Ajker Patrika

জাল-জলায় অধিকার প্রতিষ্ঠা চান জেলেরা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ৩০
জাল-জলায় অধিকার প্রতিষ্ঠা চান জেলেরা

গাইবান্ধার সাত উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী ও বিল-জলাশয় এখানকার ভূমি গঠন, কৃষি উৎপাদন ও মৎস্যসম্পদে বড় ভূমিকা রাখছে। এগুলো ঘিরে গড়ে উঠেছে জেলেদের জীবনব্যবস্থা। কিন্তু এখন একে একে জলমহালগুলো চলে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের হাতে। ফলে নিজ পেশা হারিয়ে জেলেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঋণ, ধার-দেনা ও দাদনের জালে আটকে থাকা এসব মৎস্যজীবী জাল ও জলার ওপর তাদের পূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠা চান।

এ জন্য ‘নব্য জলমহাল নীতিমালা’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির জেলা সভাপতি উপেন্দ্রনাথ দাস বলেন, জেলেদের সক্ষমতা বাড়াতে তাঁদের বিনা সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। সরাসরি জেলেদের বন্দোবস্ত দিতে হবে জলমহাল। একই সঙ্গে কমাতে হবে লিজ মানিও। সর্বোপরি জাল ও জলার ওপর প্রকৃত মৎস্যজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারকে টেকসই উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নীতিমালায় জেলেদের অধিকার সংরক্ষণের ধারা বাস্তবে প্রয়োগ হচ্ছে না। প্রকৃত মৎস্যজীবী নয়, প্রভাবশালীরাই লিজ নিচ্ছেন জলমহাল।

এদিকে জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা নদীতে দিন–রাত মাছ ধরে ঘাটে বিক্রি করেন। ১৫ শতাংশ সুদ হিসেবে দরিদ্র জেলেরা জাল, নৌকা ও অন্যান্য উপকরণ কেনার জন্য আড়তদারের কাছ থেকে ঋণ বা দাদন নেন। সেই টাকার ১৫ শতাংশ সুদ হিসেবে দাদন ব্যবসায়ীদের দিতে হয়।

সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়ন মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাবু মিয়া বলেন, ‘আড়তদারেরা প্রথমে মাছ, এরপর নগদ টাকা কেটে নেন। এভাবে মাছ বিক্রির অর্ধেক টাকা তাঁদের পকেটে চলে যায়।’

জানা যায়, ২০০৯ সালের সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী, প্রকৃত মৎস্যজীবীদের নিবন্ধিত সমিতিগুলোই জলমহাল ইজারায় অংশ নিতে পারবে। তাদের নামেই ইজারা-সংক্রান্ত বন্দোবস্ত দেওয়া হবে। এ ছাড়া যিনি প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছ ধরে ও বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তিনিই প্রকৃত মৎস্যজীবী বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ১৮ হাজারের অধিক নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। নিবন্ধিত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সংখ্যাও ৯২টি। জেলায় ৩৪৯ দশমিক ১০ হেক্টর আয়তনের ৪২টি খাল, ৭ হাজার ৭৮৬ হেক্টরের প্রধান ৬টি নদী, ৯৭৮ হেক্টর আয়তনের ১১০টি সরকারি বিল এবং ১৮৬ দশমিক ১২ হেক্টর আয়তনের ৩৩১টি পুকুর রয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আযম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা ও মৎস্যজীবী প্রতিনিধির সমন্বয়ে রয়েছে জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি।

সরকারি আইন ও নিয়ম মেনে প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে জলমহালগুলো ইজারা দেওয়া হয়। পরে জলমহালগুলো কীভাবে পরিচালিত হয় তা এখতিয়ারের বাইরে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত