Ajker Patrika

আসহাব উদ্দীন আহমদ

সম্পাদকীয়
আসহাব উদ্দীন আহমদ

আসহাব উদ্দীন আহমদ ছিলেন একাধারে শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, রম্যলেখক, ভাষাসৈনিক ও শিক্ষানুরাগী। তাঁর পারিবারিক নাম ছিল আসহাব মিয়া। তিনি ১৯১৪ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাধনপুর বাণীগ্রাম হাইস্কুল থেকে ১৯৩২ সালে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা, চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএ ও বিএ পাস করেন। এরপর ১৯৩৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

চট্টগ্রাম কলেজে শিক্ষকতার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। আপাদমস্তক নীতিমান এই ব্যক্তির পক্ষে বেশি দিন এ কলেজে চাকরি করা সম্ভব হয়নি। কলেজের অধ্যক্ষের অনিয়মের প্রতিবাদ করে চাকরি হারিয়ে তিনি ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে যোগ দেন।

ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যাপনা করার সময় এক সহকর্মীর মাধ্যমে তিনি মার্ক্সবাদী রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। তিনি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ইস্ট বেঙ্গল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপত্র ‘দি টিচার’ সম্পাদনা করেন।

১৯৫২ সালের পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং কলেজের অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালে ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বামপন্থী রাজনীতি করার কারণে পাকিস্তান আমলে এক বছর তিনি জেলে বন্দী ছিলেন। তাঁর নামে হুলিয়া জারি হয়। আট বছর আন্ডারগ্রাউন্ড জীবন কাটাতে হয় তাঁকে। পাকিস্তান সরকার তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে।

আসহাব উদ্দীন আহমদ ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখেন। শিক্ষা প্রসারেও ভূমিকা রেখেছেন তিনি। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান রয়েছে। একসময় রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। তিনি সামাজিক অনাচারের বিষয়গুলো ব্যঙ্গবিদ্রূপের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তাঁর বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২৫টি।

মানবদরদি এ মানুষটি ১৯৯৪ সালের ২৮ মে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত