Ajker Patrika

বাজার আবার চড়া

সম্পাদকীয়
বাজার আবার চড়া

এ এক অদ্ভুত দেশ। কোনো কার্যকারণ দিয়ে এ দেশের হিসাব-নিকাশ মেলানো যাবে না। ১০ জানুয়ারি আজকের পত্রিকার ভেতরের পাতায় একটি সংবাদ দেখে কথাটা মনে হলো। সত্যিই, আলেকজান্ডার যদি এই একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বজয় করার জন্য বের হতেন এবং আসতেন এই বঙ্গদেশে, তাহলে আগের মতো একই কথা বলতেন, ‘সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ।’

সংবাদটির দিকে চোখ রেখে কয়েকটি কথা বলি, পাঠকের ভালো লাগবে। আমনের ভরা মৌসুম চলছে। নতুন ধান উঠলে স্বভাবতই চালের দাম একটু কমে। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে, আমনের এই ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। চালের মূল্যবৃদ্ধির কোনো সুফল কৃষকেরা পাচ্ছেন বলে আমাদের জানা নেই। এটাকে ব্যবসায়ীদের ট্যাঁকের সুবিধা বাড়ানোর প্রক্রিয়া হিসেবে দেখলে মনে হয় ভুল হবে না।

বিচিত্র দেশের বিচিত্র ঘটনার আরেকটি হলো গমের দাম। অনেকেরই মনে পড়ে যাবে, বেশ কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই আটা বা ময়দার দাম হয়ে গেল আকাশচুম্বী। এই সুযোগে হোটেল-রেস্তোরাঁয় বেড়ে দ্বিগুণ হলো আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি করা খাদ্যের দাম। কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপ না করেই ৫ টাকার শিঙাড়া হয়ে গেল ১০ টাকা। ডালপুরি বা আলুপুরিরাও পরিণত হলো দামি খাবারে। দাম যেভাবে বেড়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে ইচ্ছেমতো বাড়ানো হলো খাদ্যের দাম। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমছে। স্বভাবতই আমাদের দেশেও গম থেকে তৈরি আটা-ময়দার দাম কমবে বলে প্রত্যাশা করা যায়। কিন্তু আদতে কি সেটা ঘটবে? আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে একবার যে দাম বাড়ে, সেই দাম কমার ঘটনা খুব কমই আমরা দেখতে পাই।

দেশে উৎপন্ন আলুর দাম নিয়ে কী ভেলকিবাজি চলল, সে কথাও এখানে ভুলে গেলে চলবে না। পেঁয়াজ নিয়ে তো প্রতিদিনই রূপকথার জন্ম হয়। নতুন নতুন গল্প উঠে আসে। আর আমাদের চোখে ভেসে ওঠে অশরীরী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অস্পষ্ট চেহারা। ডালের দাম নিয়েও নতুন করে কিছু বলার নেই।

কেন দাম বাড়ছে, এর একটি সহজ উত্তর হলো, ব্যবসায়ী আর সাধারণ ক্রেতার মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা ভোক্তাকে তাঁদের লাভের শিকার বানাতে চান। চাল-ডাল-ময়দা-আটা-আলু-পেঁয়াজ দিয়েই মূলত আমাদের দেশের মূল রান্নাগুলো করা হয়। এই খাদ্যপণ্যগুলোর ওপর সারা দেশের মানুষ নির্ভরশীল। তাই কোনো কারণ ছাড়াই পণ্যগুলোর দাম বাড়ানো হলে কষ্ট হলেও তা কেনেন ক্রেতা। কখনো কখনো ক্রেতাদের তরফ থেকে বয়কটের কথা শোনা গেলেও আদতে তা পালন করা শক্ত। কারণ আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া মানুষের সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে তারাই বাজারে গিয়ে চড়া দামে পণ্য কিনে নিতে পারে। যে কেউ বাজারে গেলে এ রকম হঠাৎ বড়লোক হয়ে যাওয়া মানুষের দেখা পাবেন।

বাজারের এই নিয়ম ছাড়া চলন দেশের জন্য ভালো নয়। নির্বাচন হয়ে গেল, এবার কি বাজার-দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

পাকিস্তানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংসে ভারত-ইসরায়েলের যৌথ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় যেভাবে

খামেনি কোথায়, কেমন আছেন—উৎকণ্ঠিত ইরানিদের প্রশ্নের বন্যা

এই বিজয় বাংলাদেশি আন্টিদের বিজয়: জোহরান মামদানি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত