Ajker Patrika

গ্রিগরি ক্রেস্ট

সম্পাদকীয়
গ্রিগরি ক্রেস্ট

যদি বলা হয়, লিয়েফ তলস্তয় ছিলেন আধুনিক রুশ সাহিত্যের জনক আলেক্সান্দর পুশকিনের আত্মীয়, তাহলে কেউ কি চমকে উঠবেন? বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। একজন মানুষ তাঁদের মধ্যে তৈরি করেছিলেন আত্মীয়তার সেতুবন্ধ—অ্যাডমিরাল ইভান মিখাইলোভিচ গালোভিন। তিনি ছিলেন জার পিটারের একজন সেনা অধিপতি। পুশকিনের প্রপিতামহী এবং তলস্তয়ের মায়ের প্রমাতামহী ছিলেন দুই আপন বোন। গালোভিনকে দিয়েই তাঁদের আত্মীয়তার শুরু।

সে যাই হোক, লিয়েভ তলস্তয়ের সব সময়ই ছিল পড়াশোনার প্রতি অনীহা। তলস্তয় সম্পর্কে তাঁর শিক্ষক মিখাইল পোপলোনস্কি বলেছিলেন, ‘ছেলেটা পড়াশোনা করতে চায়ও না, পারেও না।’ কাজান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পরিসংখ্যান আর স্ট্যাটিসটিকে ফেল করেছিলেন তলস্তয়। আর যে রুশ ভাষায় তাঁর এত দখল, সেই ভাষার পরীক্ষায় পেয়েছিলেন পাঁচের মধ্যে চার। ফেল করা দুই পরীক্ষা আবার দিয়ে পাস করার পর প্রাচ্য বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও অকৃতকার্য হয়ে ভর্তি হলেন আইন বিভাগে। এখানেও শিক্ষকেরা তাঁকে ‘চূড়ান্ত অলস’ বলে আখ্যা দিলেন। ছেলেটা নাকি ক্লাসরুমের সবচেয়ে ওপরের বেঞ্চিতে জায়গা করে নিয়ে শুধু ঝিমাত।

সেই ছেলেটার একটা অসাধারণ কীর্তির কথা কম শোনা যায়। বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা দানের সময় লিয়েফ তলস্তয় দুবার গ্রিগরির নামাঙ্কিত ক্রেস্ট লাভের সুযোগ পেয়েছিলেন। সামরিক বাহিনীতে বীরত্ব প্রদর্শনের প্রতীক হিসেবে এই ক্রেস্ট দেওয়া হয়। কিন্তু একবারও তিনি ক্রেস্ট পাননি। প্রথমবার ক্রেস্ট প্রাপকের নাম নিয়ে হাঙ্গামা বাধায় সেটা আর তাঁর হাতে আসেনি। দ্বিতীয়বার তিনি নিজে নেননি। বরং সেই ক্রেস্ট যেন সৈনিক আন্দ্রেয়েভ পান, তার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তলস্তয়। কেন এ রকম সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? কারণ আর কিছুই নয়, গ্রিগরি ক্রেস্ট পেয়েছেন বলে সৈনিক আন্দ্রেয়েভ আজীবন পেনশন পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। ‘আলসে’ ছেলেটি যে অমানবিক নয়, তারই একটা ছোট্ট প্রমাণ এই ঘটনাটি। 

সূত্র: ওবরাজোভাকা ডট রু

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত