Ajker Patrika

আগুন কাড়ল এতিমের আশ্রয়

গঙ্গাচড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৭: ৩৯
আগুন কাড়ল এতিমের আশ্রয়

গঙ্গাচড়ায় আগুন লেগে একটি এতিমখানা ও বসতবাড়ি পুড়ে গেছে। গতকাল বুধবার ভোরে উপজেলার আলবিদিতর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ী বাজারের ছাপিয়োন নেছা মহিলা হাফিজিয়া এতিমখানায় এ আগুন লাগে।

এতিমখানাটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম। তিনি সফিয়ার পীর সাহেব হিসেবে পরিচিত। তিনি নিজের বাড়িতে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

প্রধান শিক্ষকের ছেলে সোয়াইবুর বলে, ‘ভোর ৫টার দিকে নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে দেখি এতিমখানার সিলিং ফ্যানে আগুন লেগেছে। আগুন দেখে বাবাকে ডাক দিলে তিনি দৌড়ে এসে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেন। পরে আমাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা দৌড়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে এতিমখানা ও আমাদের বাড়ির সবকিছু পুড়ে যায়।’

এতিমখানায় থাকা জান্নাতি বলে, ‘আমরা ওই সময় ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি ঘরে আগুন। চোখের সামনে সবকিছু পুড়ে গেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। আমাদের পড়ার কিতাব, জামা-কাপড় সবকিছু পুড়ে গেছে।’

গতকাল সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, এতিমখানাটির পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের পুড়ে যাওয়া বই হাতে নিয়ে বিলাপ করছিলেন প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী মাকামাম মাহমুদা। তিনি বলেন, ‘এখন কী হবে এই এতিম বাচ্চাদের? তারা কোথায় থাকবে, তারা খাবে কী?’

গঙ্গাচড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার মোজাম্মেল হক জানান, তাঁরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থানে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি তিস্তা নদীতে ৯ বার বসতবাড়ি হারিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় এই মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি খুলেছিলেন। এখন বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় কিছুই রইল না। অগ্নিকাণ্ডে নগদ ৬ লাখ টাকাসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, তারা যেন আমার এই প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনার জন্য কিছু সাহায্য করে।’

এ বিষয়ে আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন সুজন বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। পরিষদের পক্ষ থেকে আরও কিছু সহযোগিতা করা হবে।’

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হক বলেন, ‘এতিমখানায় আগুন লাগার বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থান পরিদর্শন করে ইউএনওকে জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত