যক্তিগত যানবাহন, বিশেষ করে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, নছিমন, করিমন চলছে একেবারে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে। অথচ মোটরসাইকেল ছাড়া বাকি সব কটি মহাসড়কে নিষিদ্ধ!
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আইন করে নিষিদ্ধ করে প্রকারান্তরে কোনো গোষ্ঠীকে অর্থলাভের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ঘটছে অহরহ সড়ক দুর্ঘটনা। যখনই দেশে বড় ধরনের কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে কিংবা কোনো দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনবিক্ষোভ তৈরি হয়, তখন সরকার সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে তৎপর হয়। কমিটি গঠন করে, বৈঠক করে, সুপারিশমালা তৈরি করে। অতঃপর এসব তৎপরতার মধ্যেই আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটলে মানুষের মনোযোগ সরে যায়, সেই সুযোগে কর্তৃপক্ষের তৎপরতাও থেমে যায় এবং বিরামহীনভাবে ঘটতে থাকে দুর্ঘটনা, চলতে থাকে নানা রকম অনিয়ম। মোটামুটি এভাবেই চলছে দেশের সড়ক পরিবহনব্যবস্থা।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার কথা? তারই প্রতিক্রিয়ায় ফুঁসে উঠেছিল কোমলপ্রাণ ছাত্রসমাজ। ঢাকাসহ সারা দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে এক অভূতপূর্ব অহিংস আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।
‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিয়ে দুই দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা সড়কে-যানবাহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে দিয়েছিল এবং দেশে প্রথমবারের মতো ইমার্জেন্সি লেন তৈরি করে সারা দুনিয়ার প্রশংসা কুড়িয়েছিল। সে সময় শিক্ষার্থীরা যানবাহনের ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা শুরু করলে দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির যানবাহন আটকে যাওয়ার দৃশ্যটিও নিশ্চয়ই মনে আছে।
শিক্ষার্থীদের সেই অহিংস স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন আমাদের সেদিন আশান্বিত করেছিল। সম্মুখ বিপদ ভেবে সরকারও তখন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি মেনে নিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ দ্রুততার সঙ্গে সংসদে পাস করেছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ওই যে বললাম না, এ দেশে আইন আছে কিন্তু তার কোনো প্রয়োগ নেই। তথাকথিত কাজির গরুর মতো—‘কিতাবে আছে, গোয়ালে থাকার দরকার নেই’ এর মতোই অনেকটা!
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪