Ajker Patrika

আখড়াবাড়িতে সাধুর হাট মুখরিত মরমি গানে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আখড়াবাড়িতে সাধুর হাট মুখরিত মরমি গানে

কুষ্টিয়ায় তিন দিনব্যাপী ১৩২তম ‘লালন স্মরণোৎসব’ জমে উঠেছে। বাউলদের মরমি গানে ভবের হাট মুখরিত। একতারা, দোতারা আরা ডুগি তবলার তালে লালনের বাণী ভক্তদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সাধুরা।

এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’। সেই সোনার মানুষ হতে এবং গুরুর পদধূলি নিতে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছে ছেঁউড়িয়ার এই আখড়াবাড়িতে।

বাউল সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের আখড়াবাড়িতে বসেছে সাধুর হাট। গুরু কার্যের মধ্য দিয়ে বাউলদের সাধু সংঘের মূল আনুষ্ঠানিকতাসহ মূল মঞ্চে উদ্বোধন করা হয়েছে তিন দিনের স্মরণোৎসব। তাই সাঁইজির বারামখানায় দলে দলে উপস্থিত হচ্ছেন দেশে-বিদেশ থেকে আসা অসংখ্য বাউল এবং লালন ভক্ত-অনুসারীরা।

কীভাবে সোনার মানুষ হওয়া যায়, কীভাবে গুরুর নৈকট্য লাভ করা যায়, সেই বুঝ নিতে গুরুভক্তিতে মগ্ন বাউল। বাউল সাধকেরা মনে করেন, লালনের মর্মবাণী বোঝা কঠিন। তাই এই বাণী বুঝতে এবং ধারণ করতে হলে একজন গুরুর সান্নিধ্যে আসা প্রয়োজন। মানুষ মানুষে ভজন সাধনেই প্রকৃত ধর্ম।

লালনের টানে জার্মান থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় এসেছেন মার্টিয়াস লুইস। তিনি বলেন, ‘এটা আসলেই একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা, যা আমি জীবনে দেখিনি। আমার খুব ভালো লাগছে এটা দেখে যে, এখানে দেশ-বিদেশ থেকে এত মানুষ আসার পরও কোনো হানাহানি নেই। এখানকার পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

এ যেন এক ভিন্ন জগৎ। সাধু-গুরুরা মনে করেন, একমাত্র মানব ধর্মের মাধ্যমেই সমাজ থেকে লোভ, হিংসা, হানাহানি দূর করা সম্ভব। 
লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে কালী নদীর তীরে বিশাল মাঠে বসেছে লালন মেলা। আর আখড়াবাড়ির ভেতরে ও বাইরে লালন অনুসারী, ভক্তদের খণ্ড খণ্ড সাধু আস্তানায় চলছে একের পর এক লালনের আধ্যাত্মিক গান। আর তাতে মজেছেন তাঁর অনুসারীরা।

বিশাল এ আয়োজনকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য পুরো এলাকাজুড়ে সিসি ক্যামেরাসহ রাখা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনী। প্রতি বছর দুইবার অনুষ্ঠিত হওয়া এ লালন স্মরণোৎসবে গুরু-শিষ্যের ভাব আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে লালন ফকিরের দর্শন।

জানতে চাইলে লালন গবেষক ফকির এনাম সাঁই বলেন, লালন এখন আর শুধু বাংলাদেশের নন। লালন এখন সারা বিশ্বের গবেষণার বিষয়। তাই তো দেশ-বিদেশের শত শত ভক্ত-অনুসারী লালন প্রেমে মগ্ন হয়ে তাঁকে স্মরণ করতে এই আখড়াবাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন। তবে এখানে এসে ঘুরে গেলেই হবে না। লালনের এই মানবধর্ম বুকে ধারণ করতে হবে এবং তা মানতে হবে। তা হলেই সমাজ থেকে হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ নির্মূল হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত