Ajker Patrika

রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করতে হবে

নাদিম নেওয়াজ
রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করতে হবে

আজকের পত্রিকা: আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার কী অবস্থা?
ড. মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া: আপনি জানেন যে বিশ্বব্যাপী একটা খাদ্যসংকট তৈরি হয়েছে। আমাদের দেশে একটা বাড়তি সংকট তৈরি হয়েছে কারণ আমরা অনেক পণ্যের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। চাল বাদে বেশির ভাগ পণ্যের ওপরই আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। তার মধ্যে অন্যতম গম। গমের জন্য আমরা ইউক্রেন-রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আমাদের জন্য তৃতীয় বাজার হতে পারে ভারত। 

আজকের পত্রিকা: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কী কী প্রভাব পড়ছে?
ড. মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ বছর আচমকা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জে আমাদের ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এরপর ঘূর্ণিঝড়ে দক্ষিণাঞ্চলের ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অবশ্য ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব আমরা এখনও পাইনি। কাজেই সঠিক হিসাব দিতে না পারলেও ধারণা করছি বেশ ভালোই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার আমাদের চালের ওপর যথেষ্ট একটা চাপ পড়বে। ইতিমধ্যে আমাদের গোডাউনে স্বাভাবিকের থেকেচাল-গমের পরিমাণ কমে গেছে। সরকারিভাবে দ্রুত চালের ব্যবস্থা করতে হবে। সেটা ভারত, মিয়ানমার বা ফিলিপাইন থেকে হোক। সামনে গমের পাশাপাশি চালও আমদানি করতে হবে। আমাদের সামনে আর উপায় নেই, খাদ্য আমদানি করতেই হবে। দুইটা বড় ধানের মৌসুম আমাদের ধাক্কা খেয়েছে। আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

আজকের পত্রিকা: ঋণের বিপরীতে আইএমএফের শর্ত কীভাবে দেখছেন?
ড. মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া: আমাদের রিজার্ভের অবস্থা এমনিতেই খারাপ। এ অবস্থায় রিজার্ভ যদি না বাড়ে, রপ্তানি আয় না আসে আর রেমিট্যান্সও যদি দিন দিন কমতে থাকে, তাহলে আমদানি ব্যয় মেটানো কষ্টকর হয়ে যাবে। তখন আমরা যাব কোথায়? তখন আমাদের তৃতীয় অপশন হলো বিদেশি দাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেওয়া। সে ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এসব সংস্থার দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। আইএমএফ ব্যাংক রেটকে বাজারদরের ওপর ছেড়ে দিতে বলেছে। আমাদের দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের প্রায় সবাই বলেছেন এটা পজেটিভ হবে। মূল্যস্ফীতি যখন বেশি, তখন এটা চাপিয়ে রাখা ঠিক হবে না। আমাদের রিজার্ভের হিসাব সঠিকভাবে করতে বলেছে আইএমএফ। আমাদের কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। তারা যেটা বলেছে তা যৌক্তিক। 

আজকের পত্রিকা: রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ কী? 
ড. মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া: পোশাকশিল্পে যে পরিমাণ রপ্তানি হচ্ছে সেই পরিমাণ ডলার কেন আসছে না এটা খুঁজে বের করতে হবে। দাম কমে গেছে, না এর পেছনে অন্য কারণ আছে সেটা দেখতে হবে। আরেকটা ব্যাপার দেখলাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স আসছে না। সে ক্ষেত্রে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। রেমিট্যান্স পাঠানোর পদ্ধতি সহজ করতে হবে। আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মতো বিকল্প চিন্তা করতে হবে। প্রণোদনা আরও বাড়ানো যায় কি না সেটাও ভেবে দেখা দরকার, যাতে ডলার অবৈধ হুন্ডিতে না পাঠিয়ে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাতে উৎসাহী হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত