Ajker Patrika

আ.লীগ নেতার ওপর হামলা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ০৯
আ.লীগ নেতার ওপর হামলা

ঢাকার শাহবাগ থানার ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন কোতোয়ালকে গুলি করে ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। জাকিরের পরিবারের অভিযোগ, তুলাশার ইউপি নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জেরে শরীয়তপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাচ্চু ব্যাপারী ও তাঁর সমর্থকেরা এই হামলা চালিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে জেলা শহরের বটতলা এলাকায় এই হামলায় জাকির কোতোয়াল ও তাঁর ভাই মনির কোতোয়াল গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাচ্চু ব্যাপারীসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে পালং থানায় মামলা করেছে জাকির কোতোয়ালের মা মনোয়ারা বেগম।

আহতের পরিবার ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর সদর উপজেলার তুলাশার ইউপি নির্বাচন নিয়ে পৌর কাউন্সিলর বাচ্চু ব্যাপারী ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে নির্বাচনের ২ দিন পর ১৪ নভেম্বর বাচ্চু ব্যাপারী ও তাঁর সমর্থকেরা জাকিরের ভাই মেহেদী হাসানকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। ওই দিনই মেহেদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবার। ঘটনার পর পরিবারকে বাড়ি থেকে বের হতে বাধা দেন হামলাকারীরা। ফলে থানায় মামলা করা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় থাকায় মামলা করতে পারেনি মেহেদীর পরিবার। ১৬ নভেম্বর হামলার ঘটনায় মামলা করতে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন মেহেদীর ভাই জাকির ও মনির। ওই দিন সন্ধ্যার পর মামলার কিছু কাগজপত্র ফটোকপি করতে থানা থেকে ৩০০ মিটার দক্ষিণে শহরের বটতলায় যান দুই ভাই। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাচ্চু ব্যাপারীর নেতৃত্বে তাঁদের ওপর হামলা করে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল। এ সময় হামলাকারীরা পিস্তল দিয়ে জাকিরের ডান পায়ে গুলি করেন। ধারালো অস্ত্র, রড ও লাঠি দিয়ে জাকির ও মনিরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যান তাঁরা। পরে স্থানীয়রা দুই ভাইকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই রাতেই তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা।

হামলার শিকার জাকির হোসেন কোতোয়াল মুঠোফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাচ্চু বাহিনীর ভয়ে থানায় মামলা করতে পারেনি পরিবার। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানালে তিনি শরীয়তপুরে গিয়ে মামলা করতে বলেন। ১৬ নভেম্বর মামলা করতে শরীয়তপুরে আসি। মামলার কিছু কাগজপত্র ফটোকপি করতে থানা থেকে বের হলে প্যানেল মেয়র বাচ্চুর নেতৃত্বে আমাকে ও আমার ভাই মনিরকে গুলি ও কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। আমি ও আমার পরিবার নৌকার পক্ষে নির্বাচন করায় আমাদের ওপর এই হামলা হয়েছে।’

শরীয়তপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাচ্চু ব্যাপারী বলেন, ‘আমি কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত নই। সম্প্রতি আমাদের এলাকার কিছু মানুষকে কুপিয়ে আহত করে মেহেদী ও তাঁর দলের সদস্যরা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে জাকির তাঁদের মারধর করেছেন। ওই ঘটনার জেরে এলাকার কেউ তাঁর ওপর হামলা করে থাকতে পারেন। প্রতিপক্ষ ভেবে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’

মামলার বাদী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। নৌকার পক্ষে কাজ করায় আমার তিন সন্তানকে হত্যার উদ্দেশে গুলি করে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। কী অপরাধ আমাদের? কার কাছে বিচার চাইব?’

পালং থানার ওসি আকতার হোসেন বলেন, ‘১৪ তারিখের ঘটনায় মামলা করে থানা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জাকির ও মনির হামলার শিকার হয়েছে। এই ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে জাকিরের মা বাদী হয়ে মামলা করেছে। রাতেই অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত