Ajker Patrika

বাচ্চুকে না ধরেই অবৈধ সম্পদ খোঁজার উদ্যোগ

মারুফ কিবরিয়া, ঢাকা
বাচ্চুকে না ধরেই অবৈধ সম্পদ খোঁজার উদ্যোগ

বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ৫৯ মামলার ৫৮টিতেই আসামি করা হয়েছে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁকে আসামি করলেও গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই। অধরা থাকা অবস্থায়ই সাবেক এই সংসদ সদস্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদের খোঁজ নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে দুদক।

দুদকের একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কমিশনের এক সভায় আবদুল হাই বাচ্চু, তাঁর স্ত্রী, দুই সন্তান ও ছোট ভাইয়ের সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিশ জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও সেই চিঠি পাঠানো হয়নি।

সূত্রমতে, আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংক থেকে আত্মসাৎ করা টাকার একটি বড় অংশ দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ গড়েছেন। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এর সত্যতা মিলেছে। বৈধ আয়ের মাধ্যমে স্ত্রী-সন্তানসহ বাচ্চুর পক্ষে এসব সম্পদ অর্জন করা সম্ভব নয় বলে দুদক মনে করছে। সে কারণে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা বাচ্চু ও তাঁর পরিবারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করতে কমিশনের অনুমতি চান। কমিশনও তাতে সায় দিয়েছে।

এ বিষয়ে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সম্পদ বিবরণীর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইন ও বিধি মোতাবেক তা অভিযুক্ত ব্যক্তির বরাবর পাঠিয়ে থাকে দুদক। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

জানা যায়, বাচ্চু ছাড়া অন্য যাঁদের সম্পদের হিসাব চাওয়ার অনুমোদন মিলেছে, তাঁরা হলেন বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আক্তার, ছোট ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, দুই সন্তান শেখ রাফা হাই ও শেখ ছাবিদ হাই অনিক। নোটিশ জারি হলে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে তাঁদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে হবে।

শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, ‘দুদক থেকে এখনো কোনো নোটিশ আসেনি। আমার ক্লায়েন্টও পাননি।’ তবে ৫৮টি মামলায় আবদুল হাই বাচ্চুর আগাম জামিন চেয়ে আলাদা আবেদন করার তথ্য দিয়ে তিনি জানান, এসব আবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি আদালত।

বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ ১৪৫ টাকা টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় গত ১২ জুন বাচ্চুকে আসামি করে চার্জশিট দেয় দুদক। এর পর থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে আলোচনা ওঠে। বাচ্চুর বিদেশ গমন আটকাতে পুলিশের বিশেষ শাখায় (ইমিগ্রেশন) চিঠিও দিয়েছে দুদক। তখন দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাচ্চু দেশেই আছেন। তবে চার মাস কেটে গেলেও বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি দুদক।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত দুর্নীতির মামলায় অস্বাভাবিক দীর্ঘসূত্রতায় ইতিমধ্যে দুদকের কার্যকারিতা সম্পর্কে জনমনে আস্থার সংকট ঘনীভূত হয়েছে। তিনি বলেন, বিশেষ করে অভিযুক্ত ব্যক্তির রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, এই দীর্ঘসূত্রতা সক্ষমতার ঘাটতি, প্রক্রিয়াগত জটিলতা, নাকি সৎসাহস ও সদিচ্ছার অভাবের পরিচায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত