মৃত্যুঞ্জয় রায়
সম্প্রতি এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) ও ব্যান টক্সিকস ফিলিপাইনের এক যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে যে বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনে শিশুরা যেসব খেলনা নিয়ে খেলছে, সেগুলোতে রয়েছে অতিরিক্ত মাত্রায় সিসা, পারদ, বেরিয়াম, ক্যাডমিয়ামসহ বেশ কিছু ভারী ধাতু। গবেষণায় রিসাইকেল প্লাস্টিক থেকে তৈরি করা ১৬০টি খেলনা নমুনা পরীক্ষা করে এর প্রতিটি খেলনাতেই ক্ষতিকর এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে মাত্রাতিরিক্ত।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের ব্যবহৃত সাধারণ প্লাস্টিকের পানির কাপে ১ হাজার ৩৮০ পিপিএম সিসা, ২৪৭ পিপিএম আর্সেনিক ও ১ হাজার ৩৯০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। শিশুদের ব্যবহৃত স্টেশনারি ব্যাগে পাওয়া গেছে ৫৮০ পিপিএম সিসা, ১ হাজার ২৮০ পিপিএম বেরিয়াম, ৮৮ পিপিএম পারদ। পুতুল সেটে পাওয়া গেছে ১৬০ পিপিএম সিসা ও ১ হাজার ৫৫০ পিপিএম ক্রোমিয়াম। শিশুরা যেসব প্লাস্টিকের মগে পানি খায় সেসব মগে রয়েছে ২২০ পিপিএম সিসা, ৩১৫ পিপিএম ক্যাডমিয়াম ও ১ হাজার ৬৮০ পিপিএম ক্রোমিয়াম। শিশুদের শেখার জন্য প্লাস্টিকের তৈরি বর্ণমালা সেটের একটি অক্ষরে পাওয়া গেছে ৬৬০ পিপিএম সিসা।শিশুরা রোজই কাপে করে দুধ খাচ্ছে, মগে করে পানি খাচ্ছে, বর্ণমালার অক্ষর ও পুতুল নিয়ে খেলছে, ব্যাগ পিঠে ঝুলিয়ে স্কুলে যাচ্ছে।
ফলে রোজই আমাদের শিশুরা কোনো না কোনোভাবে এসব ভারী ধাতুর দূষণের শিকার হচ্ছে। বায়ুদূষণ হলে আমরা দেখি, শব্দদূষণ হলে আমরা শুনতে পাই, কিন্তু এই ধাতবদূষণ আমাদের কাছে অদৃশ্য। আমাদের চোখের আড়ালেই এসব ধাতবদূষণ শিশুদের এবং আমাদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। আমাদের সহ্যক্ষমতা শিশুদের চেয়ে বেশি। তাই আমরা হয়তো এর ক্ষতিকর প্রভাবটা অত বুঝতে পারি না।
বর্তমানে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশু সিসাদূষণের শিকার ও সিসা বিষক্রিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা ভাবতেও পারি না যে এ দেশে শুধু সিসাদূষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করছে প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ যা দেশের মৃত্যুর ৩.৬ শতাংশ। এসব ভারী ধাতু, বিশেষ করে সিসাদূষণে শিশুদের ক্ষতি হচ্ছে সবচেযে বেশি। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিশু সিসাদূষণের শিকার।
সিসার সংস্পর্শে এসে শিশুদের বৃদ্ধিবৃত্তির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে বাধা ধীরে ধীরে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করছে। আমাদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বৈকল্য বাড়ছে। এত অল্প বয়সে শিশুদের এরূপ দূষণের শিকার হওয়া আমাদের জন্য সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। শিশুদের জন্য আমরা যতটা উদ্বিগ্ন, ততটা কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রেও হওয়া উচিত। কেননা, সিসার সংস্পর্শে এসে বাংলাদেশে যে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষতি হয়, তাতে বাংলাদেশের জিডিপিতে ১৫.৯ বিলিয়ন ইউএস ডলারের ঘাটতি হয় বলে জানা গেছে।
এ দেশে শিশুদের খেলনা ও ব্যবহৃত সামগ্রী ছাড়া সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারির কারখানাগুলো সিসাদূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। পিওর আর্থ তাদের ‘টক্সিক সাইট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রাম’-এর আওতায় এ দেশে তিন শতাধিক পুরোনো ব্যবহৃত সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি কারখানার দূষিত স্থান খুঁজে পেয়েছে, যেখানে বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবে এ সংখ্যাটা ১ হাজার ১০০টির বেশি। এসব কারখানায় যাঁরা কাজ করেন তাঁরা সবচেয়ে বেশি সিসাদূষণের শিকার। দুঃখজনক হলো, তাঁরা যে সিসাদূষণের শিকার এবং তাতে যে তাঁদের স্বাস্থ্যগত ও মানসিক সমস্যা হচ্ছে তা তাঁদের অনেকেই জানে না বা তাঁরা এ বিষয়ে সচেতন নন। তাঁদেরও এ বিষয়ে সচেতন করা দরকার।
এ দেশের ফুটপাতে, খোলা বাজারে, অভিজাত বিপণি—যেখানেই হোক না কেন, শিশুদের খেলনা বিক্রি হচ্ছে দেদার, কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এসডো ও ব্যান টক্সিকের গবেষণা না হলে হয়তো আমরা এ ভয়াবহ তথ্যটাও জানতে পারতাম না। কোমলমতি শিশুদের বুদ্ধি ও দৈহিক বিকাশ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য প্রতিটি খেলনা আমদানি বা উৎপাদন পর্যায়ে এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতির মাত্রা পরীক্ষা- নিরীক্ষা করা উচিত। উপযুক্ত পরীক্ষার পর সহনীয় মাত্রা যদি থাকে তা অনুসরণ করে সেগুলো বাজারজাত করার অনুমতি দেওয়া উচিত।সে জন্য দরকার একটি বাস্তবসম্মত নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন এবং কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
সিসাদূষণের কারণে এ দেশে যে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত সংকট তৈরি হচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সিসা শুধু মানুষের জীবন না, এই অদৃশ্য শত্রু আমাদের পানি, মাটি ও খাদ্যচক্রকেও দূষিত করছে। এই সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সকল অংশীদার, উৎপাদক, ভুক্তভোগী, নীতিনির্ধারক মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে। সর্বোপরি অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে যেন যখন-তখন আমরা শিশুদের হাতে যেকোনো খেলনা তুলে না দিই। সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ দেশে শিশুদের জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি খেলনা ও সামগ্রী বাজারজাত করার আগে সেগুলোয় ভারী ধাতুর উপস্থিতির সহনীয় মাত্রা নির্ধারণ করে তা প্রতিটি খেলনার মোড়ক বা খেলনার গায়ে লেবেলের মাধ্যমে উল্লেখ করার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে সেসব সামগ্রী ও খেলনায় ঠিক কী পরিমাণে কোন ভারী ধাতু রয়েছে তাও পাশাপাশি লেখা উচিত। ক্রেতাদের সেসব তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। ক্রেতারা সেসব জেনে অন্তত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে সেগুলো তাঁরা তাঁদের শিশুদের হাতে তুলে দেবেন কি না।
দুর্ভাগ্য যে আমরা এখনো ঠিক জানি না কোন বয়সে কার জন্য সিসার নিরাপদ মাত্রা কত। গবেষণায় দেখা গেছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যেসব শিশু পুরোনো ব্যবহৃত সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানার কাছাকাছি থাকে, তাদের প্রতি ডেসিলিটার রক্তে সিসার গড় পরিমাণ ২৯ মাইক্রোগ্রাম। আমাদের দেশে এসব ঝুঁকিপূর্ণ কারখানাস্থলে বা তার আশপাশে থাকা লোকজনদের রক্তে কী পরিমাণ সিসা মিশেছে, তা আমরা জানি না। জানি না যেসব শিশু খেলনা নিয়ে রোজ খেলছে, চাটছে, গায়ে-পেটে ঘষছে, তাদের রক্তে কী পরিমাণ সিসা রয়েছে। এসব বিষয়েও গবেষণা হওয়া দরকার।
‘শিশুদের পণ্যে এ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি একটি জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই অদৃশ্য হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।’—মন্তব্য করেছেন এসডোর চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ। আমরাও এতে সহমত পোষণ করি।
কৃষিবিদ ও পরিবেশবিষয়ক লেখক
সম্প্রতি এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) ও ব্যান টক্সিকস ফিলিপাইনের এক যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে যে বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনে শিশুরা যেসব খেলনা নিয়ে খেলছে, সেগুলোতে রয়েছে অতিরিক্ত মাত্রায় সিসা, পারদ, বেরিয়াম, ক্যাডমিয়ামসহ বেশ কিছু ভারী ধাতু। গবেষণায় রিসাইকেল প্লাস্টিক থেকে তৈরি করা ১৬০টি খেলনা নমুনা পরীক্ষা করে এর প্রতিটি খেলনাতেই ক্ষতিকর এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে মাত্রাতিরিক্ত।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের ব্যবহৃত সাধারণ প্লাস্টিকের পানির কাপে ১ হাজার ৩৮০ পিপিএম সিসা, ২৪৭ পিপিএম আর্সেনিক ও ১ হাজার ৩৯০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। শিশুদের ব্যবহৃত স্টেশনারি ব্যাগে পাওয়া গেছে ৫৮০ পিপিএম সিসা, ১ হাজার ২৮০ পিপিএম বেরিয়াম, ৮৮ পিপিএম পারদ। পুতুল সেটে পাওয়া গেছে ১৬০ পিপিএম সিসা ও ১ হাজার ৫৫০ পিপিএম ক্রোমিয়াম। শিশুরা যেসব প্লাস্টিকের মগে পানি খায় সেসব মগে রয়েছে ২২০ পিপিএম সিসা, ৩১৫ পিপিএম ক্যাডমিয়াম ও ১ হাজার ৬৮০ পিপিএম ক্রোমিয়াম। শিশুদের শেখার জন্য প্লাস্টিকের তৈরি বর্ণমালা সেটের একটি অক্ষরে পাওয়া গেছে ৬৬০ পিপিএম সিসা।শিশুরা রোজই কাপে করে দুধ খাচ্ছে, মগে করে পানি খাচ্ছে, বর্ণমালার অক্ষর ও পুতুল নিয়ে খেলছে, ব্যাগ পিঠে ঝুলিয়ে স্কুলে যাচ্ছে।
ফলে রোজই আমাদের শিশুরা কোনো না কোনোভাবে এসব ভারী ধাতুর দূষণের শিকার হচ্ছে। বায়ুদূষণ হলে আমরা দেখি, শব্দদূষণ হলে আমরা শুনতে পাই, কিন্তু এই ধাতবদূষণ আমাদের কাছে অদৃশ্য। আমাদের চোখের আড়ালেই এসব ধাতবদূষণ শিশুদের এবং আমাদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। আমাদের সহ্যক্ষমতা শিশুদের চেয়ে বেশি। তাই আমরা হয়তো এর ক্ষতিকর প্রভাবটা অত বুঝতে পারি না।
বর্তমানে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশু সিসাদূষণের শিকার ও সিসা বিষক্রিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা ভাবতেও পারি না যে এ দেশে শুধু সিসাদূষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করছে প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ যা দেশের মৃত্যুর ৩.৬ শতাংশ। এসব ভারী ধাতু, বিশেষ করে সিসাদূষণে শিশুদের ক্ষতি হচ্ছে সবচেযে বেশি। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিশু সিসাদূষণের শিকার।
সিসার সংস্পর্শে এসে শিশুদের বৃদ্ধিবৃত্তির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে বাধা ধীরে ধীরে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করছে। আমাদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বৈকল্য বাড়ছে। এত অল্প বয়সে শিশুদের এরূপ দূষণের শিকার হওয়া আমাদের জন্য সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। শিশুদের জন্য আমরা যতটা উদ্বিগ্ন, ততটা কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রেও হওয়া উচিত। কেননা, সিসার সংস্পর্শে এসে বাংলাদেশে যে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষতি হয়, তাতে বাংলাদেশের জিডিপিতে ১৫.৯ বিলিয়ন ইউএস ডলারের ঘাটতি হয় বলে জানা গেছে।
এ দেশে শিশুদের খেলনা ও ব্যবহৃত সামগ্রী ছাড়া সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারির কারখানাগুলো সিসাদূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। পিওর আর্থ তাদের ‘টক্সিক সাইট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রাম’-এর আওতায় এ দেশে তিন শতাধিক পুরোনো ব্যবহৃত সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি কারখানার দূষিত স্থান খুঁজে পেয়েছে, যেখানে বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবে এ সংখ্যাটা ১ হাজার ১০০টির বেশি। এসব কারখানায় যাঁরা কাজ করেন তাঁরা সবচেয়ে বেশি সিসাদূষণের শিকার। দুঃখজনক হলো, তাঁরা যে সিসাদূষণের শিকার এবং তাতে যে তাঁদের স্বাস্থ্যগত ও মানসিক সমস্যা হচ্ছে তা তাঁদের অনেকেই জানে না বা তাঁরা এ বিষয়ে সচেতন নন। তাঁদেরও এ বিষয়ে সচেতন করা দরকার।
এ দেশের ফুটপাতে, খোলা বাজারে, অভিজাত বিপণি—যেখানেই হোক না কেন, শিশুদের খেলনা বিক্রি হচ্ছে দেদার, কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এসডো ও ব্যান টক্সিকের গবেষণা না হলে হয়তো আমরা এ ভয়াবহ তথ্যটাও জানতে পারতাম না। কোমলমতি শিশুদের বুদ্ধি ও দৈহিক বিকাশ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য প্রতিটি খেলনা আমদানি বা উৎপাদন পর্যায়ে এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতির মাত্রা পরীক্ষা- নিরীক্ষা করা উচিত। উপযুক্ত পরীক্ষার পর সহনীয় মাত্রা যদি থাকে তা অনুসরণ করে সেগুলো বাজারজাত করার অনুমতি দেওয়া উচিত।সে জন্য দরকার একটি বাস্তবসম্মত নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন এবং কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
সিসাদূষণের কারণে এ দেশে যে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত সংকট তৈরি হচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সিসা শুধু মানুষের জীবন না, এই অদৃশ্য শত্রু আমাদের পানি, মাটি ও খাদ্যচক্রকেও দূষিত করছে। এই সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সকল অংশীদার, উৎপাদক, ভুক্তভোগী, নীতিনির্ধারক মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে। সর্বোপরি অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে যেন যখন-তখন আমরা শিশুদের হাতে যেকোনো খেলনা তুলে না দিই। সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ দেশে শিশুদের জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি খেলনা ও সামগ্রী বাজারজাত করার আগে সেগুলোয় ভারী ধাতুর উপস্থিতির সহনীয় মাত্রা নির্ধারণ করে তা প্রতিটি খেলনার মোড়ক বা খেলনার গায়ে লেবেলের মাধ্যমে উল্লেখ করার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে সেসব সামগ্রী ও খেলনায় ঠিক কী পরিমাণে কোন ভারী ধাতু রয়েছে তাও পাশাপাশি লেখা উচিত। ক্রেতাদের সেসব তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। ক্রেতারা সেসব জেনে অন্তত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে সেগুলো তাঁরা তাঁদের শিশুদের হাতে তুলে দেবেন কি না।
দুর্ভাগ্য যে আমরা এখনো ঠিক জানি না কোন বয়সে কার জন্য সিসার নিরাপদ মাত্রা কত। গবেষণায় দেখা গেছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যেসব শিশু পুরোনো ব্যবহৃত সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানার কাছাকাছি থাকে, তাদের প্রতি ডেসিলিটার রক্তে সিসার গড় পরিমাণ ২৯ মাইক্রোগ্রাম। আমাদের দেশে এসব ঝুঁকিপূর্ণ কারখানাস্থলে বা তার আশপাশে থাকা লোকজনদের রক্তে কী পরিমাণ সিসা মিশেছে, তা আমরা জানি না। জানি না যেসব শিশু খেলনা নিয়ে রোজ খেলছে, চাটছে, গায়ে-পেটে ঘষছে, তাদের রক্তে কী পরিমাণ সিসা রয়েছে। এসব বিষয়েও গবেষণা হওয়া দরকার।
‘শিশুদের পণ্যে এ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি একটি জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই অদৃশ্য হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।’—মন্তব্য করেছেন এসডোর চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ। আমরাও এতে সহমত পোষণ করি।
কৃষিবিদ ও পরিবেশবিষয়ক লেখক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪