Ajker Patrika

মহারণে দুই মহাতারকার অন্য হিসাব

ইলিয়াস কমল, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪: ২১
মহারণে দুই মহাতারকার অন্য হিসাব

দুটি পথ এসে মিশেছে যেন আরও বড় এক পথের প্রান্তে। কাতারে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে সেই দুই পথ আসলে লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পের। দুই মহাতারকার নিজেদের রাঙানোর সঙ্গে ইতিহাসেও স্থান করে নেওয়ার এই সুযোগে আজ একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী।

দিন শেষে দুজনই থাকতে চাইবেন উৎসবের কেন্দ্রে। আর সেই উৎসবটা হবে বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। যেটির জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষায় থাকে ফুটবলমোদীরা।

দুই তারকার লড়াইয়ে নিজেদের অবস্থানে প্রেক্ষাপট যেন একেবারেই আলাদা। একজন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে। যিনি ফাইনালে ওঠার পরই জানিয়ে দিয়েছেন, এটিই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডায় হতে যাওয়া ২০২৬ বিশ্বকাপে আসলে তাঁর বয়সই থাকবে না সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবল খেলার। আরেকজন বয়স ও ফুটবল সামর্থ্যে একেবারেই মধ্যগগনে। যেন তাঁরই সময় এখন, নিজের সময় নিজে রাঙাবেন যেভাবে খুশি। সেই বার্তা দেওয়ার মতো আরেকটা মঞ্চ হয়ে এসেছে বিশ্বকাপ ফুটবলের এই ফাইনাল।

একই ক্লাবের দুই বড় তারকা আগেও বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছেন। তবে তাঁদের তারকাখ্যাতি মেসি-এমবাপ্পের মতো এতটা ছিল না। বিশ্বমঞ্চের সেরা দুই তারকা যখন ক্লাব সতীর্থ এবং তারা বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি, সেটি বিশ্বকাপ ইতিহাসেই অনন্য ঘটনা।বিশ্বকাপকে সফল করতে তাঁদের চেয়ে বড় দুই তারকাকে ফাইনালে আর আনা যেত কি না সন্দেহ! দুই তারকার আর তাঁদের জাতীয় দলের ফাইনাল হবে আয়োজক কাতারের জাতীয় দিবসে। একটি সত্যিকারের উৎসবের জন্য যত আয়োজন প্রয়োজন ছিল, সবটাই মিলেমিশে একাকার মেসি-এমবাপ্পের ফাইনালে।

ফাইনালের আগে দোহার সব জায়গায় ছড়িয়ে আছেন মেসি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফুটবলের সঙ্গে যে যোগসূত্র মেসির, সেসব জায়গায় ফরাসি তারকা এমবাপ্পে বেশ পিছিয়েই। একজনের সামনে বিশ্বকাপ জয় দিয়ে নিজেকে পৃথিবীর সেরা ফুটবলারের তর্কে ইতি টানার সুযোগ, আরেকজন ২৩ বছর বয়সেই বিশ্বকাপের কিংবদন্তি হওয়ার পথে। কাতারের এই ফাইনাল দুই সতীর্থকে এমনই এক পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ক্লাব ফুটবলে যেখানে একজনের বাড়ানো বল থেকে আরেকজন গোল করেন, আজ তাঁরা একে অপরের ঘোর প্রতিদ্বন্দ্বী।

ফুটবল বিশ্বকাপ সম্পর্কিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মেসি-এমবাপ্পে যিনিই জিতুন ট্রফি, দুই বিশ্বসেরা তারকার লড়াই আধুনিক ফুটবলেরই সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে থাকছে নিশ্চিত। দুই ক্লাব সতীর্থ মেসি-এমবাপ্পে প্রসঙ্গে তাঁদেরই আরেক সতীর্থ অ্যান্ডার হ্যারেরার মন্তব্য এখানে বেশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। হ্যারেরা বলেছিলেন, ‘কিলিয়ান বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে আরও অনেক বছর খেলবে। কিন্তু আমরা সবাই একমত যে মেসিই ১ নম্বর। কোনো সন্দেহ নেই।’ মেসির মতো তারকার সংস্পর্শে থেকে আরও অনেক কিছু শেখার ইচ্ছে ও সুযোগ রয়েছে এমবাপ্পের। সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন হ্যারেরা, ‘লিওর কাছ থেকে শেখার দারুণ ইচ্ছা রয়েছে এমবাপ্পের।’

নিজের সব অর্জনকে পূর্ণতা দিতে এমবাপ্পেকে সময়ের সঙ্গে দৌড়াতে হচ্ছে না। ক্যারিয়ারের শুরুতেই যেমন বিশ্বকাপ জিতেছেন, আজ না হলে সামনে হয়তো আরও সুযোগ আসতে পারে। কিন্তু মেসি দাঁড়িয়ে সময়ের সীমায়, তাঁর আজ না হলে আর নয়। এটা ঠিক, মেসি এই বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও তিনি কিংবদন্তির মর্যাদা পাবেন। কিন্তু ওই কথাটা শুনতে হতে পারে তাঁকে—আর্জেন্টিনা ফুটবলে অনেক লিজেন্ড, কিন্তু ঈশ্বর একজনই—ডিয়েগো ম্যারাডোনা। মেসি লিজেন্ডের কাতারে থাকবেন নাকি ম্যারাডোনার পাশে বসবেন, আজ সেই উত্তর জানার দিন। 

বিশ্বকাপ ফুটবল সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত