Ajker Patrika

রাস্তার কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া ও শিপুল, তারাগঞ্জ
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২১, ১১: ০০
রাস্তার কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৪ থেকে ৫ ফুটের রাস্তা ১৪ ফুট প্রশস্ত হওয়ার কথা। পাঁচ মাস আগে শেষ হয়েছে সংস্কার প্রকল্পের মেয়াদ। কিন্তু এত দিন পরে এসেও রাস্তা আগে যে রকম ছিল, সেই রকমই আছে। এমনকি সংস্কার করা হয়নি ভাঙাচোরা রাস্তার কোনো অংশও। অথচ কাজ শেষ দেখিয়ে তিনটি প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দের প্রায় ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মুনিমুল হকের সহযোগিতায় বেতগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপ্টন কাজের বিনিময়ে টাকা কর্মসূচির (কাবিটা) আওতায় তিনটি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেতগাড়ীর এক কৃষক বলেন, ‘রাস্তায় কাজ হলে তো চোখেই দেখতাম। এখান দিয়ে গরুর গাড়ি চালাতেই খুব কষ্ট হয়। রিকশা-ভ্যান প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। অথচ চেয়ারম্যান কাজ শেষ হয়েছে বলে টাকা তুলে নিয়েছেন।’

এমন অভিযোগের সত্যতা মিলেছে অনুসন্ধানেও। জানা গেছে, বেতগাড়ীর চেয়ারম্যান লিপ্টন কাবিটার আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তিনটি প্রকল্প দাখিল করেন। প্রকল্পগুলো হলো, দক্ষিণ বেতগাড়ী প্রামাণিকপাড়ার চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে খাঁ টারীর মোড় পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারকাজ, যাতে বরাদ্দ রাখা হয় ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯৪০ টাকা। আলদাদপুর খিলালগঞ্জ বাজার থেকে চেয়ারম্যানের প্রজেক্ট পর্যন্ত কাজে বরাদ্দ ৩ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৬ টাকা। দক্ষিণ বেতগাড়ী বালাপাড়া আনজুর মোড় হইতে খাঁ টারীর মোড় পর্যন্ত রাস্তার কাজে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৬০৭ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। ইতিমধ্যে তিন প্রকল্পের ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৩ টাকার পুরোটাই উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান লিপ্টন।

এদিকে তিনটি প্রকল্প এলাকায় সরেজমিন গেলে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ‘লিপ্টন চেয়ারম্যান ক্ষমতা অপব্যবহার করে গ্রামের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছেন। তাঁর এমন কাজে সহযোগিতা করেছেন পিআইও মুনিমুল হক।’

অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে বেতগাড়ীর চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপ্টন বলেন, ‘দুটি প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে করেছি। একটি প্রকল্পে মাটির অভাবে কাজ করতে পারিনি। তাই ওই প্রকল্পের পুরো টাকা উত্তোলন করিনি।’ এ বিষয়ে পিআইও মুনিমুল হকও একই কথা বলেন।

কাজ হয়েছে বলে চেয়ারম্যানের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে আলদাদপুর খিলালগঞ্জ বানিয়াপাড়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ‘খিলালগঞ্জ বাজার থেকে চেয়ারম্যানের প্রজেক্ট পর্যন্ত রাস্তায় পূর্বদিকে অর্ধেক এলাকায় চেয়ারম্যান লিপ্টন তাঁর নিজস্ব মাছের প্রজেক্টে যাওয়ার জন্য কিছু শ্রমিক দিয়ে সামান্য মাটি ভরাট করেছেন। সেটা কোনোভাবেই রাস্তার কাজ নয়।’

কাজ হলেও রাস্তার প্রশস্ততা কী কারণে বাড়েনি? এমন প্রশ্নের উত্তরে পিআইও জানান, ‘প্রকল্পে কিছু পরিবর্তন এসেছে।’ তবে পরিবর্তিত প্রকল্পের অনুমোদন দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হন। এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলীমা বেগম বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো অনিয়ম থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত