Ajker Patrika

দাম বেড়েছে সব চালের

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
দাম বেড়েছে সব চালের

বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও চড়া চালের বাজার। প্রতিবছর এই সময় চালের দাম কম থাকলেও এবারের চিত্র উল্টো। ময়মনসিংহে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। গত দুই দিনে প্রতি কেজি চালে ৪ টাকা করে বেড়েছে। এর জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করছে সাধারণ মানুষ। তবে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে কাঁচাবাজারে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জেলায় নিয়মিত বাজার মনিটর করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের জরিমানা করার পাশাপাশি সতর্ক করা হচ্ছে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ৫০ টাকা কেজিতে বিআর ২৯ চাল বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা কেজি দরে। ৬২ টাকা কেজির নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা। কাটারি ও মিনিকেট আগে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা করে। তবে সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। নগরীর সবচেয়ে বড় সবজির বাজার মেছুয়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি সবজিতে প্রায় ১০ থেকে ২০ টাকা করে দাম কমেছে।

চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে মেছুয়া বাজারের মেসার্স কামরুল অ্যান্ড সন্সের পরিচালক শামসুল হক বলেন, ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে ও মিল মালিকদের সিন্ডিকেটে চালের দাম বেড়েছে।

মেসার্স বি এল ট্রেডার্সের মালিক প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, এই মুহূর্তে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তবে বড় বড় কোম্পানি অতিরিক্ত মজুত করার কারণে চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার সাহা বলেন, সরকার গ্রুপ অব কোম্পানিগুলোকে চালের লাইসেন্স দেওয়ার কারণে বাজারে এই অস্থিরতা বিরাজ করছে। তারা অধিক হারে চাল মজুদ করে স্বাভাবিক বাজারকে অস্বাভাবিক করে তুলেছে।

এদিকে সাধারণ ভোক্তা জাহাঙ্গীর আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিদিন চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। তাই সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমাদের বলার মতো কোনো জায়গা নেই। সরকার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার না করলে কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’

আলমগীর হোসেন নামে আরেকজন ক্রেতা বলেন, ‘এমন কোনো জিনিস নেই, দাম বাড়েনি। কিন্তু সে অনুযায়ী মানুষের আয় তো বাড়েনি। তাহলে কীভাবে মানুষ ভালো থাকবে। তবে এই সময় চালের দাম বেড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।’

নগরীর মেছুয়া বাজারে সবজি কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতি কেজি সবজিতে প্রায় ১০ থেকে ২০ টাকা করে কমেছে। টমেটো ৮০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৪০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০ থেকে ১৫ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ৭০ টাকায় 
কেনা যাচ্ছে। বাজারে দাম স্বাভাবিক রাখতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার রাখতে হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ময়মনসিংহ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, সয়াবিন তেলসহ সব ধরনের পণ্য ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটর করা হচ্ছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বাজারে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। সরকারের নির্দেশে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে মিলারদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বাজারেও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামূল হক বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি পুরো জেলায় নিয়মিত বাজার মনিটর করার জন্য। ব্যবসায়ীদের জরিমানা করার পাশাপাশি সতর্ক করা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত