Ajker Patrika

পীরগাছার ফলের প্রভাব মিঠাপুকুরে

মিঠাপুকুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ৩৭
পীরগাছার ফলের প্রভাব মিঠাপুকুরে

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পীরগাছায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দুর্বল ফলের প্রভাব পড়েছে মিঠাপুকুরে। উপজেলায় ভোট সামনে রেখে আরও চাঙা হয়ে উঠেছেন বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীরা।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির আসন পীরগাছায় গত ১১ নভেম্বর আট ইউপি নির্বাচনের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি (জাপা) পায় একটি। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনটিতে বিএনপি এবং একটিতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা জয়ী হন।

এই সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মিঠাপুকুরে জামায়াতের নেতারা তিন থেকে পাঁচটি ইউনিয়নে প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।

আর আওয়ামী লীগের জন্য মিঠাপুকুরে সবচেয়ে বড় বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে দলীয় কোন্দল। নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করছে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ। ইতিমধ্যে স্থানীয় সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান সমর্থিত গ্রুপের পক্ষে আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাংসদ পুত্র এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্য রাশেক রহমান। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার সমর্থিত গ্রুপও পছন্দের প্রার্থীদের তালিকা করছে।

মিঠাপুকুরের ১৭ ইউপি নির্বাচনের জন্য এখনো তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। এই উপজেলায় পঞ্চম ধাপে নির্বাচন হতে পারে। তবে তফসিল ঘোষণার আগেই জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

গত ১১ নভেম্বরের আগ পর্যন্ত উপজেলায় শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান ও মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের তোড়জোড় ছিল। তবে ওই দিনের নির্বাচনে পীরগাছায় সফলতা পেয়ে এখন বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোবলও চাঙা হয়ে উঠেছে। নীরব নেতা-কর্মীরা সরব হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে একাধিক মামলায় কাতর জামায়াতের নেতা-কর্মীরাও নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছেন। পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউপিতে জামায়াতের প্রার্থী বজলুর রশিদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তাঁদের মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রংপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। যেভাবে নির্বাচন হচ্ছে, এইভাবে নির্বাচন হলে এতে অংশগ্রহণ করা হবে। মিঠাপুকুরে কমপক্ষে তিনটি ইউনিয়নে জামায়াতের প্রার্থী থাকবে।’

এদিকে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছেন। ইতিমধ্যে মির্জাপুর ইউনিয়নে জাপার গোলাম আজম মিলন, পায়রাবন্দে রেজাউল করিম ও কাফ্রিখালে হাফিজার রহমান জনসংযোগে নেমেছেন।

বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান জানান, তাঁরা প্রার্থী বাছাই করছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে কয়েকটি ইউনিয়নে বিএনপির নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। সব মিলিয়ে মিঠাপুকুরে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে বলে স্থানীয় নেতাদের ধারণা।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে যে দলীয় কোন্দল ও একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে আগ্রহ প্রকাশ করায় দল থেকে কাউকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে না। নির্বাচন হবে উন্মুক্ত।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির গ্রুপের নেতা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিরঞ্জন চন্দ্র মহন্ত জানান, তাঁরা জনপ্রিয় ত্যাগী নেতা-কর্মীদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করবেন। ইতিমধ্যে আগ্রহীদের আবেদন জমা নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

আরেক গ্রুপের নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ মেসবাহুর রহমান প্রধান জানান, সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান আমেরিকায় আছেন। আগামী ২২ নভেম্বর তাঁর দেশে আসার কথা রয়েছে। তিনি দেশে আসলেই আলোচনার মাধ্যমে যোগ্য এবং জনসমর্থন আছে এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।

যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ আহমদ বলেন, ‘মিঠাপুকুর উপজেলা নিয়ে সমস্যায় আছি। তবে সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করেই সবার গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত