Ajker Patrika

কৃষি গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক

হাবিবুর রনি, বাকৃবি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ০২
কৃষি গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি   পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক

ফলাফল ঘোষণার পর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। পছন্দকৃত কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে না পারা, প্রশ্নপত্র ও ফলাফলে ভুলসহ নানা অভিযোগ করছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও সরব তাঁরা। এমনকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই দুই শিক্ষার্থীর মেধা তালিকায় নাম এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে পরীক্ষার ফল বাতিল করে পুনরায় নিরীক্ষণের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি) প্রশাসন।

এদিকে গত মঙ্গলবার কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে ওঠা প্রশ্নের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছে বাকৃবি শাখা ছাত্র ইউনিয়ন। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘বিতর্কিত এই ফলাফলে’ একজন শিক্ষার্থীও বঞ্চিত হলে সেই দায় বিশ্ববিদ্যালয় এড়াতে পারে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ নভেম্বর বাকৃবিসহ সাতটি কৃষিপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশের পর থেকেই অভিযোগ আসে, মেধা ও পছন্দক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র দেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। ১ ডিসেম্বর ফল প্রকাশিত হয়। এরপর ফলাফল নিয়ে অভিযোগ আসা শুরু হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ফলাফল নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ রয়েছে। কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও ফলাফল তালিকায় অনুপস্থিতিসহ নানা ধরনের কারিগরি সমস্যা হয়েছে।

তাঁরা বলছেন, বুটেক্স ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ফলাফল নিয়ে অভিযোগ করেছিল। পরে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছে। কিন্তু কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ এ রকম কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

কৃষি গুচ্ছ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ফজলে রাহাদ নামে একজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মতামতের সাপেক্ষে ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ দেয়। সে জন্য অনেকে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে। পরে তারা ‘এ’ সেটের উত্তরমালা দিলে আমরা দেখি, পাঠ্যবই অনুসারে ১০টি প্রশ্নের উত্তর ভুল এবং দুটি টাইপিং ভুল।’

রাশেদা খাতুন নামে এক অভিভাবক কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি মিলিয়ে আমার মেয়ের মোট নম্বর বেশি থাকলেও সিট পড়েছে ৬ নম্বর সিরিয়ালের পরীক্ষাকেন্দ্র। অথচ মেয়ের বান্ধবীর নম্বর অনেক কম থাকলেও সিট পড়েছে ৩ নম্বর সিরিয়ালের কেন্দ্র। অব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে আসতে হয়েছে।’

বশেমুরকৃবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন এবং উত্তরপত্রে কোনো ভুল নেই। সব শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের স্ক্যান কপি আমাদের কাছে আছে। যারা দেখতে চেয়েছে তাঁদের দেখানো হয়েছে। আমি তিনটি উত্তরপত্র ম্যানুয়ালি চেক করে দেখেছি। কোনো ভুল ছিল না।’

কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র তৈরি করেছি। ওএমআর মেশিনে রেজাল্ট প্রবেশের সময়ও সতর্ক থেকেছি।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক প্রশ্ন যেমন হওয়ার কথা, তেমনই হয়েছিল। পাঠ্যবইয়ের উত্তরকেই প্রাধান্য দিয়ে আমরা সে কাজটি করেছি। তারপরও যদি কোনো ভুল থাকে সেটিও আমরা খতিয়ে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত