Ajker Patrika

ইংল্যান্ডের ‘আকরাম’ হলেন কারেন

রানা আব্বাস, মেলবোর্ন থেকে
ইংল্যান্ডের ‘আকরাম’ হলেন কারেন

সংবাদ সম্মেলনে জস বাটলারকে প্রশ্ন করা হয়েছে স্যাম কারেনের বোলিং দেখে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৯২ বিশ্বকাপ ফাইনালের ওয়াসিম আকরামের বোলিং মনে পড়েছে কি না? সে ম্যাচে পাকিস্তানি কিংবদন্তি বাঁহাতি পেসার ৩ উইকেট নিয়ে ফাইনালের নায়ক হয়েছিলেন। গতকাল কারেনও ৩ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ফাইনালের নায়ক।

ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলার বললেন, ‘হ্যাঁ, স্যামকে অবশ্যই ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে তুলনা করা যায়। সে টপ পারফরমার। শুধু ভালোই করে যাচ্ছে। এখনো সে তরুণ। তবে সে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ও এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে বলবেন চলো যাই, সে তৈরি। সে এরই মধ্যে বলছে, আমি বল করতে চাই। তার পারফরম্যান্স নিয়ে সত্যি তৃপ্ত। সবই সে পেয়েছে, যেটা তার পাওনা।’

বাটলার যখন ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে তুলনা করছিলেন, মিক্সড জোনের জন্য সংবাদ সম্মেলনকক্ষে সতীর্থ আদিল রশিদ আর মঈন আলীর পাশে বসা কারেন একচোট হাসলেন। মঈন হাসির কারণ জানতে চাইলেন। হাতের মুঠোফোনের পর্দা থেকে চোখ তুলে কারেন সতীর্থকে জানালেন বাটলারের তুলনা প্রসঙ্গ। মিক্সড জোনে কারেনের সামনে আবারও তোলা হলো ওয়াসিমের সঙ্গে তুলনা। ইংলিশ পেসার বললেন, ‘হ্যাঁ, তিনি অনেক বড় ম্যাচজয়ী ছিলেন, সব ফরম্যাটেই। আমাদের এটা অসাধারণ এক সাফল্য, দুর্দান্ত এক জয়।’

ফাইনালের একটা চাপ সব সময়ই থাকে। গতকাল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) ম্যাচের শুরুতে পাকিস্তানের ওপর সে চাপ আরও বাড়িয়ে দেওয়ার কাজ দারুণভাবে করেছেন কারেন। ৪ ওভারে ১২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। ৬ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কারও হয়ে উঠেছে তাঁর হাতে। পাওয়ার প্লে, ডেথ ওভার—দুটিতেই ধারাবাহিক সফল কারেনের হাতেই মানায় টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কার। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসে এ বিশাল অর্জন তাঁর জন্য।

মেলবোর্নের ফাইনালের সাফল্যের সূত্র নিয়ে কারেন ম্যাচের পর বলছেন, ‘ব্যাটারদের কাছে স্কয়ারের বাউন্ডারি বড় ছিল। এটা পেসারদের ভালো করার সুযোগ করে দেয়। স্লোয়ার বল নিয়েই এগিয়েছি। ব্যাটারদের দ্বিধায় রেখেছি, আমাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছি। আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, কী অসাধারণ এক ব্যাপার।’

ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে কারেনের কাছে দলের সাফল্যই বড়। মিক্সড জোনে বলছিলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপ জিতেছি। এটা অনেক বড় অনুভূতি। আজ (গতকাল) রাতে আমরা অনেক উপভোগ করব। দারুণভাবে উদ্‌যাপন করব।’

 সেই উদ্‌যাপন কেমন হবে? এখানে কারেন একটু রহস্য রেখে দেন, ‘এটা (উদ্‌যাপন) অনেক ভালো হবে, কিন্তু কীভাবে হবে, সেটা তো বলব না।’

ইংল্যান্ডের উদ্‌যাপন কেমন হবে, না বললেও বেন স্টোকসকে নিয়ে বলতে অসুবিধা নেই তাঁর। ইডেন গার্ডেনে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ফাইনালে ক্যারিবীয় তারকা কার্লোস ব্রাথওয়েটের কাছে  টানা চার ছক্কা হজম করে খলনায়কে পরিণত হয়েছিলেন স্টোকস। উইন্ডিজের হাতে তুলে দিতে হয়েছিল বিশ্বকাপ। সেই ‘ট্রমা’ থেকে বের হতে অনেক সময় লেগেছে তাঁর। ছয় বছর পর ইংলিশ অলরাউন্ডার শাপমোচন করলেন মেলবোর্নের এ ঝলমলে রাতে।

অবশ্য টুর্নামেন্ট খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না স্টোকসের। তিনি জ্বলে উঠলেন মোক্ষম সময়েই। গতকাল কঠিন পরিস্থিতিতে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে বড় ম্যাচের বড় খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে আরেকবার চেনালেন। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তাঁর প্রথম ফিফটি এবং সর্বোচ্চ ইনিংসও।

 ম্যাচ শেষে সতীর্থ স্টোকসকে নিয়ে কারেনের মুখেও ছিল প্রশংসা।  ২৪ বছর বয়সী এই তরুণ পেসার  বলেছেন, ‘অনেকে তাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু তাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই। হি ইজ দ্য ম্যান!’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত