Ajker Patrika

আড়তে খিরা না বেচায় কৃষককে মারধর

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ১৪
আড়তে খিরা না বেচায় কৃষককে মারধর

প্রায় ৩২ শতাংশ জমিতে খিরা চাষ করেছিলেন কৃষক স্বপন সরদার। ফলনও হয়েছে ভালো। আশা করেছিলেন ভালো দাম পাবেন। কিন্তু নিজের ইচ্ছামতো খিরা বেচতে না পারায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত তিনি। নির্দিষ্ট একটি আড়তে বেচতে না যাওয়ায় লুটে নেওয়া হয়েছে তাঁর খিরার বস্তা। পুলিশে অভিযোগ করায় আড়তের লোকজন তাঁকে মারধরও করেছে।

শুধু স্বপন নন, একই অবস্থা ওই এলাকার খিরা চাষি সিরাজ মাঝি, মানিক ছৈয়াল, কাশেম বেপারী, মোহন হাওলাদার, গণি মাঝি, খোরশেদ প্রামাণিকসহ অনেকের।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা বাজার এলাকার চিত্র এটি। এসব কারণে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে এলাকার কৃষকদের মাঝে। গত মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিন গেলে এমন তথ্যই মিলেছে। ভীতসন্ত্রস্ত চাষিরা আবারও হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কায় সাংবাদিকদের সঙ্গেও প্রকাশ্যে কথা বলতে কেউ কেউ অনীহা দেখিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেঘনা বাজার এলাকায় দুটি খিরা বেচা-কেনার আড়ত রয়েছে। একটির মালিক সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খালেদ হোসেন দেওয়ান। অপরটির মালিক মোহন হাওলাদার, সবুজ মাঝি, জয়নাল আবেদীন দেওয়ান, মোস্তফা জিরাতি, সোহেল সরদার, বাদশা মাঝি, হান্নানসহ ১০-১২ জন। তাঁরা সবাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন হাওলাদার সমর্থক। তাঁদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে খালেদ দেওয়ানের বিরোধ চলছে। দুটি পক্ষই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাষিরা জানান, তাঁরা খেতের খিরা বস্তায় ভরে বাজারে বা খালেদ দেওয়ানের আড়তে বেচতে নিতে গেলেই বাধা দেওয়া হয়। এ খিরা অন্য বাজার বা কোথাও নিতে দিচ্ছেন না তাঁরা। দুদিন আগে অন্তত ৫০ বস্তা খিরা তাঁরা জোর করে নিজেদের আড়তে নিয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষকেরা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলে পুলিশ এসে তা উদ্ধার করে। পরদিন অভিযোগকারী স্বপন সরদার, মানিক ছৈয়াল ও সিরাজ মাঝিকে তাঁরা মারধর করে।

উত্তর চরবংশী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও আড়তদার খালেদ হোসেন দেওয়ান বলেন, ‘প্রভাবশালী নেতাদের লোকজন তিন বছর ধরে আমাদের জমির চাষিদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। এভাবে আতঙ্ক ছড়ালে ভবিষ্যতে কৃষকেরা হয়তো খিরা চাষ থেকে বিরত থাকবেন। তাঁদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

তবে আড়তদার জয়নাল আবেদীন ও মোহন হাওলাদার দাবি করেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়।

উত্তর চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। এ ধরনের ঘটনা কোনো পক্ষ থেকেই আমাকে জানানো হয়নি।’

হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ইউসুফ বলেন, ‘খিরার বস্তা নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানার পর পুলিশ পাঠিয়ে তা কৃষকদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মারধর বা হুমকির বিষয়টি কেউ আমাদের জানায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর সহজ উপায় জানালেন বিজ্ঞানীরা

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত