Ajker Patrika

মুক্তপুরুষ

সম্পাদকীয়
মুক্তপুরুষ

সৈয়দ মুজতবা আলী দুজন মানুষকে মুক্তপুরুষ ভাবতেন। তাঁদের একজন হলেন রবীন্দ্রনাথের সবচেয়ে বড় ভাই দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। কেন তা মনে করতেন? তার বড় একটা কারণ হলো, তাঁর জীবনে কিছুই ঘটেনি। কিন্তু এটাও তো সত্য, যখন কেউ একজন বলেছিল, বাংলায় মন্দাক্রান্তা ছন্দে লেখা যায় না, তখন তিনিই তো কোনো কিছু চিন্তা না করে লিখে দিলেন, ‘ইচ্ছা সম্যক জগদদর্শনে কিন্তু পাথেয় নাস্তিপায়ে শিক্লি মন উড়ু উড়ু একি দৈবের শাস্তি!’

ঠাট্টা করে লেখা, কিন্তু কোথাও কোনো ছন্দপতন নেই!

এক পয়লা বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ সর্বজ্যেষ্ঠ ভ্রাতার পদধূলি নিতে যান। রবীন্দ্রনাথ বড় ভাইকে বললেন, ‘এবারে গরম বেশি পড়েছে বলে তিনি হিমালয়ের “ঘুম”-এ যাচ্ছেন। বড় দাদা গেলে ভালো হয়।’

এ কথা শুনে দ্বিজেন্দ্রনাথ বলছেন, ‘আমি? আমি আমার এই ঘর-সংসার নিয়ে যাব কোথায়?’

তাঁর ঘর-সংসার বলতে ছিল দু-একটি কলম, বাক্স বানাবার জন্য কিছু পুরু কাগজ, দু-একখানা খাতা, কিছু পুরোনো আসবাব। এগুলো রেখে তিনি কী করে হিমালয়ে যাবেন!

একবার এক ভিখারি এসে ভিক্ষা চাইল। তিনি বললেন, ‘আমার কাছে তো এখন কিছু নেই। তুমি এই শালখানা নিয়ে যাও।’

কোন শাল? প্রাচীন যুগের কাশ্মীরি শাল। দ্বারকানাথ ঠাকুরের আমলের। ভিখারি প্রথমে নিতে চায়নি। বড়বাবুর চাকর দেখল, কর্তার পায়ের ওপর শালটা নেই। তখন দীনেন্দ্রনাথকে খবর দেওয়া হলো। তিনি বোলপুরে লোক পাঠিয়ে সেই ভিখারির কাছ থেকে শালটা ‘কিনিয়ে’ ফেরত আনালেন। ভিখারি তাতে খুব খুশি। এ রকম দামি শাল বিক্রি করতে গেলে সবাই তাকে চোর বলে সন্দেহ করত।

পরদিন যখন সেই শাল আবার দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পায়ের ওপর রাখা হয়, তখন তিনি সেটা লক্ষই করলেন না!

তিনি মুক্তপুরুষ না হলে কে আর মুক্তপুরুষ? 

সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলী, গুরুদেব ও শান্তি নিকেতন, পৃষ্ঠা ১৪৩-১৪৫

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের খোঁজ মিলছে না

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নতুন বেতন নির্ধারণে কমিটি

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

৫ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণে অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত