Ajker Patrika

পদ ভাগাভাগি!

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১২: ১৮
পদ ভাগাভাগি!

যাঁদের হাতে আলোর মশাল, তাঁরাই যদি অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকেন, তখন আলোর আশা দুরাশা ছাড়া আর কী! বলছি সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিয়োগ কেলেঙ্কারির কথা। যিনি নিজের আত্মীয়স্বজনকে চাকরি দিয়ে, সেগুলো হালাল করতে সাংবাদিকদেরও খুশি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে!

একটি নবীন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে কিছুই শুরু হয়নি, চেয়ার-টেবিল, বসার জায়গা কোনো কিছুই নেই; সে রকম একটি প্রতিষ্ঠানে উপাচার্য নিজে এবং প্রভাবশালীদের এভাবে ১৭৪টি পদ ভাগাভাগি করে দেওয়ার ঘটনা যদি সত্যি হয়, তাহলে এটি অবশ্যই লজ্জার, হতাশার এবং নজিরবিহীন অসততার খারাপ দৃষ্টান্ত।

গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী বা অ্যাডহক ভিত্তিতে ১৭৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার নঈমুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আরও জানা যায়, নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের সুবিধা করে দিতে নেওয়া হয় বিশেষ কৌশল। বিভিন্ন পদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে পদের বিপরীতে শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং বয়সে ছাড় দেওয়া হয়। সব রীতি ভেঙে নিয়োগ দেওয়া হয় পছন্দের লোকদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পাওয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের ১৩ আত্মীয়কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে সব অনিয়ম হালাল করার জন্য, স্থানীয় কিছু সাংবাদিক ও তাঁদের স্বজনদেরও চাকরি দেওয়া হয়েছে। এ তালিকায় সিলেটে কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদক এবং তাঁদের আত্মীয়, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতির ভাই, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের ভাইয়ের মেয়েসহ আরও অনেকে রয়েছেন।

একজন উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার কীভাবে নিজেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে তাঁদের সততা, মেধা, অভিজ্ঞতা দিয়ে গড়ে তোলার বদলে এভাবে সুযোগ বুঝে নিজেরা বিভিন্ন পদে নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগের মহোৎসব চালাবেন, এটা আসলে কোনোভাবেই মানা যায় না। সঙ্গে আবার হাত করেছেন কিছু সাংবাদিককে। এই কতিপয় সাংবাদিকও সুযোগ বুঝে হামলে পড়েছেন! নিজেরা সততার কথা বলে যদি নিজেরাই স্বার্থ আর লোভে পড়ে যান, তাহলে সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ বলে আর কী অবশিষ্ট থাকে!

নিয়ন্ত্রকেরাই যখন নিজেরা এসব অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়ান, তখন সত্যিকার অর্থে যাঁরা যোগ্য, অভিজ্ঞ তাঁদের যোগ্যতার আর মূল্য থাকে না। আমরা আশা করি ইউজিসি বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করবে এবং অনিয়ম ধরা পড়লে নিয়োগ বাতিল করবে। সেই সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

চীন-পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় ঝামেলা বাড়বে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত