Ajker Patrika

অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২২, ১৮: ১০
অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) একাডেমিক, প্রশাসনিক ভবন ও আবাসিক হলে নেই যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। দেয়ালে যে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডারগুলো ঝুলতে দেখা যায়, এদের বেশির ভাগেরই মেয়াদ নেই। এদিকে কয়েকটি সিলিন্ডারে অগ্নিনির্বাপক পদার্থও নেই। এগুলো কেবল দায় এড়াতে অযথাই ঝুলিয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগুন নেভানোর প্রশিক্ষণও নেই। আকস্মিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখতে নিয়মিত মহড়ার আয়োজনও করা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় একবার মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল। এরপর আর কোনো মহড়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় আগুনের তাণ্ডব শুরু হলে টিলার ওপর গড়ে ওঠা শুষ্ক এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জটিল পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন সচেতন কর্মকর্তা-শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলো লাগানো হলেও যথাযথ তদারক করা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের চার হল—শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কেবল কয়েকটি স্থানে চোখে পড়ে। আবার যেগুলো ঝুলে থাকতে দেখা যায়, সেগুলোর মেয়াদ নেই। হলের মতোই একই চিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদে। ছয়তলা এই অনুষদের নিচতলায় লাগানো দুটি সিলিন্ডারের একটিতেও নেই রাসায়নিক পদার্থ। একইভাবে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবনেও ঝুলছে ফাঁকা যন্ত্রগুলো। এমনকি প্রশাসনিক ভবনের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ। এ ছাড়া প্রশাসনিক ভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভবনে নেই কোনো জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি।

২০১৮ সালের এপ্রিলে একবার ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিপ্রতিরোধের মহড়া হলেও এরপর আর তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিকটতম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ইপিজেড ও বাগিচাগাঁও স্টেশন দুটি যথাক্রমে ৮ ও ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। খানাখন্দে ভরা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী রাস্তার কারণে এই পথে আসতে ফায়ার সার্ভিসকে পড়তে হয় প্রতিবন্ধকতার মধ্যে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল আলম বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোর বেশির ভাগ মেয়াদোত্তীর্ণ বা ফাঁকা। তাই যেকোনো দুর্ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’

তবে আশার কথা হলো এবারের অর্থবছরে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কেনার জন্য কমিটি করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের জন্য কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক মো. সানোয়ার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক মো. সানোয়ার আলীকে আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেনকে সদস্যসচিব করে চার সদস্যের ক্রয় কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে আরও আছেন রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ওয়ালী উল্লাহ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখা প্রধান মো. মিজানুর রহমান।

যন্ত্র ক্রয় বা মেডিসিন রিফিল করার ব্যাপারে কমিটির আহ্বায়ক মো. সানোয়ার আলী বলেন, ‘এক সপ্তাহ হলো চিঠি পেয়েছি। কমিটির সঙ্গে মিটিং করছি। দ্রুত কাজ করার চেষ্টা করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা দপ্তর থেকে ফায়ার সার্ভিসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা বিনা মূল্যে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে। অগ্নিনির্বাপক যে যন্ত্রগুলো খালি, সেগুলোতে মেডিসিন ভরার জন্য ক্রয় কমিটি করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত