Ajker Patrika

সূর্যমুখীতে হাসি নয়, লোকসানের শঙ্কা

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১৮: ০৩
সূর্যমুখীতে হাসি নয়, লোকসানের শঙ্কা

পীরগাছায় আলুর বদলে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তাঁরা বলছেন, রংপুর অঞ্চলে সূর্যমুখীর তেল তৈরির মিল না থাকায় বীজের মূল্য পাওয়ায় পিছিয়ে রয়েছেন চাষিরা। ফুল দেখে প্রথমে মুখ হাসি দেখা গেলেও এখন আয়-ব্যয়ের হিসাব করতে গিয়ে তাঁদের চেহারা মলিন হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর পীরগাছায় প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১১০ কৃষককে সূর্যমুখীর বীজ ও সার দেওয়া হয়। তাঁরা প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে তেলজাতীয় ফসলটির চাষ করেন। তবে কিছু গাছের দৈর্ঘ্য কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে হয়নি এবং ফুলও ছোট হয়েছে। এতে করে ফলন কমে যাচ্ছে।

কৃষকদের অভিযোগ, পীরগাছা আলুর জন্য বিখ্যাত। যে ৩৩ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করলে ৭০ থেকে ৮০ মণ আলু পাওয়া যেত, সেই জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে মিলছে ৪ থেকে ৫ মণ বীজ। সেই হিসেবে একই জমিতে আলুর মূল্য ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পাওয়া গেলেও সূর্যমুখীতে মিলছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এতে করে বড় ধরনের লোকসানে পড়ছেন চাষিরা।

উপজেলার অনন্তরাম (উচাপাড়া) গ্রামের স্কুলশিক্ষক আকতার হোসেন লিটন ২২ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গাছে ফুল এসেছে। দেখতে অনেক সুন্দর। দূর-দূরান্ত থেকে ফুল দেখতে ও ছবি তুলতে মানুষ আসছে। এতে মন ভরলেও ফলন নিয়ে হতাশায় আছি। সূর্যমুখীর বদলে আলু চাষ করলে অনেক লাভ হতো। এখন দেখছি সার-পানির খরচই উঠবে না।’

অন্নদানগর ইউনিয়নের মকবুল হোসেন জানান, জমিতে ফুল থেকে বীজ আসার পর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসে খেয়ে ফেলে। আর বাজারে দামও কম। প্রতি মণ বীজ আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। এক বিঘা জমিতে চার থেকে পাঁচ মণ ফলন পাওয়া যায়।

সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল উৎপাদন ছাড়াও গরু-মহিষের খাবার হিসেবে খৈল তৈরি হয়ে থাকে। এ ছাড়া গাছ জ্বালানি হিসেব ব্যবহার করা যায় বলে জানান উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হক ও অবিনাশ চন্দ্র।

উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান বলেন, সূর্যমুখী শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, এর গুণাগুণও সর্বোৎকৃষ্ট। সূর্যমুখী থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল মুক্ত, যা রান্নার কাজে ব্যবহার করলে মানুষের হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে এবং হৃদ্‌রোগ আক্রান্ত রোগীরা এই তেল খেলে বিশেষ উপকার পান।

চাষের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম বলেন, সূর্যমুখী তেল অনেক উপকারী। অনেকে এর উপকার সম্পর্কে জানেন না। সর্বস্তরের মানুষকে এই তেল সম্পর্কে জানালে তাঁরা ব্যাপক উপকার পেত। এ ছাড়া রংপুর অঞ্চলে সরিষার মতো সূর্যমুখী তেলের মিল তৈরি করা গেলে ভালো দাম পাওয়া যেত। সেই সঙ্গে বাজার ব্যবস্থা জোরদার হলে কৃষকেরা সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হতো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত