Ajker Patrika

চার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ২০
চার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

চার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মফিদুর রহমান আমিন মুকুলকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

চারটি পৃথক প্রতারণার মামলায় মফিদুর রহমান আমিন মুকুলের ছয় বছর সাজা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার আরও একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাঁকে গতকাল বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক মফিদুর রহমান আমিন মুকুল তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন সময় প্রায় ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন। টাকার বিপরীতে প্রমাণ হিসেবে ওই প্রধান শিক্ষক তাঁর স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা চেক দিয়েছেন। পরে চাকরি না হওয়ায় প্রতারণার অভিযোগ তুলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে কুড়িগ্রাম দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। মামলায় সাজা হওয়ার পর থেকে প্রায় দেড় বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। গত সোমবার ঢাকার শ্যামলী মোড় থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ভুক্তভোগী মজনু মিয়া (৪০) বলেন, ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময় তাঁর প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেন। ২০১৫ সালে তাঁকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা নেন। পরবর্তীতে চাকরি এবং টাকা ফেরত কোনোটাই না পেয়ে আদালতে মামলা করেন তিনি। তাঁর মামলায় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ ছাড়া চাকরি দেওয়ার কথা বলে জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা, তাঁর ছোট ভাই আলমগীর হোসেনের কাছ থেকে ১০ লাখ, এনামুল ইসলামের কাছে ৪ লাখ ও তৈহিদ মিয়ার কাছ থেকে ৮ লাখ নেন। এভাবে তিনি ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

এদিকে ২০১৫ সালে চার ভুক্তভোগীর পৃথকভাবে করা চেক ডিজঅনারের মামলায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে ও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পৃথকভাবে ওই প্রধান শিক্ষকের ছয় বছরের সাজা হয়।

এ বিষয়ে উলিপুর থানা চত্বরে ওই প্রধান শিক্ষকের মেয়ে মুশরা আমিন (১৯) বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়।

শিক্ষকের মেয়ের অভিযোগ, সংসারের অভাব অনটনের জন্য জনৈক দাদন ব্যবসায়ী ফজলুল হকের কাছে স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা চেক বই তাঁর বাবা বন্ধক রাখেন। প্রতি মাসে ওই দাদন ব্যবসায়ী ১০ হাজার টাকা করে নিতেন। ওই দাদন ব্যবসায়ী টাকার বিনিময়ে বিভিন্নজনের কাছে চেকের পাতা বিক্রি করেন। ওই ব্যক্তিরা পরবর্তীতে তাঁর বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি নুর কাশেম আমিন বলেন, তিনি মাত্র ছয় মাস হয় সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। ঘটনাগুলো পূর্বের সভাপতির সময়ের। তিনি শুনেছেন যে যারা মামলা করেছেন, তাঁদের বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বিল হয়নি। আর যত টাকার কথা শোনা যাচ্ছে, বিষয়টি এত টাকার নয়। প্রধান শিক্ষক যেখানে চেক বন্ধক রেখেছিলেন, সেখান থেকে চেক কিনে নিয়ে ইচ্ছেমতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে কয়েকজন মামলা করেছেন বলে প্রধান শিক্ষক তাঁকে জানিয়েছেন।

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, মফিদুর রহমান আমিন মুকুল দেড় বছর ধরে পলাতক ছিলেন। চারটি মামলায় সাজা ও ১টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত