Ajker Patrika

শ্রীরামের আরেক তত্ত্ব

রানা আব্বাস, ব্রিসবেন থেকে
শ্রীরামের আরেক তত্ত্ব

বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে শ্রীধরন শ্রীরামের যোগাযোগ হয় দুই ভাষায়—হিন্দি আর ইংরেজিতে। নেটে কোনো ব্যাটার-বোলার ভুল করলে বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট ধমক দেন দুই ভাষাতেই। গতকাল এক ব্যাটারকে বারবার বোঝানোর পরও ভুল শট খেলতে দেখে চিৎকার করে উঠলেন, ‘পেহেলে ফিল্ড প্লেসিং তো সামাজলো (আগে ফিল্ডারদের অবস্থান বুঝে নাও)।’

নেটে শ্রীরামের তৎপরতা দেখে মনে হবে তিনি কড়া হেডমাস্টার। যদিও নিজেই দাবি করলেন, মোটেও হেডমাস্টার নন তিনি। হেডমাস্টার না হন, নিজেকে নিশ্চয়ই ব্যর্থ কোচের তালিকায় দেখতে চান না শ্রীরাম। বাংলাদেশের হয়ে সাফল্য পেতে যতটা ‘কড়া’ হওয়া যায়, হচ্ছেন। এই সময়ে যেকোনো টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের কাছেই কাঙ্ক্ষিত কোচ শ্রীরাম। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের। এই দায়িত্বই তাঁকে ভিন্ন এক চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে।

বর্তমান সময়ের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশেষজ্ঞ শ্রীরামের সৌজন্যে বাংলাদেশ ক্রিকেটে প্রবেশ করেছে ইম্প্যাক্ট, ম্যাচ আপ, মেক শিফট ওপেনার-তত্ত্ব।

ওপেনিং জুটি নিয়ে এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা তিনি করছেন, স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে এ নিয়ে। উদ্বোধনী জুটি নিয়ে এত আলোচনা অবশ্য ভালো লাগছে না শ্রীরামের। গতকাল অ্যালান বোর্ডার ফিল্ডে সাংবাদিকদের তিনি বললেন, ‘নিউজিল্যান্ডে (ত্রিদেশীয় সিরিজে) প্রতি ম্যাচেই আমরা ৬ ওভারে ৪০ রান পেয়েছি। ওপেনিং নিয়ে দুর্ভাবনা আছে কেন মনে করছেন, এটাই বরং আমার প্রশ্ন। নিউজিল্যান্ডে প্রতিটি দলের জন্য প্রথম ৬ ওভারে ৪০ রান ছিল প্রায় পার স্কোর এবং বাংলাদেশ প্রতি ম্যাচেই সেটা করেছে। আপনারা তাই কেন মনে করছেন ওপেনিং নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে, এটাই আমার প্রশ্ন।’

ওপেনিংয়ের অদলবদল কৌশলের ব্যাখ্যায় আরেকটি তত্ত্ব সামনে এনেছেন শ্রীরাম, ‘বিশ্বজুড়ে তাকান, সব দলই ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে খুবই উন্মুক্ত। ফিঞ্চ চার নম্বরে ব্যাটিং করছে, ক্যামেরন গ্রিন ওপেন করছে। আমাদেরও নমনীয় হতে হবে। আমার মনে করি না, টি-টোয়েন্টিতে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাটিং অর্ডার আছে।

ম্যাচআপ নিয়ে ভাবতে হবে। যেমন—আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেললে মুজিবের বিপক্ষে দুজন বাঁহাতি রাখাই যাবে না (ওপেনিংয়ে), একজন ডান হাতি লাগবেই। স্বীকৃত ওপেনারের চেয়েও আরও অনেক বেশি গভীর ভাবনা চলছে এখানে। সেসব ভাবতে হবে।’

বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট গতকাল জানিয়েছেন, তাঁরা সেরা একাদশ পেয়ে গেছেন। তবে গতকাল দুপুর পর্যন্ত প্রথম রাউন্ড থেকে সুপার টুয়েলভে উঠে আসা দুই প্রতিপক্ষ যেহেতু নিশ্চিত ছিল না, দলের কৌশল নিয়ে না বললেও শ্রীরাম তাঁর লক্ষ্য পরিষ্কার করেছেন, ‘সম্ভব হলে পাঁচটি ম্যাচই জেতা! সব দল জিততেই মাঠে নামে। তবে আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে। ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে হবে। এখনো দুটি প্রতিপক্ষ আমরা জানি না, অপেক্ষা করছি জানতে।’

রাতে যখন নিজেদের বিশ্বকাপ অভিযানের প্রথম প্রতিপক্ষ হিসেবে নেদারল্যান্ডসের নাম নিশ্চিত হলো, একটু কি ‘স্বস্তি’ অনুভব করল বাংলাদেশ? অবশ্য টি-টোয়েন্টিতে কোনো প্রতিপক্ষকেই হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই, তা প্রথম পর্বের শুরুতেই দেখা গেল। তবে ডাচদের বিপক্ষে পরিসংখ্যান-শক্তিমত্তা বিবেচনায় বাংলাদেশ যে দারুণ শুরুর আশা করছে, রাতে দলের একাধিক সদস্যের বার্তায় সেটা পরিষ্কার। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত