Ajker Patrika

সব দায় কেন প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে

সম্পাদকীয়
সব দায় কেন প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগের একশ্রেণির নেতা-কর্মী দিন দিন যেভাবে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠছেন, তা দল ও সরকারের জন্য বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা সব সময় বলে থাকেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ বা পরামর্শ ছাড়া দেশে কোনো কিছুই হয় না। তাঁর কাছে সব তথ্য আছে, সবার আমলনামা আছে, কোনো কিছুই তাঁর অগোচরে নেই।

এ ধরনের প্রচারণা কি শেখ হাসিনাকে মহিমান্বিত করার, নাকি তাঁকে সমালোচিত করার জন্য, সেটা মনে হয় ভাবার সময় এসেছে। যখন ভালো কিছু হয়, তখন নেত্রীবন্দনা মানানসই হলেও যখন খারাপ কিছু ঘটে, তখন তো নিন্দুকেরা এটা বলতে পারে, যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া হয় না, তাহলে খারাপটাও কি তাঁর পরামর্শ বা নির্দেশেই হয়?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা যে অন্য সবার চেয়ে বেশি, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশের সুযোগ নেই। তার মানে এটা অবশ্যই নয় যে দেশে ভালো-মন্দ যা কিছু ঘটে, এর সবই তাঁর নখদর্পণে। প্রধানমন্ত্রী একজন মানুষ এবং একজন মানুষের পক্ষে সবকিছু জানা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, মানুষ কখনো ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে হতে পারে না।

এটা ঠিক, আমাদের দেশের রাজনীতিতে এখন শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলনা করার মতো আর কোনো রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রী নেই। প্রধানমন্ত্রীই যে সব সিদ্ধান্ত নেন, তা তো নয়। তাঁর নামে যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয় তার কিছু কিছু তো ভুলও হতে পারে। আবার তিনি যদি নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেনও, তা সঠিকভাবে কার্যকর হওয়া না-হওয়া নির্ভর করে তাঁর সমর্থক ও কর্মী বাহিনীর ওপর।

প্রশ্ন হচ্ছে, সমর্থক ও কর্মীরা কি সবাই নেত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে চলেন? প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলেন। অথচ আওয়ামী লীগের অনেকেই দুর্নীতিপরায়ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোনো সংঘাত হলে, দলের কেউ যদি করে, তাদের রেহাই নেই।’ এমন কঠোর হুঁশিয়ারির পরও হামলা, ভাঙচুর, মারধর ও আগুন লাগানোর ঘটনা তো বিভিন্ন স্থানে ঘটছে।

এরই মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই উসকানিমূলক আচরণ করছেন, মারামারিতে জড়িয়ে পড়ছেন। প্রধানমন্ত্রী তো এসব করতে মানা করছেন। তাঁর কথা অমান্য করার মতো ধৃষ্টতা যাঁরা দেখান, তাঁদের তো রেহাই পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু অন্যায় করে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার জন্য কাউকে শাস্তি দেওয়ার কোনো দৃষ্টান্ত কী আমাদের সামনে আছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভোট চুরির সুযোগ না থাকায় বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে নেই, সেহেতু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট চুরির কোনো ঘটনা ঘটবে না বলে আমরা ধরে নিতে পারি। কিন্তু মাঠের পরিস্থিতি কী বলছে?

বিএনপি নির্বাচন থেকে বাইরে থাকার পর প্রায় একতরফা নির্বাচনেও কেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে? সব দায় প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে চাপিয়ে যাঁরা আখের গোছানোয় ব্যস্ত, তাঁদের ব্যাপারে কঠোর মনোভাব দেখানো দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত