Ajker Patrika

ব্যাটার মিরাজের তৃপ্তি-অতৃপ্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ব্যাটার মিরাজের তৃপ্তি-অতৃপ্তি

ঐচ্ছিক অনুশীলনে গতকাল মাঠে  আসা হয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের। দলের বেশির ভাগ সতীর্থের মতো হোটেলেই সময় কেটেছে তাঁর। গত পরশু জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তীব্র চাপে আফিফ হোসেনের সঙ্গে অবিচ্ছন্ন সপ্তম উইকেটে ১৭৪ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে ফিরিয়েছেন, অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস খেলে হয়েছেন ম্যাচসেরা—ফোনের এ প্রান্তেই বোঝা গেল মেহেদী হাসান মিরাজের মুখে চ্যালেঞ্জ জয়ের হাসি।

মিরাজের এই হাসি শুধু ম্যাচ জিতেই নয়, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই তাঁর পরিচিতি নিখাঁদ অলরাউন্ডার হিসেবে। ২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আগে আইসিসি পর্যন্ত তাঁর ভেতর ‘বাংলাদেশের পরবর্তী সাকিব আল হাসান’ হওয়ার সম্ভাবনা দেখেছিল। ২০১৬ অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ঐতিহাসিক টেস্টে আলোড়ন সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব হলেও গত ছয় বছরে মিরাজ বাংলাদেশ দলে অফ স্পিনার হিসেবে যতটা নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন, ব্যাটার হিসেবে ততটা নন।

বিষয়টি নিয়ে মিরাজকে কম প্রশ্ন শুনতে হয়নি। তবে তাঁর চেষ্টার কমতি নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে একটু ওপরের দিকে ব্যাটিং করার সব চেষ্টাই করেন। কিন্তু বিষয়টি তাঁর একার ওপর নির্ভর করে না, ম্যানেজমেন্টকেও রাজি হতে হয়। সর্বশেষ বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক হিসেবে ওপরের দিকে ব্যাটিং করতে চেয়ে দূরত্ব তৈরি হলো ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে, তৈরি হলো অপ্রীতিকর এক পরিস্থিতি।

জাতীয় দলে ওপরে ব্যাটিং করা আরও কঠিন। টপ ও মিডল অর্ডারে যেহেতু সুযোগ নেই, নিচের দিকে নেমে যতটা সুযোগ পাওয়া যায়, সেটিই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন মিরাজ। সেই চেষ্টায় গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছেন, ফিফটি পেয়েছেন। গত নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে অপরাজিত ৩৮, জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের জয়ে শুধু বোলিংয়েই নয়, ৪৭ রানের ইনিংস খেলে ব্যাট হাতেও রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এখনো পর্যন্ত ১০১টি আন্তর্জাতিক ইনিংসে যে ১টি সেঞ্চুরি ও ৫টি ফিফটি পেয়েছেন, বেশির ভাগই সাত কিংবা আট নম্বর পজিশনে খেলে। যেহেতু নিচের দিকে নামেন, তাঁর ৩০-৪০ পেরোনো যেকোনো ইনিংসই দলের ভালো ফল এনে দিতে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, যার সর্বশেষ উদাহরণ গত পরশুর ম্যাচ। মিরাজের তৃপ্তিটা এখানেই।

অতৃপ্তিও কম নেই। বাস্তবতা মেনেই গতকাল মিরাজ বলছেন, ‘ব্যাটিংয়ে আমার আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি নেই। কিন্তু যতই আত্মবিশ্বাস থাক, ৮-৯ নম্বরে নেমে প্রতিদিন লম্বা ইনিংস খেলার সুযোগ থাকে না। এই পজিশনে ইনিংস আর কতই লম্বা করা যায়? ওপরের দিকের ব্যাটাররা খুব খারাপ করলে একটু লম্বা সময় পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এমন পরিস্থিতি কেউ কি প্রত্যাশা করে? কেউ কি চায় নিয়মিত বিপর্যয়ের চাপ নিয়ে খেলতে?’

যে পজিশনেই খেলুন সেটিতেই ভালো করার চেষ্টা মিরাজের, ‘এখন আমাদের ওপরের ব্যাটিং পজিশনে সব গ্রেট খেলোয়াড়েরা খেলছেন। ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেতে হয়তো সময় লাগবে। আর কাল (পরশু) একটা বিপর্যয় হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে এমন হয়। তাঁরা সবাই পরীক্ষিত খেলোয়াড়। এ রকম সব সময় হবে না।’ নিচে ব্যাটিং করার একটা ইতিবাচক দিকও খুঁজে পেয়েছেন মিরাজ। বলছেন, ‘ব্যাটিং বিপর্যয় ইচ্ছা করে হয় না। আর এমন পরিস্থিতি তৈরি না হলে আমরাও এই ম্যাচে হিরো হতে পারতাম না!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত