Ajker Patrika

ফসলের বদলে তামাকে ঝোঁক

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ০৪
ফসলের বদলে তামাকে ঝোঁক

নাটোরের লালপুরে কৃষিজমিতে ফসলের বদলে তামাক চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। অধিক মুনাফা পাওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে তামাক চাষে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তামাকচাষিদের এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য (বীজ, সার) নগদ ৪ হাজার ২০০ টাকা এবং উৎপাদিত তামাক ন্যায্যমূল্যে কৃষকের বাড়ি থেকে কেনার নিশ্চয়তা দেয় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি।

উপজেলা কৃষি দপ্তর জানায়, বেশ কয়েক বছর আগে সীমিত পরিমাণে তামাক চাষ শুরু হয়। তবে বিগত কয়েক বছরে তামাক চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁদের হিসাবমতে, ২০১৭ সালে প্রায় ৩৫ হেক্টর, ২০১৮ সালে তা বেড়ে ৪৫ হেক্টরে দাঁড়ায়। ২০১৯ ও ২০২০ সালে তামাক চাষ হয় ৪৫ হেক্টরে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে এই পরিমাণ আরও অনেক বেশি বলে জানান কৃষকেরা।

নিশ্চিত বিক্রি, বেশি মুনাফা ও ক্রেতা কোম্পানি প্রণোদনাকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় চাষিরা তামাক চাষ করছেন। এক বিঘা জমিতে তামাক উৎপাদনে ব্যয় হয় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি চাষিদের এই উৎপাদনব্যয়ও আগাম দেয়। বিঘাপ্রতি ৪০০ কেজি তামাক পাতা উৎপাদন সম্ভব। প্রতি কেজি ১৫৫ টাকা হিসেবে এর দাম পাওয়া যায় প্রায় ৬২ হাজার টাকা ।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে উপজেলার গন্ডবিল, বাওড়া, বড়ময়না, বাঁশবাড়িয়া, চন্ডিগাছা, সালামপুর, আব্দুলপুর, দুড়দুড়িয়া, দুয়ারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একসময় যেসব জমিতে ধান, গম, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করা হতো, এখন সেসব জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। কৃষকেরা অন্য ফসলের পাশে চাষ করা তামাকের জমিগুলো পরিচর্যা করছেন। কিছুদিনের মধ্যে তামাক পাতা কাটা ও পোড়ানোর কাজ শুরু হবে, তাই জমির পাশে লোকালয় ও কৃষকের বাড়িতে তামাক পোড়ানোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে চুল্লি। বীজ, সার ও অগ্রিম ঋণসহ নানা সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় ধান ও রবিশস্যের পরিবর্তে তামাক চাষকেই অধিক লাভজনক মনে করছেন কৃষকেরা।

মুরদহ গ্রামের তামাকচাষি হাশেম আলী বলেন, তামাক চাষে কোম্পানির লোক টাকা, সার, বীজ দেয়। আবার তামাক লাগানোর সময় দামও বলে দেয়। এমনকি কোম্পানি নির্দিষ্ট স্থান থেকে নগদ টাকা দিয়ে তামাক কিনে নেয়। সে জন্যে এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছেন।

আব্দুলপুর গ্রামের তামাকচাষি মকছেদুর রহমান বলেন, চুল্লিতে পোড়ানোর জন্য তামাকের কাঁচা পাতা গাঁথার সময় গন্ধে খারাপ লাগে। শ্বাসকষ্টে ভুগলেও অল্প খরচে কোম্পানির টাকায় তামাক চাষ করেন।

লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, তামাক চাষ বাড়ায় কমে যাচ্ছে জমির উর্বরা শক্তি। তামাক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ, সার ও ঋণ সহায়তা দেন। বিনা পুঁজিতে লাভ বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা তামাক চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্নভাবে সচেতন করা হলেও তামাকের চাষ কমছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

মানবিক করিডরে বাংলাদেশের ফায়দা কী

রোগী দেখতে হবে কমপক্ষে ১০ মিনিট, অতিদরিদ্রদের জন্য বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা

সন্ধ্যায় বাজারে গিয়ে নিখোঁজ, ভোরে কালভার্টের নিচে মিলল নারীর লাশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইচ্ছেমতো’ ব্যয়, দুই বছরে রাষ্ট্রের ক্ষতি ৩৮৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত