Ajker Patrika

ঝুঁকিতে সিলগালা তবুও ব্যবহার

অরূপ রায়, সাভার থেকে
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২১, ২৩: ৩২
ঝুঁকিতে সিলগালা তবুও ব্যবহার

ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ঢাকার সাভার পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডে সিলগালা করে দেওয়া একটি ভবন। গত বছরের নভেম্বরে ভবনটি সিলগালা করে দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। তবে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ভবনটি ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুমতি ছাড়াই ভবনটি ব্যবহার করা হলেও পৌরসভা বা উপজেলা প্রশাসন ভবন মালিকের বিরুদ্ধে নেয়নি কোনো ব্যবস্থা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়াপদা রোডের ৩/২ নম্বর সাততলা বাড়িটি গত বছর নভেম্বরে পাশের একটি ছয়তলা ভবনের ওপর হেলে পড়ে। সাততলা এ ভবনটির মেঝেসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। এ অবস্থায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় উপজেলা প্রশাসন সিলগালা করে দেয়। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ।

পরে সরেজমিন পরিদর্শন করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে মতামতের জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসন থেকে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সাভার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সাভার পৌরসভার কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি।

কমিটির সদস্যরা ভবনটি পরিদর্শন করে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে কমিটির সদস্যরা একটি বিশেষজ্ঞ কারিগরি দলের মতামত নেওয়ার পরামর্শ দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবনটি নির্মাণের আগে মাটি পরীক্ষা করা হয়নি। কোনো প্রকৌশলীর যথাযথ পরামর্শ নেওয়া হয়নি। অনুসরণ করা হয়নি ইমারত নির্মাণ বিধিমালা। ছয়তলার অনুমোদন নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সাততলা। ভবন নির্মাণে অদক্ষ শ্রমিক কাজ করায় কাজের গুণগত মান খারাপ হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভবনের নিচতলার ফ্লোর দেবে গেছে। বাইরের দিকে সিঁড়ির টাইলস ফেটে গেছে। এ অবস্থায় ভবনটি ব্যবহার নিরাপদ কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত দেওয়া সম্ভব নয়।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, ভবনটির নিচতলায় ২১টি দোকান রয়েছে। এসব দোকানের কয়েকটি খোলা রয়েছে। ভবনের দ্বিতীয় তলায় বসবাস করছেন ভবন মালিক।

ভবনের নিচতলার হাজি বিরিয়ানি হাউসের মালিক মোহাম্মদ সুমন বলেন, মাসিক ১৪ হাজার টাকা ভাড়ায় মাসখানেক আগে তিনি ভবনের নিচের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন। ভবন মালিক তাঁর দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

ভবন মালিক মাজিদা আক্তার বলেন, জেলা প্রশাসকের গঠিত কমিটির পরামর্শ মোতাবেক বুয়েটের বিশেষজ্ঞ ও কারিগরি দল দিয়ে ভবনটির সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে। ওই দলের সদস্যরা ভবনটি ব্যবহার নিরাপদ নয়, এমন কোনো মতামত দেননি। এ ছাড়া ভবনের নকশাবহির্ভূত অংশও অপসারণ করা হয়েছে। এরপরও উপজেলা প্রশাসন বা পৌরসভার পক্ষ থেকে ভবনটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।

সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইমাম বলেন, ভবনটি সিলগালার পর পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে মতামতের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। ওই কমিটি সুনির্দিষ্ট মতামত না দেওয়ায় পৌরসভার পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

শরিফুল ইমাম বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় উপজেলা প্রশাসন সিলগালা করে দিয়েছিল। তাই ভবনটি ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া বা অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার উপজেলা প্রশাসনের, পৌরসভার নয়।

জেলা প্রশাসকের গঠিত কমিটির সদস্য সাভার উপজেলা প্রকৌশলী সালেহ হাসান প্রামাণিক বলেন, বিশেষজ্ঞ কারিগরি দলের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটির পক্ষ থেকে পৌরসভাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই আলোকে পৌরসভার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত