মো. ওয়াহিদুজ্জামান, বেড়া (পাবনা)
একাত্তরে ইলিয়াস আলী ছিলেন ইপিআরের (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) সদস্য। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে তিনি ছুটি নিয়ে বাড়িতে যান। যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে একদিন চলে গেলেন যুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও ফিরলেন না। পরিবারের সদস্যরা খোঁজ-খবর করে শুধু জানতে পারেন বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন তিনি। এরপর কেটে গেল ৫০ বছর। এত দিন পর এসে একটি বইয়ের সূত্র ধরে স্বজনেরা আবিষ্কার করলেন রণাঙ্গনে শহীদ হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস। তাঁকে সমাহিত করা আছে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার শহীদনগরে। পরিবারের সদস্যরা গিয়ে জিয়ারত করে এলেন তাঁর কবর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানীগঞ্জের বাসিন্দা। তাঁর বড় ছেলে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) রেজিস্ট্রার মো. শফিকুল আলম জানান, একাত্তরে তাঁর বয়স ছিল মাত্র সাত বছর। বাবাকে হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে মা সালেহা বেগম প্রতীক্ষার প্রহর কাটাতেন আর সন্তানদের বলতেন বড় হয়ে যেন তাঁর বাবার সন্ধান করেন। তাঁর মায়ের সেই অপেক্ষার শেষ হয়েছে। শেষ বয়সে এসে স্বামীর কবর আর তাঁর বীরত্বের কাহিনি জেনে যেতে পারলেন একটি বইয়ের সাহায্যে।
শফিকুল আলম বলেন, তিনি দেশের অনেক জায়গায় গিয়ে শহীদদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতেন। একদিন বাউবির এক কর্মকর্তা তাঁকে ‘একাত্তরে সাঁথিয়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ নামের একটি বইয়ের কথা বলেন। সঙ্গে জানান ওই বইয়ে ইলিয়াস আলী নামে এক শহীদ ইপিআর জওয়ানের নাম আছে। যুদ্ধকালীন সাঁথিয়া থানা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নিজাম উদ্দিন বইটির লেখক।
বইটি সংগ্রহ করে পড়তে থাকেন শফিকুল আলম। বইয়ে নিজাম উদ্দিন লিখেছেন, ‘হাবিলদার আলী আকবরের নেতৃত্বে দেড় শতাধিক ইপিআর জওয়ান সিরাজগঞ্জ থেকে পাবনার কাছাকাছি চলে এসেছেন। আমরা পাক হানাদার মোকাবিলা করতে ডাববাগানকেন্দ্রিক প্রতিরোধ বলয় গড়ে তুললাম। খবরটি স্থানীয় রাজাকার আলবদরেরা নগরবাড়ি পাক ক্যাম্পে পৌঁছে দিলেন। চূড়ান্ত প্রস্তুতির মুহূর্তে আমরা আকস্মিক আক্রমণের মুখে পড়লাম। সেদিন ১৯ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে পাক হানাদারেরা ডাববাগানে আকস্মিক আক্রমণ করল। আমরা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, ইপিআর, পুলিশ সদস্যরা মিলে সেদিন প্রচণ্ড প্রতিরোধ গড়ে তুলে প্রাণপণ যুদ্ধও চালালাম। কিন্তু তাদের ভারি অস্ত্রের কাছে আমরা টিকতে না পেরে পিছু হটলাম। হানাদাররা হেলিকপ্টার থেকে বোমাবর্ষণ করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দিল। সেই যুদ্ধে ইপিআরের ১৭ জওয়ান ও ১৫ জন গ্রামবাসী শহীদ হলেন। স্থানীয় নিহত শহীদদের ও ইপিআর সদস্যের লাশ স্বজনদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় ডাববাগান এলাকায় গণকবর দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের স্মৃতিধারণ করতে স্থানটির নাম পরিবর্তন (ডাববাগান) করে “শহীননগর” রাখা হয়েছিল।’
বই পড়ে শফিকুল আলম ছুটে গেলেন শহীদনগর। দেখলেন সেখানে স্থাপিত শহীদের স্মরণে নির্মিত ‘বীর বাঙ্গালী’ ভাস্কর্যের নামফলকে ইলিয়াস আলীর (ইপিআর সদস্য) নাম আছে। পরে তিনি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেন। মোটামুটি নিশ্চিত হন এই ইলিয়াস আলীই তাঁর বাবা।
শহীদের কবর অযত্নে অবহেলায় থাকতে দেখে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শহীদের স্মরণে ‘বীর বাঙ্গালী’ ভাস্কর্যটি নির্মাণ শুরু করে। ২০০১ সালে সেটি উন্মুক্ত করতে ভাস্কর্যে নাম-পরিচয় লিপিবদ্ধ করতে ডাববাগান যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া হাবিলদার আলী আকবরকে নিয়ে আসা হয় কুষ্টিয়া থেকে। আলী আকবরই জানান, ইপিআর জওয়ান ইলিয়াস আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানী গঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। এটা জানার পর তাঁর পরিবার শতভাগ নিশ্চিত হয়, এখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বর মাসে শহীদ ইলিয়াসের স্ত্রী স্বজনেরা প্রথমবারের মতো শহীদনগরে গণকবরে গিয়ে তাঁর কবর জিয়ারত করে আসেন।
একাত্তরে ইলিয়াস আলী ছিলেন ইপিআরের (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) সদস্য। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে তিনি ছুটি নিয়ে বাড়িতে যান। যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে একদিন চলে গেলেন যুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও ফিরলেন না। পরিবারের সদস্যরা খোঁজ-খবর করে শুধু জানতে পারেন বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন তিনি। এরপর কেটে গেল ৫০ বছর। এত দিন পর এসে একটি বইয়ের সূত্র ধরে স্বজনেরা আবিষ্কার করলেন রণাঙ্গনে শহীদ হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস। তাঁকে সমাহিত করা আছে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার শহীদনগরে। পরিবারের সদস্যরা গিয়ে জিয়ারত করে এলেন তাঁর কবর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানীগঞ্জের বাসিন্দা। তাঁর বড় ছেলে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) রেজিস্ট্রার মো. শফিকুল আলম জানান, একাত্তরে তাঁর বয়স ছিল মাত্র সাত বছর। বাবাকে হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে মা সালেহা বেগম প্রতীক্ষার প্রহর কাটাতেন আর সন্তানদের বলতেন বড় হয়ে যেন তাঁর বাবার সন্ধান করেন। তাঁর মায়ের সেই অপেক্ষার শেষ হয়েছে। শেষ বয়সে এসে স্বামীর কবর আর তাঁর বীরত্বের কাহিনি জেনে যেতে পারলেন একটি বইয়ের সাহায্যে।
শফিকুল আলম বলেন, তিনি দেশের অনেক জায়গায় গিয়ে শহীদদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতেন। একদিন বাউবির এক কর্মকর্তা তাঁকে ‘একাত্তরে সাঁথিয়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ নামের একটি বইয়ের কথা বলেন। সঙ্গে জানান ওই বইয়ে ইলিয়াস আলী নামে এক শহীদ ইপিআর জওয়ানের নাম আছে। যুদ্ধকালীন সাঁথিয়া থানা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নিজাম উদ্দিন বইটির লেখক।
বইটি সংগ্রহ করে পড়তে থাকেন শফিকুল আলম। বইয়ে নিজাম উদ্দিন লিখেছেন, ‘হাবিলদার আলী আকবরের নেতৃত্বে দেড় শতাধিক ইপিআর জওয়ান সিরাজগঞ্জ থেকে পাবনার কাছাকাছি চলে এসেছেন। আমরা পাক হানাদার মোকাবিলা করতে ডাববাগানকেন্দ্রিক প্রতিরোধ বলয় গড়ে তুললাম। খবরটি স্থানীয় রাজাকার আলবদরেরা নগরবাড়ি পাক ক্যাম্পে পৌঁছে দিলেন। চূড়ান্ত প্রস্তুতির মুহূর্তে আমরা আকস্মিক আক্রমণের মুখে পড়লাম। সেদিন ১৯ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে পাক হানাদারেরা ডাববাগানে আকস্মিক আক্রমণ করল। আমরা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, ইপিআর, পুলিশ সদস্যরা মিলে সেদিন প্রচণ্ড প্রতিরোধ গড়ে তুলে প্রাণপণ যুদ্ধও চালালাম। কিন্তু তাদের ভারি অস্ত্রের কাছে আমরা টিকতে না পেরে পিছু হটলাম। হানাদাররা হেলিকপ্টার থেকে বোমাবর্ষণ করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দিল। সেই যুদ্ধে ইপিআরের ১৭ জওয়ান ও ১৫ জন গ্রামবাসী শহীদ হলেন। স্থানীয় নিহত শহীদদের ও ইপিআর সদস্যের লাশ স্বজনদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় ডাববাগান এলাকায় গণকবর দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের স্মৃতিধারণ করতে স্থানটির নাম পরিবর্তন (ডাববাগান) করে “শহীননগর” রাখা হয়েছিল।’
বই পড়ে শফিকুল আলম ছুটে গেলেন শহীদনগর। দেখলেন সেখানে স্থাপিত শহীদের স্মরণে নির্মিত ‘বীর বাঙ্গালী’ ভাস্কর্যের নামফলকে ইলিয়াস আলীর (ইপিআর সদস্য) নাম আছে। পরে তিনি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেন। মোটামুটি নিশ্চিত হন এই ইলিয়াস আলীই তাঁর বাবা।
শহীদের কবর অযত্নে অবহেলায় থাকতে দেখে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শহীদের স্মরণে ‘বীর বাঙ্গালী’ ভাস্কর্যটি নির্মাণ শুরু করে। ২০০১ সালে সেটি উন্মুক্ত করতে ভাস্কর্যে নাম-পরিচয় লিপিবদ্ধ করতে ডাববাগান যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া হাবিলদার আলী আকবরকে নিয়ে আসা হয় কুষ্টিয়া থেকে। আলী আকবরই জানান, ইপিআর জওয়ান ইলিয়াস আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানী গঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। এটা জানার পর তাঁর পরিবার শতভাগ নিশ্চিত হয়, এখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বর মাসে শহীদ ইলিয়াসের স্ত্রী স্বজনেরা প্রথমবারের মতো শহীদনগরে গণকবরে গিয়ে তাঁর কবর জিয়ারত করে আসেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪