Ajker Patrika

পরিবারের অমতে বিয়ে লাখ টাকার চুক্তিতে খুন

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৩৮
পরিবারের অমতে বিয়ে লাখ টাকার চুক্তিতে খুন

গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশাচালক শরিফুল ইসলামকে (২০) হত্যার দায়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, লাখ টাকার চুক্তিতে শরিফুলকে হত্যা করা হয়। পাত্রীর পরিবারের অমতে বিয়ে করায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার হিজুলিয়া শফিকুল ইসলাম (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের বনখড়িয়া গ্রামের আফ্রিদি, বনখড়িয়া উত্তরপাড়ার মো. হানিফ, জয়দেবপুরের বাউপাড়া গ্রামের মো. রাকিব হোসেন (২২), জামালপুরের ইসলামপুরের দর্জিপাড়া গ্রামের মো. রাজিব শেখ (২২), ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মিছিটেঙ্গী গ্রামের জুয়েল রানা (২৭)।

গতকাল শনিবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।

পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়া গ্রামের মৃত নায়েব আলীর ছেলে শরিফুল ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন। ৯ ডিসেম্বর সকালে তিনি অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ওই দিন বিকেলে বনখড়িয়া বাজার থেকে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট বিপস গেট সড়কে চালকবিহীন অটোরিকশাটি দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, অটোরিকশার পেছনে থাকা মোবাইল নম্বরে ফোন করে বিষয়টি অটোরিকশার মালিক মোশারফ হোসেনকে জানান রোমান হোসেন নামের এক ব্যক্তি। পরে অটোরিকশার মালিক মোশারফ হোসেন শরিফুলের বড় ভাই মো. সেকান্দারকে বিষয়টি জানান।

মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, ওই দিন রাতে অটোচালক শরিফুল বাড়িতে না ফেরায় স্বজনেরা পরদিন ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে অটোরিকশা পড়ে থাকার জায়গায় যান। এর সামান্য দূরে গজারি বনের ভেতর শরিফুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে শ্রীপুর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. সেকান্দার অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার ১০-১২ দিন আগে জয়দেবপুরের ভাওয়াল মির্জাপুর গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের মেয়ে কারিমাকে (১৭) তার পরিবারের অমতে গোপনে বিয়ে করেন শরিফুল। পরে উভয় পরিবার তাঁদের বিয়ে মেনে নেয়। ১০ ডিসেম্বর কারিমাকে পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠান করে ঘরে তুলে নেওয়ার কথা ছিল শরিফুলের।

মাকছুদের রহমান বলেন, কারিমার বড় ভাই খোরশেদ আলমের শ্যালক রাজিব শেখ কারিমাকে পছন্দ করতেন এবং পারিবারিকভাবে তাঁর সঙ্গে কারিমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এ কারণে কারিমার পরিবার শরিফুলের সঙ্গে বিয়ে মেনে নেয়নি। এর জেরে কারিমার বড় দুই বোনের স্বামী রাকিব হোসেন ও জুয়েল রানাসহ পরিবারের সদস্যরা নিহত শরিফুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছমত ওরফে তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে শরিফুলকে হত্যার জন্য এক লাখ টাকায় চুক্তি করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, চুক্তি মোতাবেক নিহত শরিফুলকে সিগারেট খাওয়ানোর কথা বলে আছমত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল ওই গজারিবনের ভেতর নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে আছমতসহ আরও তিনজন সিগারেট ও গাঁজা সেবন করেন। একপর্যায়ে শরিফুলকে চেপে ধরে মাটিতে ফেলে দেন তাঁরা। প্রথমে শরিফুলের গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করেন, পরে গলা কেটে তাঁকে হত্যা করেন।

পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে আফ্রিদি ও শফিকুল আদালতে নিজেরাসহ বাকিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি চার আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চোখের জলে বিদায় সাংবাদিক বিভুরঞ্জনকে

ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে সব বলে দেব: উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান

বুড়িগঙ্গা থেকে তরুণ-তরুণীর হাত বাঁধা লাশ উদ্ধার

অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকালে বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকের দাবি বিএসএফের

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত