Ajker Patrika

ফান কিংবা গিমিক নয়

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৬ মে ২০২২, ১০: ১৯
ফান কিংবা গিমিক নয়

মুর্তজা বশীর নিজেকে বলতেন সিরিয়াস আর্টিস্ট। তাঁর কাজে ফান কিংবা গিমিক নেই। একবার বলেছিলেন, ‘আমি যদি একটা ব্ল্যাঙ্ক ক্যানভাসে সই করে দিই, জানো, সেটা বিক্রি হয়ে যাবে। লোকে ভাববে এখানে নিশ্চয়ই এমন কিছু আছে যা আমরা বুঝি না।’

সে কথা প্রতিষ্ঠিত করতে জীবনের একটা গল্প বলেছিলেন তিনি।

১৯৮১ সালে একবার মুর্তজা বশীর ১ ফুট বাই ১ ফুট সাইজের ক্যানভাস দিয়ে ৮ ফুট বাই ৫ ফুট একটা কাজ করলেন। চল্লিশটা ক্যানভাস জোড়া দিয়ে কাজটা হয়েছিল। এর নাম ছিল ‘ইনুজল’। প্রদর্শনীর জন্য যখন প্যাকিং করছেন, তখন তাঁর ছেলের বয়স তিন বছর। লোডশেডিং চলছিল। ছেলেটা ঘুরঘুর করছিল পাশে। মুর্তজা বশীর বললেন, ‘জামি, এখানে অনেক পেরেক, তুমি যাও।’

কিন্তু ছেলে তো সরে না। সত্যিই তো পেরেক ফুটে যেতে পারে ওর পায়ে!

তিনি তাঁর স্ত্রীকে ডেকে বললেন, ‘ওকে নিয়ে যাও।’

কিন্তু ওকে নিয়ে যাওয়া হলো না। তাতে রাগ বেড়ে গেল শিল্পীর। তিনি হাতুড়িটা নিয়ে মারতে গেলেন ছেলেকে। কিন্তু ছেলেকে না মেরে আঘাত করলেন ক্যানভাসে। তাতে চার-পাঁচটা ক্যানভাস ভেঙে গেল। এই কাণ্ড ঘটানোর পর রাগ একটু কমল।

কিন্তু এরপর পড়লেন বিপদে। প্রদর্শনীর ক্যানভাসে তো চলে গেছে কাজটা। ভাঙা ক্যানভাসগুলোও তো থাকতে হবে প্রদর্শনীতে। তখন তিনি স্ত্রীকে বললেন, ‘তোমার কাছে উল আছে?’

পাওয়া গেল উল। উল এবং একধরনের লাল-সাদা যে সুতো আছে, তা দিয়ে সেলাই করলেন ক্যানভাসগুলো। প্রদর্শনীতে অন্য ক্যানভাসগুলোর সঙ্গে উল-সুতোর ক্যানভাসগুলোও থাকল।

পরদিন পত্রিকায় লেখা হলো, ‘এটা হলো এমন কিছু, যেটা আমরা বুঝতে পারছি না।’

মুর্তজা বশীরের এ কাজটি কিনে নিয়েছিল শিল্পকলা একাডেমি।

সূত্র: জাহীদ রেজা নূর, চোখের আলোয় ২, পৃষ্ঠা ১১৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চোখের জলে বিদায় সাংবাদিক বিভুরঞ্জনকে

ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে সব বলে দেব: উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান

বুড়িগঙ্গা থেকে তরুণ-তরুণীর হাত বাঁধা লাশ উদ্ধার

অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকালে বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকের দাবি বিএসএফের

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত